গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসকে আল্টিমেটাম দিয়ে ইসরাইল বলেছে, তারা সর্বশেষ পণবন্দী মুক্তি নিয়ে নতুন প্রস্তাব পাঠিয়েছে। এই প্রস্তাবে হামাস রাজি না হলে তারা রাফায় হামলা চালাবে। তবে হামাস জানিয়েছে, তারা ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তি দিতে রাজি। তবে তার আগে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজা থেকে ইসরাইলি সৈন্য প্রত্যাহার করার তাদের দাবি মেনে নিতে হবে।
ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রসহ ১৮টি দেশের এক চিঠির জবাবেও একই কথা বলেছে হামাস।
যেসব দেশ চিঠিতে সই করেছে, তাদের মধ্যে রয়েছে আর্জেন্টিনা, অস্ট্রিয়া, ব্রাজিল, বুলগেরিয়া, কানাডা, কলম্বিয়া, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হাঙ্গেরি, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, রোমানিয়া, সার্বিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।
হামাস জানায়, তারা চুক্তির আওতায় ইসরাইলি বন্দীদের মুক্তি দিতে আগ্রহী। তবে, যুদ্ধবিরতি হতে হবে স্থায়ী, গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনীকে পুরোপুরি প্রত্যাহার করতে হবে এবং ইসরাইলি কারাগারগুলোতে ফিলিস্তিনি বন্দীদের মুক্তি দিতে হবে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য খলিল আল-হায়া আল জাজিরা আরবিকে দেয়া এক টিভি সাক্ষাতকারে বলেন, তারা গাজায় ইসরাইলি যুদ্ধ অবসানের ব্যাপারে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। স্থায়ী যুদ্ধবিরতি হলেই কেবল বন্দীদের মুক্তি দেয়া যেতে পারে।
হামাসকে লেখা ১৮টি দেশের চিঠির জবাববে হামাস জানায়, এতে গাজার জনগণ যেসব মৌলিক সমস্যায় পড়েছে, সেগুলোর জবাব দেয়া হয়নি। চিঠিটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, ইসরাইলি সৈন্য প্রত্যাহারসহ গাজায় স্থায়ী যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
হামাস জানায়, ফিলিস্তিনিদের অধিকারকে আমলে নেয়, এমন যেকোনো প্রস্তাবের প্রতি তারা খোলামেলা রয়েছে। তারা গাজায় অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত লোকদের তাদের বাড়িঘরে ফেরার অধিকার, পুনর্গঠনের জন্য সহায়তা এবং আত্ম-নিয়ন্ত্রণাধিকারে রূপরেখা নির্ধারণের আহ্বানও জানানো হয়।
এদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা ইসরাইলের সর্বশেষ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি পেয়েছে। তবে জবাব দেয়ার আগে তারা এটি পর্যালোচনা করবে।
কাতারভিত্তিক হামাসের সিনিয়র নেতা খলিল আল-হায়া এক বিবৃতিতে এই মন্তব্য করেন।
তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘গত ১৩ এপ্রিল মিসরীয় ও কাতারি মধ্যস্ততাকারীদের কাছে যে প্রস্তাব উত্থাপন করেছে, জায়নবাদী দখলদাদের ওই প্রস্তাবের জবাব তারা পেয়েছে।
গাজায় ছয় মাস ধরে হামলা চালিয়েও ইসরাইল তাদের লক্ষ্য হাসিল করতে পারেনি।
এদিকে পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে এক ইসরাইলি কর্মকর্তা বলেছেন, নতুন প্রস্তাবে ৪০ জনের বদলে হামাসের হাতে বন্দী ৩৩ জনের মুক্তির কথা বলা হয়েছে।
এদিকে দুই ইসরাইলি কর্মকর্তা ওয়াশিংটনভিত্তিক অক্সিয়সকে জানিয়েছেন, শুক্রবার মিসরীয় মধ্যস্ততাকারীদের ইসরাইল জানিয়ে দিয়েছে যে তারা যে প্রস্তাবটি দিয়েছে, তা হলো রাফায় হামলা চালানোর আগে হামাসকে দেয়া শেষ সুযোগ।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরাইল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের ওপর। এ পর্যন্ত ৩৪ হাজারের বেশ ফিলিস্তিনি এসব হামলায় নিহত হয়েছে।
সূত্র : আল জাজিরা, টাইমস অব ইসরাইল এবং অন্যান্য
Leave a Reply