ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তপসীল কবে হবে তা ঠিক না হলেও ঘর গোছাতে তৎপরাত দেখানো শুরু হয়েগেছে।
হয়তো নির্বাচনে অনেক দলই অংশ নিবেন। তবে এখন মাঠ চষে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে শুধু বিএনপি জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের।
সারাদেশের মতো নাটোর-৩ (সিংড়া) আসনেও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য বার বার নির্বাচিত সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদসহ বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ নেতা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন।
এসব মনোনয়ন প্রত্যাশীরা সভা সমাবেশের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সক্রিয় রয়েছেন। চালাচ্ছেন প্রচার প্রচারণা। প্রত্যেকেই মনে করছেন আগামীতে তারাই হবেন এই আসনের ধানের শীষের কান্ডারী।
জেলার চারটি আসনের মধ্যে এই আসনটিতে সবচেয়ে পরে জামায়াতের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।
নাটোর নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা সরকারি কলেজের গণিত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক মোঃ সাইদুর রহমানকে এখানে জামায়াত প্রার্থী ঘোষণা করেছে।
তিন লাখ ৮ হাজার ৭৯৪ জন ভোটারের এই আসনে অধ্যাপক মোঃ সাইদুর রহমানসহ বিএনপির সকল মনোনয়ন প্রত্যাশীরা নিয়মিত উপজেলা জুড়ে সভা সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।
নাটোর-০৩ (সিংড়া) আসনটিতে বরাবরই বিএনপির শক্ত অবস্থান। একমাত্র জুনাইদ আহমেদ পলক ছাড়া এখানে আওয়ামী লীগ থেকে কেউ কখনো এমপি নির্বাচিত হননি। ১৯৯১ সালে এখানে জামায়াতে ইসলামী থেকে এমপি নির্বাচিত হন আবু বকর শেরকোলী।
১৯৯৫ সালে তিনি মারা গেলে উপ-নির্বাচনে প্রথম এমপি নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির আহবায়ক ও টানা ১২ বছর প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বপালন কারী দিঘাপাতিয়া এমকে কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সাবেক শিক্ষক কাজী গোলাম মোর্শেদ।
পরে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনেও টানা তিনবার তিনি এমপি নির্বাচিত হন। চলনবিল অধ্যুষিত সিংড়া উপজেলায় রাস্তাঘাট, শিক্ষা ও বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন অতি সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্ত নিরহংকারী মানুষ অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদ।
এবারো তিনিই দলের মনোনয়ন চান। জেলা বিএনপির প্রতিটি সভা-সমাবেশ মিছিল মিটিং এ নিয়মিত উপস্থিত থেকে নেতাকর্মীদের মাঠে ময়দানে সক্রিয় রাখতে ভুমিকা রাখছেন তিনি।
অনুসারীরা যেন চাঁদাবাজীসহ দলের সুনাম ক্ষুন্ন হয় এমন কোন কাজে জড়িত না হয় সে বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি রাখেন প্রবীন এই জননেতা।
আওয়ামী লীগ আমলের একদলীয় নির্বাচনে অংশ না নেয়ায় ২০১৮ সালের নির্বাচনে এখানে বিএনপির মনোনয়ন দেয়া হয় উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক জেলা বিএনপির সদস্য ও সিংড়া দমদমা পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু এবং জেলা বিএনপির বর্তমান যুগ্ম সম্পাদক দাউদার মাহমুদকে।
অধ্যক্ষ আনোয়ারুল ইসলাম আনু বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহম্মেদের বন্ধু। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারন সম্পাদক আনু বিশ্ববিদ্যালয়ে দুবার রিজভী-হারুন পরিষদে ছাত্র সংসদ নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সাথে ভালো সখ্যতা থাকায় এবার তিনি মনোনয়ন পাবেন বলে আশা করছেন।
অপরদিকে জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক দাউদার মাহমুদ এবারো এখানে বিএনপির মনোনয়ন চাইবেন।
বিএনপির দলীয় মনোনয়নের আশায় নিয়মিত তিনি এলাকায় নিয়মিত সভা সমাবেশ করছেন এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করছেন।
এ ছাড়াও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ব্যারিস্টার মোঃ ইউসুফ আলীও নিয়মিত এলাকায় সভা সমাবেশে অংশ নিচ্ছেন।
জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ আলী দেওয়ান শাহীন এখানে মনোনয়নের প্রত্যাশায় আগে এলাকায় বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশ নিলেও এবারের কমিটি থেকে বাদ পড়ায় আপাতত তার আর কোন তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
সিংড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি উমর ফারুক বলেছেন, নানা ভাগে বিভক্ত সিংড়া বিএনপিকে ঐক্যবদ্ধ করতে, সিনিয়র নেতাকর্মীরা সম্মানের সাথে চলতে, দলের মান রাখতে এই আসন থেকে টানা তিন বার নির্বাচিত সাবেক এমপি অধ্যাপক কাজী গোলাম মোর্শেদই সবচাইতে যোগ্য প্রার্থী।
নাটোর জেলা বিএনপির আহবায়ক রহিম নেওয়াজ বলেন, এখানে মনোনয়ন প্রত্যাশী যতই বেশি হোক না কেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দলের নির্বাচনী বোর্ড ঠিক করবেন কে যোগ্য প্রার্থী সেই সিন্ধান্ত কেন্দ্র নিবে। কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে যিনি মনোনয়ন পাবেন তার জন্যই সকল নেতাকর্মীরা ভোটের মাঠে ঝাপিয়ে পড়বেন।
অপরদিকে নাটোর জেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক ড. মীর মোঃ নূরুল ইসলাম বলেছেন, জেলার মধ্যে সিংড়া আসনে অন্য আসন গুলোর তুলনায় পরে জামায়াত প্রার্থী ঘোষণা করলেও এই আসনের জামায়াতের নেতাকর্মীরা আগে থেকেই মাঠে সক্রিয় ভুমিকা রাখছেন।
প্রফেসর সাইদুর রহমান খুবই সৎ, যোগ্য ও আধুনিক মানুষ। সিংড়ার ভোটাররা তাকে যথাযথ মূল্যায়ন করবেন বলেই তারা বিশ্বাস করেন।
Leave a Reply