গরম এখন সব দেশেরই সঙ্কট। গ্রীষ্মের তাপদাহে সকলেই ব্যতিব্যস্ত। মধ্যপ্রাচ্যও গরমের তীব্রতার জন্য খ্যাত। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ইরাক। ওই দেশেও গরমের ঝাপটায় অস্থির মানুষ। ইরাকে তাপমাত্রা কখনও কখনো ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়িয়ে যায়! এই অবস্থায় কিভাবে বাঁচেন এ দেশের মানুষ? কী করে চালিয়ে যান দৈনন্দিন কাজকর্ম, চাকরি বা ব্যবসা-বাণিজ্য?
উত্তরটা লুকিয়ে এদের জীবনযাপনের মধ্যেই। ইরাকের সাধারণ মানুষ জানায়, তারা টিভি চ্যানেল থেকে আবহাওয়ার খবরটা আগেই পেয়ে যায়। মানসিক প্রস্তুতি থাকেই। তাপমাত্রা বাড়লে মানুষ ঘর থেকে খুব একটা বের হয় না। মূলত ঘরেই থাকে। অত্যধিক গরম পড়লে পশু-পাখিদেরও কষ্ট হয়। পাখি বা অন্য প্রাণীদের জন্য গাছের নিচে পানি রেখে আসে তারা। মোট কথা, তীব্র দাবদাহের সময় প্রকৃতির সাথে মানিয়ে নিয়ে বাঁচার কৌশল নিজে নিজেই শিখে নেয় ইরাকের মানুষ।
কিন্তু হঠাৎ কেন মধ্যপ্রাচ্যের গ্রীষ্ম নিয়ে আলোচনা? মে মাসে প্রকাশিত সায়েন্স জার্নাল ‘নেচার সাসটেইনেবিলিটি’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সালের মধ্যে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ১.৫ শতাংশের চেয়েও বেশি বাড়বে। আর তার জেরে ভয়াবহ এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে!
আবার এপ্রিলেই ব্রিটিশ মেডিক্যাল জার্নাল ‘ল্যানসেট’ আগামী কয়েক দশকে বৈশ্বিক তাপমাত্রা ব্যাপক হারে বাড়ার ফলে মধ্যপ্রাচ্যের কী অবস্থা হতে পারে, তা নিয়ে একটা সমীক্ষা প্রকাশ করেছিল। এতে বলা হয়েছিল, তীব্র দাবদাহের কারণে মধ্যপ্রাচ্যে মৃত্যুহার অনেক বাড়বে। এই মুহূর্তে মধ্যপ্রাচ্যে তাপদাহজনিত রোগে ভুগে প্রতি এক হাজারে দু’জনের মৃত্যু হয়। এ সংখ্যাটা বেড়ে দাঁড়াতে পারে ১২৩-য়ে! আশঙ্কা করা হয়েছে, তাপদাহ বাড়তে থাকলে এই শতকের শেষে শুধু ইরাকেই মারা যেতে পারে এক লাখ ৩৮ হাজার মানুষ!
‘ল্যানসেটে’র সমীক্ষায় আরো আশঙ্কার কথা বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির হার কমবে না। তবে দাবদাহের কারণে মৃত্যুর ৮০ শতাংশই ঘটতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে। বড় বিপর্যয় এড়াতে হলে গ্লোবাল টেম্পারেচার বৃদ্ধির হার নিয়ন্ত্রণে রাখতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।
সূত্র : জি নিউজ
Leave a Reply