1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০২:৫৮ অপরাহ্ন

পদ্মা সেতুর ম্যুরাল : স্বৈরাচারী শাসনের শীর্ষ প্রতীক

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে দুটি ম্যুরাল ও ম্যুরালের জন্য কিছু স্থাপনা নির্মাণে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ব্যয় করেছিল ১১৭ কোটি টাকা। ম্যুরাল নির্মাতা ও স্থপতিরা বলেছেন, এত টাকা ব্যয় একেবারেই অস্বাভাবিক।

সেতুর দুই প্রান্তে এই ম্যুরালগুলোতে স্থান পেয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি। তবে ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে বিক্ষোভকারী ছাত্র-জনতা দেয়ালচিত্রগুলি মুছে ফেলেছে।

ফাঁকা সেই দেয়ালচিত্রগুলোকে ‘স্বৈরাচারী শাসনের শীর্ষ প্রতীক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

গতকাল রবিবার তিনি ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন। যেখানে বেশকিছু ছবিও প্রকাশ করেছেন তিনি।

পোস্টে প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘শেখ হাসিনা সরকার তার এবং তার পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের দেয়ালচিত্র নির্মাণের জন্য ১৩৫ কোটি টাকা (২০২০-২১ সালে ১৫ মিলিয়ন ডলার) ব্যয় করেছে। গণঅভ্যুত্থানের সময়, বিক্ষোভকারীরা দেয়ালচিত্রগুলি মুছে ফেলে। আজ, এই ফাঁকা দেয়ালচিত্রগুলি ২০০৯-২০২৪ সালের স্বৈরাচারী শাসনের শীর্ষ প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে।’

গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার এই ম্যুরাল নির্মাণের জন্য কোনো দরপত্র ডাকা হয়নি। অন্যতম ঠিকাদার ছিল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে বালিশ-কাণ্ডে বিতর্কিত মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশন লিমিটেড।

শুধু ম্যুরাল নির্মাণ নয়, অস্বাভাবিক ব্যয় করা হয়েছে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও। সেখানে ব্যয় করা হয়েছে ৮৯ কোটি টাকা। এ ক্ষেত্রেও উন্মুক্ত দরপত্র নয়, ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে নিজেদের পছন্দমতো।

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হলে ম্যুরাল দুটি নির্মাণে ৫০ কোটি টাকাও লাগত না। ম্যুরালে ব্যবহার করা নির্মাণসামগ্রীর দু-তিন গুণ দাম ধরে ঠিকাদার বিল তুলে নিয়েছেন।

২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর আগে তড়িঘড়ি করে দুই প্রান্তে ম্যুরাল নির্মাণ করা হয়। ম্যুরাল সেতুটির প্রকল্প প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ম্যুরাল ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনার নাম দেওয়া হয়েছিল ইনোগ্রেশন বা উদ্বোধনী কমপ্লেক্স।

চূড়ান্ত বিলের নথি অনুসারে, উদ্বোধনী কমপ্লেক্সের নকশা প্রণয়ন ও তদারকি বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৯৪ লাখ ৬২ হাজার টাকা। মাওয়া ও জাজিরায় ভূমি উন্নয়ন ও পাইলিং বাবদ ব্যয় দেখানো হয়েছে ৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকার কিছু বেশি। মাওয়া প্রান্তে উদ্বোধনী কমপ্লেক্স নির্মাণ, বৈদ্যুতিক কাজ, ফোয়ারা নির্মাণ ও শিল্পকর্ম বাবদ খরচ হয়েছে ৬৬ কোটি টাকা। একই কাজ জাজিরায় করতে ব্যয় হয়েছে ৪২ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। সব মিলিয়ে দুই প্রান্তের উদ্বোধনী কমপ্লেক্স তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় ১১৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। উদ্বোধনী এই কমপ্লেক্স নির্মাণ করা হয়েছে মূলত ম্যুরালকে কেন্দ্র করে।

সেতু বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দুই প্রান্তে দুটি উদ্বোধনী কমপ্লেক্সে একটি করে ম্যুরাল ও উদ্বোধনের ফলক রয়েছে। এর চারপাশে নির্মাণ করা হয়েছে বেদি। সামনে আছে ফোয়ারা। মাওয়া প্রান্তে কয়েকটি ও জাজিরায় একটি ইস্পাতের তৈরি মাছের ভাস্কর্য রয়েছে। মাওয়া প্রান্তে শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনার ম্যুরালের উচ্চতা ৯০ ফুট ও প্রস্থ ৪৫ ফুট। জাজিরা প্রান্তে ম্যুরালের উচ্চতা ৭২ ফুট ও প্রস্থ ৩৬ ফুট। ম্যুরাল দুটি মোট ৬ হাজার ৬৪২ বর্গফুটের।

ম্যুরাল দুটির নির্মাণ ব্যয় দেখানো হয়েছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের নদীশাসনের অংশ থেকে। সেতু বিভাগ সূত্রের দাবি, তৎকালীন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশেই বিতর্কিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজিদ সন্সকে ম্যুরাল নির্মাণের কাজ দেওয়া হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com