1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ০২:৫০ অপরাহ্ন

বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে চালের দাম বাড়ছেই

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

বিশ্ববাজারে কমলেও দেশে চালের দাম হু হু করে বাড়ছে । সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বাজারে মোটা চালের সর্বনিম্ন দর উঠেছে প্রতি কেজি ৫৫ টাকায়, যা এক মাস আগে ছিল ৫০ টাকা। মাঝারি চালের কেজি ৬০-৬৫ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৫৫-ে৬০ টাকা। সরু চাল কিনতে লাগছে প্রতি কেজি ৭৫-৮৫ টাকা, যা এক মাস আগে ছিল ৬৮-৭৮ টাকা। এ হিসেবে মোটা ও মাঝারি চালের দাম কেজি প্রতি ৫ টাকা এবং সরু চালের দাম কেজি প্রতি ৭ টাকা বেড়েছে।

অথচ বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে থাইল্যান্ড ৫ শতাংশ ভাঙা চালের প্রতি টনের গড় দাম ছিল ৫৮৬ ডলার, যা গত মাস জুনে নেমেছে ৪১৯ ডলারে। ভিয়েতনামের চাল ৫৪৩ ডলার থেকে কমে নেমেছে ৩৭৭ ডলারে। গত জানুয়ারি-মার্চ প্রান্তিকের তুলনায় চালের দাম কম।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে চাল আমদানি সাধারণত নিষিদ্ধ থাকে। সরকার বিশেষ অনুমতি দিয়ে চাল আমদানি করে। বিশেষ অনুমতির মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। শুল্কছাড়ের মেয়াদও শেষ। এ কারণে চাল আমদানি হচ্ছে না। এই সুযোগে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) শুল্কহার অনুযায়ী, চাল আমদানিতে মোট শুল্ক–কর এখন সাড়ে ৬৭ শতাংশ।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানিকারক সমিতির একাধিক সূত্র জানায়, ১৫ এপ্রিলের পর চাল আমদানি বন্ধ হয়ে গেছে। যেসব আমদানিকারক অনুমতি পেয়েছিলেন, তাঁদের ওই সময়ের মধ্যে আমদানির জন্য বলা হয়েছিল। শুল্কছাড়ও উঠে গেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় চাল আমদানি হয় মূলত বর্ধমান থেকে। সেখানে প্রতি কেজির দর ৩৪ রুপি। বাংলাদেশে আনতে কেজি পড়বে ৫৩-৫৪ টাকা।

তবে বাজার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলেও দেশে চালের দাম বাড়ার পেছনে ভিন্ন কারণ রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের হিসাব অনুযায়ী, গত এক বছরে ১৩ লাখ মেট্রিক টনের মতো চাল আমদানি হয়েছে। গত বোরো মৌসুমে ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের কারণে চালের দাম না কমে বরং বেড়েছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, চালের এই মূল্যবৃদ্ধি শুরু হয় মূলত ২০২০ সালের শুরু থেকে। তখন প্রতি কেজি মোটা চালের দর ছিল ৩০-৩৫ টাকা। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার নানা পদক্ষেপের কথা বলেও চালের দাম কমাতে পারেনি। এখনো সেটা কমছে না।

মধ্যবিত্ত পরিবারের গৃহীনি সামিয়া জামান জানান, তাঁর পরিবারে প্রতি মাসে মিনিকেট চালের ২৫ কেজির একটি বস্তা কেনা হয়। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে এক বস্তা চাল ২ হাজার ১৫০ টাকায় নিয়েছিলেন। কয়েক দিন আগে সেই একই চালের বস্তা নিয়েছেন ২ হাজার ৩০০ টাকায়। বেশি পড়েছে কেজিপ্রতি ৬ টাকা।

ওই গৃহীনির ভাষ্য, সংসারের খরচ নিত্য বাড়ছে। অথচ বেতন কিন্তু বাড়ছে না। এভাবে দাম বাড়লে সংসারে চালাবেন কী করে, প্রশ্ন তাঁর।

বোরো মৌসুমে দেশে দুই কোটি টনের বেশি চাল উৎপাদিত হয়, যা সারা বছরের মোট উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি। বোরোর ভরা মৌসুমে সাধারণত চালের দাম অনেকটাই কমে যায়। এবার কিছুটা কমেছে। তবে মোটা চালের কেজি ৫০ টাকা বা বেশি ছিল।

সাধারণত মে মাস পর্যন্ত বোরো মৌসুম ধরা হয়। এবার দেখা গেছে, জুনেই চালের দাম বাড়তে শুরু করেছে। টিসিবির হিসাবে, মোটা চালের কেজি যেমন ৫ টাকা বেড়েছে, তেমনি মাঝারি চালের দর কেজিপ্রতি ৫-৬ টাকা এবং সরু চাল ৫-৭ টাকা বেড়েছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, ৫৫ টাকা কেজিতে যে মোটা চাল বিক্রি হয়, তা সাধারণত সব বাজারে পাওয়া যায় না। নিম্ন আয়ের মানুষকে চাল কিনতে হয় মূলত ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজি দরে। রাজধানীর কাজীপাড়ার বাইশবাড়ী এলাকা ও পশ্চিম তেজতুরী বাজারের মুদিদোকান এবং কারওয়ান বাজারের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, মানভেদে পাইজাম চাল ৬০-৬২ টাকা এবং বিআর আটাশ ৬০-৬৫ টাকা দরে বিক্রি হয়। এই চালই মূলত নিম্নবিত্তের মানুষেরা কেনেন।

মালিবাগ বাজারের চাল ব্যবসায়ী মোসলেম খান বলেন, তিনি মোজাম্মেল ব্র্যান্ডের মিনিকেট চাল বিক্রি করেন। ১৫ দিন আগে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তা ৩ হাজার ৮০০ টাকায় কিনেছেন। গত শুক্রবার তা কিনেছেন ৪ হাজার ১০০ টাকায়। তাই তাঁকেও বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে।

সরকারি সূত্রগুলো জানায়, দেশে গত আগস্টে বন্যায় আমনের উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তখন সরকার শুল্ক কমানো ও ১০ লাখ টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নেয়। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৩ লাখ টন চাল আমদানি হয়েছে। এর মধ্যে সরকারিভাবে এসেছে ৮ লাখ ৩৫ হাজার টন। বেসরকারি আমদানিকারকেরা এনেছেন প্রায় ৪ লাখ ৭০ হাজার টন চাল। একই সময়ে ৬২ লাখ টন গমও আমদানি হয়েছে।

সরকারের কাছে এখন খাদ্যশস্য মজুত আছে প্রায় ১৮ লাখ টন, যা সন্তোষজনক বলে গণ্য করা হয়। এর মধ্যে ১৫ লাখ টনের বেশি চাল।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com