বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজ ক্যাম্পাসগুলোতে ক্রমেই প্রকাশ্যে আসছে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের দ্বন্দ্ব। কথার লড়াই তো চলছেই; মাঝে মধ্যে দ্বন্দ্ব রূপ নিচ্ছে হাতাহাতি-হামলাতেও। গতকাল শনিবার চট্টগ্রামের সরকারি কমার্স কলেজে ছাত্রদল ও ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চলাকালে গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় কলেজে আসা পরীক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ছাত্রশিবিরের দাবি, ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা হেল্প ডেস্কে শিবিরের কর্মীদের ওপর হামলা চালান। যদিও অভিযোগটি মিথ্যা বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ছাত্রদলের নেতারা। তারা বলছেন, ‘ছাত্রদল ধর’ বলে আওয়াজ তুলে আক্রমণের চেষ্টা করা হয়েছে। এতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
চট্টগ্রাম মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন রনি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা উপলক্ষে আমাদের ভাইয়েরা ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকদের বসার জন্য হেল্প ডেস্ক বসিয়েছিল। ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা এসে এতে বাধা দেন। একপর্যায়ে তারা আমাদের চারজন ভাইকে মারধর করেন।
চট্টগ্রাম সরকারি কমার্স কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফয়সাল উদ্দিন বলেন, গেটের বাইরে একটি হেল্প ডেস্কে মোবাইল রাখা নিয়ে একজন ছাত্রীর সঙ্গে সমস্যা হয়। তখন কলেজের ভেতর থেকে একজন বলতে থাকে—‘ছাত্রদল ধর, মার’। এরপর সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়। আমরা কলেজ অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ জানিয়েছি। ডবলমুরিং থানার ওসি কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় কেউ থানায় অভিযোগ করেনি।
এদিকে, ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের হত্যার হুমকি দিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীতে ছাত্রদলকর্মীর বিরুদ্ধে থানায় জিডি হয়েছে। ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় এ জিডি করা হয়।
অভিযুক্ত ছাত্রদলকর্মীর নাম আহনাফ তাহমিদ অর্জন। তিনি নগরের ভাটাপাড়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে। আহনাফ রাজশাহী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী এবং কলেজ শাখা ছাত্রদলের কর্মী।
মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মোহা. শামীম উদ্দীনের করা জিডিতে বলা হয়, আহনাফ ফেসবুকে লেখেন ‘শিবির মারা জায়েজ ছিল, জায়েজ আছে, জায়েজ থাকবে। এদের বেসিক হিউম্যান রাইটস থাকাও উচিত কি না, সেটা নিয়ে ডিবেট হওয়া উচিত।’ এ পোস্টকে হুমকিমূলক উল্লেখ করে ছাত্রশিবির নেতারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
অভিযুক্ত আহনাফ বলেন, বিভিন্ন জায়গায় আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলা হয়েছে। ক্যাম্পাসে শিবির আবার সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করছে—এটা দেখে আমার খারাপ লেগেছে। তাই একটি পোস্ট দিয়েছিলাম। পরে মহানগর ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক রবিন ভাই ফোন করে বলেন, এটি ঠিক হয়নি। তখন আমি পোস্ট সরিয়ে ফেলি।
বোয়ালিয়া থানার ওসি মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, জিডি হয়েছে। তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় রংপুর পুলিশ লাইন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রের সামনে ছাত্রশিবিরের হেল্প ডেস্কে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে শিবিরের পাঁচ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
হামলার শিকার ছাত্রশিবিরের মিল্লাত হোসেন বলেন, মেহেদী নামে একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী হামলার নেতৃত্ব দিয়েছে। মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি নুরুল হুদা বলেন, এ ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে হবে।
Leave a Reply