ময়মনসিংহ শিশু একাডেমি হিসেবে ব্যবহার করা হতো নগরের হরিকিশোর রায় রোডের প্রাচীন একটি বাড়ি। কেউ বলছেন বাড়িটি সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের, কেউ বলছেন বাড়িটি টাঙ্গাইলের দানবীর রায় বাহাদুর রনদা প্রসাদ সাহার অস্থায়ী বাসভবন। সম্প্রতি শিশু একাডেমি বাড়িটি ভাঙার কাজ শুরু হলে সমালোচনা শুরু হয়। এরপর আজ বুধবার স্থাপনাটি ভাঙার কাজ বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ।
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের শশীলজ জাদুঘরের মাঠ কর্মকর্তা সাবিনা ইয়াসমিন বাড়িটি ভাঙার ব্যাপারে তথ্য চেয়ে গত সোমবার জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করেন। তখন সাবিনা ইয়াসমিন বলেছিলেন, এটি রায় পরিবারের ঐতিহাসিক বাড়ি। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত না হলেও সত্যজিৎ রায়ের পূর্বপুরুষদের বাড়ি হিসেবে সেটি শতবর্ষ প্রাচীন। এই স্থাপনা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে তালিকাভুক্ত হতে পারে।
বাড়ি ভাঙার খবর প্রকাশের পর গতকাল ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও ভারত সরকারের পক্ষে বিবৃতি দেওয়ার পর তোলপাড় শুরু হয়। গতকাল রাতেই জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা বাড়িটি পরিদর্শন করেন। বাড়িটির মালিকানা নিয়ে জটিলতার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হয়।
জানতে চাইলে জেলা শিশুবিষয়ক কর্মকর্তা মেহেদী জামান সাংবাদিকদের বলেন, জেলা প্রশাসকের নির্দেশে সেখানে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। আজ বিকেল চারটায় বিষয়টি নিয়ে সভা হবে। তারপর বিস্তারিত জানানো হবে।
স্বপন ধর বলেন, ‘বাড়িটি ছিল রনদা প্রসাদের অস্থায়ী বাসভবন। এর মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই। আমাদের কাছে সব ধরনের গবেষণা কাগজ রয়েছে। যে কথাটি বলা হচ্ছে, এটি সত্যজিৎ রায়ের বাড়ি, সেটি হচ্ছে দুর্লভ ভবন। সেই বাড়িটি এখান থেকে কিছুটা দূরে। এই রোডটি সত্যজিৎ রায়ের পরিবার হরিকিশোরের নামে এতে কোনো সন্দেহ নেই।’
প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আঞ্চলিক পরিচালক (ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগ) আফরোজা খান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে বাড়িটির অনেকটাই ভেঙে ফেলা হয়েছে। বিষয়টি তাঁদের নজরে আসার পর সরেজমিন ঘুরে মাঠ কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। তারপর কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যায়, চিন্তা করবেন।
Leave a Reply