নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে। দেশটির দুর্নীতি বিরোধী তদন্তকারী দলের সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করেন। এ জন্য তার বাসভবনের সামনে তিন হাজারের বেশি পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এসময় গ্রেপ্তার ঠেকাতে ভিড় করেন ইওলের সমর্থকরাও। তবে পুলিশের কঠোর প্রতিরোধের মুখে সমর্থকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে বাসভবনে ঢুকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, রাজধানী সিউলের মধ্যাঞ্চলে স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা মই বেয়ে ইউনের বাড়ির প্রাঙ্গণে ঢুকে পড়েন। পরে বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে তার গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়।
এর আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে একবার ইউনকে গ্রেপ্তারের জন্য তার বাড়িতে কয়েক ঘণ্টার অভিযান চালান তদন্তকারীরা। তবে তার নিরাপত্তা বাহিনীর বাধায় সেই অভিযান ব্যর্থ হয়। এবার দ্বিতীয়বারের মতো অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারি করেছিলেন ইউন। কিন্তু তীব্র প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে মাত্র ছয় ঘণ্টার মাথায় তিনি তা প্রত্যাহারে বাধ্য হন। স্বল্পস্থায়ী এই সামরিক আইন জারির জেরে গত ১৪ ডিসেম্বর ইউনকে দেশটির পার্লামেন্টে অভিশংসন করা হয়। প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রাষ্ট্রদ্রোহ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে শুরু হয় ফৌজদারি তদন্ত। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তদন্তকারীদের তলবে হাজির হতে ইউন অস্বীকৃতি জানান। এর জেরে গত ৩১ ডিসেম্বর ইউনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন দক্ষিণ কোরিয়ার একটি আদালত।
এদিকে সাময়িকভাবে সামরিক আইন জারির দায়ে অভিশংসিত হলেও দক্ষিণ কোরিয়ার বরখাস্ত এ প্রেসিডেন্টের বার্ষিক বেতন বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার।
এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে বিবিসি লিখেছে, সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন বৃদ্ধির মানদন্ড অনুযায়ী ইউনের বেতনও ৩ শতাংশ বেড়ে ২৬ কোটি ২৬ লাখ ওন (১ লাখ ৭৯ হাজার ডলার; ১ লাখ ৪৭ হাজার পাউন্ড) হবে।
যদিও ইউনের বেতন বৃদ্ধির খবরে দক্ষিণ কোরীয়রা তীব্র সমালোচনা শুরু করেছেন।
Leave a Reply