আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে পুনর্বাসিত হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখন নতুন করে নেওয়ার কিছু নাই বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। পাশাপাশি ফ্যাসিবাদের পক্ষে যে কলমগুলো আবার লিখবে সেই কলমগুলো ভেঙে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তিনি। জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত গণসংযোগ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জে লিফলেট বিতরণ, পথসভা ও গণসংযোগে তিনি এসব কথা বলেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘৫ আগস্ট নির্ধারিত হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের পরিণতি। এই আওয়ামী জাহিলিয়াতের শাসন বাংলাদেশ থেকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ হবে কিনা তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গিয়েছিল গত ৫ আগস্ট। অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় আজকে বিপ্লবীরা লিখিত দালিলিক স্বীকৃতির জন্য যেভাবে অপেক্ষা করছে! অন্যদিকে আজকে রাষ্ট্রযন্ত্র এই আওয়ামী পুনর্বাসনের জন্য বিভিন্নভাবে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিপ্লবী শক্তি স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই আমাদের হারানোর কিছুই নাই। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে পুনর্বাসিত হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত এখন নতুন করে নেওয়ার কিছু নাই। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের রাজনীতিতে পূনর্বাসিত হবে কিনা সেটার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে পাঁচ আগস্ট। সুতরাং যারা আবার নতুন করে আওয়ামী রাজনীতির পূর্নলিখন করতে যাচ্ছেন তাদেরকে বলতে চাই, এই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতি পূনর্বাসিত হবে কিনা সেটা এখন প্রাসঙ্গিক আলাপ নয়। বরাং ওয়ার্ড থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।’
‘তাদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তাদের পুনর্বাসন এবং তাদের উপস্থিতি ছাড়া নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না- এই কথা যারা বলবে, আমরা ধরে নেবো গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের জাহিলিয়াতের রাজনীতিতে তাদেরও ইন্ধন ছিল’, বলেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক।
তিনি আরও বলেন, ‘স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমাদের পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মিত হবে অতীতে যারা রাজনীতি করেছে তাদের অভিজ্ঞতা এবং তরুণ প্রজন্মের যে ভয়হীন মনোভাবের সংমিশ্রণে। কিন্তু এখানে যদি তরুণদেরকে মাইনাস করার চিন্তা থাকে তবে সেটি মানা হবে না।’
আওয়ামী লীগের প্রশ্নে সর্বপ্রথম যে বিষয়টি আসবে সেটি হলো আগে তাদের বিচার হতে হবে উল্লেখ করে হাসানাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘সুতরাং যেসব মিডিয়া পাড়া, যেসব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক, যেসব বুদ্ধিজীবী এখন আওয়ামী লীগের মানবাধিকারের জন্য যারা শরিক হয়েছেন তারাই এতদিন ফ্যাসিবাদকে পৃষ্টপোষকতা দিয়েছেন। এখন সেই ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেই কলমগুলো আবার লিখবে আমরা সেই কলমগুলো ভেঙে দেবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদের পক্ষে যেসব মিডিয়া কথা বলবে সেসব মিডিয়ার বিপক্ষে অবস্থান অব্যাহত থাকবে। ফ্যাসিবাদের পক্ষে আবার যেসব মগজ তাদের চিন্তা প্রসূত করবে সেসব চিন্তার বিপক্ষে আমাদের শক্ত অবস্থান থাকবে। আমরা বারবার বলছি, আপনারা যদি এই তরুণ প্রজন্মের কথা বুঝতে ব্যর্থ হন আওয়ামী লীগের যে পরিণতি হয়েছে পরবর্তী সময়ে যারাই নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আসবে তাদের পরিণতিও আওয়ামী লীগের মতো হবে।’
হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যের পর গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জে সিদ্ধিরগঞ্জের চিটাগাংরোড ও সোনারগাঁও উপজেলার কাঁচপুরেও গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে নেতৃবৃন্দরা।
এ সময় জাতীয় নাগরীক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন, যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, যুগ্ম আহবায়ক আলী আহসান জোনায়েদ, সহ মুখপাত্র আরেফীন মুহাম্মাদ হিজবুল্লাহ, কেন্দ্রীয় সদস্য শওকত আলী, সাবিত আল হাসান, তামিম আহমেদ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply