বাংলাদেশে গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর মুক্তি দাবি করেছে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি।
তাকে মুক্তি না দিলে বাংলাদেশ সীমান্ত সনাতনীরা অবরোধ করবে বলেও হুমকি দিয়েছেন রাজ্যটির বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। একই সঙ্গে কলকাতার বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভেরও হুমকি দিয়েছেন তিনি।
গতকাল সোমবার রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল।
এদিন রাতে বাংলাদেশে ইসকনের সনাতনী নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশের গ্রেপ্তার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এ খবরে অত্যন্ত বিচলিত এবং চিন্তিত।’
তিনি বলেন, ‘চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ প্রভুকে ড. ইউনূসের সরকার একটু আগে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।’
রাজ্যটির বিরোধী দলনেতা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘চিন্ময়কে মুক্তি না দিলে বাংলাদেশ ডেপুটি হাইকমিশনে বিক্ষোভ হবে এবং বাংলাদেশ সীমান্তে সনাতনীরা ধ্বজ নিয়ে অবরোধ করবে। পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে বাংলাদেশে আমরা কোনো পরিষেবা যেতে দেবো না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর যেভাবে দমন পীড়ন শুরু হয়েছে, তাতে আমরা চিন্তিত, ব্যথিত। এই জিনিস আর বরদাস্ত করা হবে না।’
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চের মুখপাত্র। ওই সমাবেশের পরপরই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ ওঠে।
এরপর গত ৩০ অক্টোবর নগরীর কোতোয়ালি থানায় ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন । বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা অবমাননা করার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনে এই মামলা করা হয়। এই ঘটনায় আগেই দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তাদের নাম রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস।
মামলার আরও যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা হলেন ইসকনের চট্টগ্রামের বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত, নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী, গোপাল দাস টিপু, ডা. কথক দাস, প্রকৌশলী অমিত ধর, রনি দাস, রাজীব দাস, কৃষ্ণ কুমার দত্ত, জিকু চৌধুরী, নিউটন দে ববি, তুষার চক্রবর্তী রাজীব, মিথুন দে, রুপন ধর, রিমন দত্ত, সুকান্ত দাস, বিশ্বজিৎ গুপ্ত, রাজেশ চৌধুরী এবং হৃদয় দাস।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে।
এদিকে সম্প্রতি চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে বহিষ্কার করেছে ইসকন (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ।
Leave a Reply