রসুন আমাদের রান্নাঘরে বহুল ব্যবহৃত একটি মসলা। আমাদের প্রতিদিনের রান্নায় কোনো না কোনো খাবারে রসুনের ব্যবহার থাকেই। কিন্তু রসুন শুধু রান্নার স্বাদই বাড়ায় না, পাশাপাশি বিভিন্ন রোগের দাওয়াই হিসেবেও কাজ করে। রসুনের রয়েছে প্রচুর পুষ্টিগুণ। নিয়মিত রসুন খেলে অনেক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। কারণ রসুন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তাহলে আর দেরি কেনো, জেনে নিন রসুনের এমনি কিছু ঔষধি গুণ সম্পর্কে।
রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায় : গবেষণায় দেখা গেছে, রসুন কোলেস্টেরলের মাত্রাকে কমায় এবং রক্তবাহী ধমনীতে প্লাক বা ক্ষতিকর সাদা পদার্থ গঠন ৫ থেকে ১৮ শতাংশ কমাতে সাহায্য করে। সেক্ষেত্রে নিয়মিত কাঁচা রসুন খাওয়ার অভ্যাসটাকে ভালোভাবে রপ্ত করতে হবে।
ক্যানসার প্রতিরোধে : রসুনের অ্যালাইল সালফার উপাদান ক্যানসার কোষের বৃদ্ধি রোধ করে। বিশেষ করে পরিপাকতন্ত্রের ক্যানসার প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে এর। রসুন সুনির্দিষ্ট কিছু টিউমারের বৃদ্ধি রোধ করে এবং কিছু টিউমারের আকারও ছোট করতে ভূমিকা রাখে।
রক্ত পরিষ্কার রাখে : আপনার রক্ত পরিষ্কার রাখতে প্রতিদিন সকালে রসুনের দুটি কোয়া ও এক গ্লাস পরিমাণ গরম পানি সেবন করতে পারেন। এতে রক্ত পরিষ্কার হবে এবং ত্বক ভালো থাকবে।
ডায়াবেটিসে : রক্তে চিনির মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণ করে রসুন। ডায়াবেটিসে ইনসুলিন নিঃসরণ বাড়িয়ে রক্তের সুগারের মাত্রাকে নিয়ন্ত্রণে আনে। অন্যদিকে, নিয়মিত রসুন খাওয়ার মাধ্যমে ডায়াবেটিস প্রতিরোধও করা সম্ভব।
ঠাণ্ডা জ্বর থেকে উপশম : প্রায়ই ঠাণ্ডা ও জ্বরে পড়েন এমন ব্যক্তিদের জন্য রসুন হতে পারে এক মহৌষধ। শরীর থেকে জ্বর আর ঠাণ্ডা দূর করতে প্রতিদিন দু-তিন কোয়া রসুন কাঁচা খেতে হবে। রসুনের গন্ধ খারাপ লাগলে এর সঙ্গে মধু ও আদা মিশিয়ে নিন। এভাবে নিয়মিত সেবনে ঠাণ্ডা ও জ্বর শুধু সাময়িক দূর হবে না বরং শরীরে এগুলোর প্রতিরোধক্ষমতাও বাড়বে।
বাতের ব্যথা কমাতে : পুরানো ও দীর্ঘস্থায়ী বাতের ব্যথার সমস্যাতেও কাজ করে রসুন। বিভিন্ন ধরনের বাতের ব্যথা ও প্রদাহ কমায় এবং বাতজনিত কারণে সৃষ্ট অন্যান্য উপসর্গকে নিয়ন্ত্রণ করে রসুন।
মাথা ধরায় : সর্দি হয় না অথচ মাথা ধরে এরকম হলে ১-২ কোয়া রসুনের রসের নস্যি নিলে উপকার পাওয়া যায়।
ওজন কমাতে : আজকাল ওজন নিয়ে সমস্যা অনেকের মধ্যেই দেখা যায়। ওজন কমাতে কত কিছুই না করি। কাঁচা ও রান্নায় ব্যবহৃত রসুন খাওয়ার অভ্যাসে আপনার ওজনটাও নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
দাঁত ব্যথায়: ব্যাকটেরিয়া ও জীবাণুঘটিত রোগ প্রতিরোধে হাজার বছর ধরেই রসুন ব্যবহৃত হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুদের কৃমি দূর করতে রসুনের নির্যাস ভালো কাজ করে। এটি নিয়মিত ব্যবহারে মাড়িতে ব্যাকটেরিয়ার বিস্তার বন্ধ হয়।
হজমশক্তি বাড়ায় : রসুন হজমশক্তি বাড়ায়। পেটের অভ্যন্তরে স্বস্তি ও আরাম অনুভূত হয়। গ্যাসের সমস্যা দূর করে। পুষ্টি উপাদানসমূহ ভালোভাবে হজমে সহায়তা করে। একইসঙ্গে লিভারকেও সুস্থ-সবল রাখে।
রসুন ব্যবহারে সাবধানতা : হাঁপানি রোগী বা শ্বাসকষ্ট আছে এমন ব্যক্তিরা রসুন ব্যবহারে সাবধান থাকুন। আর চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দিনে ২-৩টির বেশি রসুনের কোয়া খাওয়া যাবে না।
Leave a Reply