যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক শক্তিচালিত একটি বিমানবাহী রণতরী শনিবার দক্ষিণ কোরিয়ায় ত্রিমুখী মহড়ার জন্য পৌঁছেছে। এটি রাশিয়ার সাথে সম্পৃক্ত হবার কারণে উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকি মোকাবেলা করতে তাদের সামরিক প্রশিক্ষণ প্রসার করার একটি পদক্ষেপ ।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের মধ্যে এ সপ্তাহে যুদ্ধের ক্ষেত্রে পারস্পরিক প্রতিরক্ষা সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। দক্ষিণ কোরিয়া এ চুক্তিটির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার জন্য রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতকে তলব করার এক দিন পরে বুসানে ইউএসএস থিওডোর রুজভেল্ট রণতরীটির আগমন ঘটে। দক্ষিণ কোরিয়া বলে, চুক্তিটি তাদের নিরাপত্তার প্রতি হুমকি তৈরি করে এবং তারা সতর্ক করে যে এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে দেশটি রাশিয়ার আক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করার জন্য ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর কথা বিবেচনা করতে পারে। এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা নিঃসন্দেহে মস্কোর সাথে তাদের সম্পর্ক নষ্ট করবে।
জুনের শুরুতে সিঙ্গাপুরে তাদের প্রতিরক্ষা প্রধানদের মধ্যে বৈঠকের পর যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান ফ্রিডম এজ-এর ঘোষণা করে। নতুন এই মাল্টিডোমেন অনুশীলনটির লক্ষ্য হলো বিমান, সমুদ্র এবং সাইবারস্পেস সহ দেশগুলির কার্যক্রমের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের সম্মিলিত প্রতিক্রিয়াকে আরও উন্নত করা।
থিওডোর রুজভেল্ট রণতরীটি জুন মাসের মধ্যেই শুরু হতে যাওয়া অনুশীলনে অংশগ্রহণ করবে। দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী তাৎক্ষণিকভাবে প্রশিক্ষণের সুনির্দিষ্ট বিবরণ নিশ্চিত করেনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার নৌবাহিনী এক বিবৃতিতে বলে, থিওডোর রুজভেল্টের আগমন মিত্রদের কঠোর প্রতিরক্ষা অবস্থান এবং ‘উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির উত্তর দিতে দৃঢ় ইচ্ছা’ প্রদর্শন করে। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে শক্তি প্রদর্শনে যুক্তরাষ্ট্রের আরেকটি বিমানবাহী রণতরী, ইউএসএস কার্ল ভিনসন দক্ষিণ কোরিয়ায় আসার সাত মাস পর এ রণতরীটি এসেছে।
থিওডোর রুজভেল্ট রণতরী এপ্রিলে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের নৌবাহিনীর সাথে বিতর্কিত পূর্ব চীন সাগরে একটি ত্রিমুখী মহড়ায় অংশ নেয়। সেখানে চীনের আঞ্চলিক দাবি নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে।
উত্তর কোরিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপান তাদের সম্মিলিত প্রশিক্ষণ বাড়িয়েছে এবং উত্তর কোরিয়াকে ভয় দেখানোর জন্য এই অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত সামরিক সম্পদের দৃশ্যমানতা বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং দক্ষিণ কোরিয়া তাদের পারমাণবিক প্রতিরোধের কৌশলগুলোও হালনাগাদ করছে। সিউল আরো দৃঢ় আশ্বাস চায় যে ওয়াশিংটন উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক আক্রমণ থেকে তার মিত্রকে রক্ষা করার জন্য দ্রুত এবং চূড়ান্তভাবে তাদের পারমাণবিক ক্ষমতা ব্যবহার করবে।
সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা
Leave a Reply