সাংবাদিকতায় ‘সাহসী’ ভূমিকা পালন করার জন্য পুরস্কৃত হয়েছিলেন ফিলিস্তিনি সাংবাদিক মাহা হুসেনি। কিন্তু পুরস্কারপ্রাপকদের নাম ঘোষণা করে দেয়ার পরে এক বিবৃতি দিয়ে আমেরিকান সাংবাদিকদের সংগঠনটি জানাল, মাহার পুরস্কার ফিরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সংগঠনটির এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে অনেকেই প্রশ্ন তুলছে, যেকোনো আমেরিকান সংগঠনই কি এখন ইসরাইলপন্থীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত?
ইসরাইল-গাজা সংঘাত শুরুর পর থেকে গাজা ভূখণ্ড থেকে ক্রমাগত খবর করেছেন মাহা। গাজায় ইসরাইলি অভিযান নিয়ে অসংখ্য প্রতিবেদন করেছেন তিনি। তাতে কখনো তুলে ধরা হয়েছে, কিভাবে গাজার হাসপাতালগুলোর করুণ অবস্থার জন্য মহিলারা বাড়িতেই সন্তানের জন্ম দিতে বাধ্য হচ্ছেন। কখনো আবার মাহা তার প্রতিবেদনে দেখিয়েছেন, কিভাবে এক নাবালিকা তার ছয় বছরের শারীরিকভাবে অক্ষম ভাইকে কাঁধে চাপিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ও বোমাবর্ষণ থেকে বাঁচতে। মাহার করা প্রতিবেদনগুলো ইসরাইলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন আদালতে মামলা করার সময়ে ব্যবহার করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা।
ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের নানা ছবি ‘সাহসের সাথে’ সকলের সামনে তুলে ধরার জন্য গত ১০ জুন ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেনস মিডিয়া ফাউন্ডেশন’ (আইউব্লিউএমএফ) মাহা-সহ মোট তিনজনের নাম ‘কারেজ ইন জার্নালিজম’ অর্থাৎ সাংবাদিকতায় সাহসিকতার পুরস্কারের জন্য ঘোষণা করেছিল। কিন্তু ১৯ জুন তারা একটি বিবৃতি জারি করে জানায় ‘গত কয়েক বছরে মাহা হুসেনি এমন নানা মন্তব্য করেছেন যা আমাদের সংস্থার নীতি-বিরুদ্ধ। তাই পুরস্কারপ্রাপক হিসেবে তার নাম প্রত্যাহার করে নেয়া হলো।’
সূত্রের খবর, ‘কারেজ ইন জার্নালিজম’ পুরস্কারের জন্য মাহার নাম ঘোষণা করার পর থেকেই আমেরিকার বহু কট্টরপন্থী দল ও প্রকাশনা সংস্থা প্রতিবাদ জানাতে শুরু করে। তাঁর কিছু মন্তব্য প্রকাশ্যে এনে তাঁকে ‘হামাসের সমব্যথী’ বলে কটাক্ষও করা হয়।
এই সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে সমাজমাধ্যম এক্স-এ মাহা লেখেন, ‘সাহসিকতার জন্য পুরস্কার জেতার অর্থ নানা ধরনের আক্রমণের সম্মুখীন হওয়া এবং এই সব কিছুর মাঝেও নিজের কাজ চালিয়ে যাওয়া। তবে, যে সংস্থা আমায় সাহসিকতার জন্য পুরস্কৃত করল, তারাই আবার চাপের মুখে তাদের সাহসী সিদ্ধান্ত বদল করল।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
Leave a Reply