ইসরাইলি সেনাবাহিনী হলো বিশ্বের সবচেয়ে অপরাধী বাহিনীগুলোর একটি। আর ইসরাইলি নেতারা হলেন যুদ্ধাপরাধী এবং মানবতাবিরোধী অপরাধী। তারা গাজায় চলমান গণহত্যার মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের নির্মূল করছে। ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলায় ইসরাইলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনবিষয়ক এক তদন্ত প্রতিবেদনে জাতিসঙ্ঘের এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
ওই তদন্তের চেয়ারপারসন এবং সাবেক জাতিসঙ্ঘ হাইকমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস এবং দক্ষিণ আফ্রিকা হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি নবি পিল্লাই এমন মন্তব্য করেছেন। তিনি ইসরাইলি যুদ্ধরাপরাধকে ‘নজিরবিহীন’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
তিনি বলেন, কমিশন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিটাল কোর্টের (আইসিসি) প্রধান প্রসিকিউটর করিম খানের কাছে সাত হাজার প্রমাণ দাখিল করেছেন। উল্লেখ্য, করিম খান ইতোমধ্যেই ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টকে যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।
ইসরাইলি বাহিনী ‘বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক সেনাবাহিনী’ বলে নেতানিয়াহু যে দাবি করেছেন, তার জবাব দিতে গিয়ে কমিশনের সদস্য ক্রিস সিডোটি প্রতিবেদন থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, ‘আপনি একমাত্র যে উপসংহার টানতে পারেন তা হলো এই যে ইসরাইলি সেনাবাহিনী হলো বিশ্বের সবচেয়ে অপরাধী সেনাবাহিনীগুলোর অন্যতম।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইল মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দায়ী। এতে বলা হয়, ইসরাইলি বাহিনী নির্মূল, খুন, ফিলিস্তিনি পুরুষ ও শিশুদের টার্গেট করে হত্যা, বলপূর্বক স্থানান্তর, নির্যাতন, অমানবিক ও নির্দয় আচরণ করেছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গাজায় ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের কারণ হলো ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে ইসরাইলি সরকার সকল কিছু করার কর্তৃত্ব দিয়েছে, গাজায় বেসামরিক স্থানে ব্যাপকভাবে ও নির্বিচারে হত্যার অনুমতি দিয়েছে।
কমিশন উল্লেখ করে, ইসরাইলি কর্তৃপক্ষ তার রাজনৈতিক ও সামরিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য গাজা উপত্যকার লোকজনকে পণবন্দী করেছে।
কমিশন ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার জন্য প্রাণহানির একটি বড় অংশের জন্য ইসরালিদেরকে দায়ী করে। এতে বলা হয়, অজ্ঞাত কারণে ওই সময় গাজা সীমান্ত থেকে ইসরাইলি বাহিনী সরিয়ে নেয়া হয়েছিল, তারপর হামাস যখন পণবন্দীদের গাজায় নিয়ে আসছিল, তখন ইসরাইলি বাহিনী নির্বিচারে পণবন্দী এবং বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা চালিয়েছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তারা অন্তত দুটি ঘটনা দেখেছে, যাতে ইসরাইলি বাহিনী হানিবল ডিরেক্টিভ (পণবন্দী হওয়া থেকে বিরত রাখতে আটকদেরসহ সবাইকে নির্বিচারে হত্যা করার ইসরাইলি গোপন আইন) প্রয়োগ করে অন্তত ১৪ ইসরাইলি বেসামিরক নাগরিককে হত্যা করে। নির ওজ থেকে গাজায় নিয়ে যাওয়ার সময় ইসরাইলি হেলিকপ্টার এক নারীকে হত্যা করে। আরেক ঘটনায় ইসরাইলি ট্যাঙ্ক বিরিতে ১৩ পণবন্দীর সবাইকে হত্যা করে।
পিল্লাই বলেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা এবং এরপর ইসরাইলি বাহিনীর যুদ্ধাপরাধ- উভয়ের মূল কারণ হলো ইসরাইলের অন্যায়ভাবে গাজা দখল।
সূত্র : আল জাজিরা, ডব্লিউএসডব্লিউএস
Leave a Reply