যেকোনো সময় দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় সৃষ্টি হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ের প্রাথমিক পদক্ষেপ লঘুচাপ। এটি শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে এর নাম হবে ‘রেমাল’। রেমাল ওমান আবহাওয়া দফতরের দেয়া নাম।
এ দিকে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর আজ বুধবারের পূর্বাভাসে জানিয়েছে, আজ দেশের ১৩ জেলায় থাকবে মৃদু তাপপ্রবাহ। পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, তাপপ্রবাহ আরো কিছু এলাকায় বিস্তার লাভ করতে পারে। গত সোমবার দেশের অধিকাংশ জেলায় বৃষ্টিপাত হলেও গতকাল খুবই অল্প কিছু স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে খেপুপাড়া ও ভোলা অন্যতম। খেপুপাড়ায় ২৪ ঘণ্টায় ৬৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে গেছে। এ ছাড়া ভোলায় বৃষ্টি হয়েছে ১১ মিলিমিটার। এ ছাড়া দেশের বৃষ্টিপ্রবণ সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগে বৃষ্টি হয়নি গতকাল। বৃষ্টি না হওয়ায় বেড়ে গেছে তাপপ্রবাহের গতি।
আজ সিলেট বিভাগের ৪ জেলাসহ ঢাকা, নেত্রকোনা, চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, ফেনী, কক্সবাজার, বাগেরহাট, যশোর ও চুয়াডাঙ্গায় জেলায় তাপ প্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় বিস্তৃত হতে পারে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা উঠেছে চুয়াডাঙ্গায় ৩৭.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনি¤œ ছিল দিনাজপুরে ২২.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আজ রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ময়মনসিংহ, ঢাকা ও খুলনা বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া অন্যত্র আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকতে পারে ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধি পেতে পারে।
আসন্ন ঘূর্ণিঝড়টি সম্বন্ধে আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ বরিশাল বিভাগের বরগুনা জেলা থেকে শুরু করে চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকার উপর দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করতে পারে ২৬ মে সকাল ৬টার পর থেকে রাত ১২টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের অগ্রবর্তী অংশ উপকূলীয় এলাকায় প্রবেশ করা শুরু করতে পারে সকাল ৬টার পর থেকে। ঘূর্ণিঝড়ের কেন্দ্র উপকূল অতিক্রম করার সম্ভাব্য সময় ২৬ মে দুপুর ১২টার পর থেকে বিকেল ৬টার মধ্যে। ঘূর্ণিঝড় বৃত্তের পিছন দিকের অর্ধেক অংশ পুরোপুরি স্থলভাগে প্রবেশ করতে রাত ১২টা পর্যন্ত লেগে যেতে পারে।
মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি জোয়ারের সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করলে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ১০ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হওয়ার প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। কিন্তু, ঘূর্ণিঝড়টি ভাটার সময় উপকূলে আঘাত হানা শুরু করলে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলো স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৬ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হতে পারে।
বাংলাদেশের খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের উপকূলীয় জেলাগুলোর উপকূলে আঘাতের সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে।
Leave a Reply