স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেছেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা এবং জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কর্মসূচি বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে গৃহীত বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারাদেশের মা ও শিশুর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
জাতিসংঘ সদর দফতরে জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কমিশনের ৫৭তম অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।
ডা. রোকেয়া সুলতানা মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনা এবং কৈশোর স্বাস্থ্য ও কল্যাণ নিশ্চিতকরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক গৃহীত নানাবিধ পদক্ষেপ ও কর্মসূচির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতিটি মা ও শিশুর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার জন্য আমরা ইউনিয়ন পর্যায়ে ৫৫০০টি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র স্থাপন করেছি এবং সার্বক্ষণিক পরিষেবা প্রদানের জন্য প্রতিটি কেন্দ্রে ৪ জন করে ধাত্রী নিয়োগের পরিকল্পনা করছি। এসময় আগামী ২ বছরের মধ্যে ২০,০০০ ধাত্রী নিয়োগ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বাংলাদেশে জাতীয় কৈশোর স্বাস্থ্যবিষয়ক কৌশলপত্র (২০১৭-২০৩০) এবং এর বাস্তবায়নে গৃহীত জাতীয় কর্মপরিকল্পনার বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা বাল্যবিবাহ এবং নারী ও কন্যা শিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধে কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত প্রায় ৫ লাখ কিশোরীদের সরকার বিনামূল্যে স্যানিটারি ন্যাপকিন বিতরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলেও বক্তব্যে অবহিত করেন তিনি।
মাতৃমৃত্যু ও জন্মহার হ্রাস, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ স্বাস্থ্য তথ্য ব্যবস্থার ডিজিটালাইজেশন, ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা ও পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিসহ স্বাস্থ্য খাতে বাংলাদেশের বিভিন্ন অর্জন তুলে ধরেন। প্রতিমন্ত্রী উন্নয়নশীল দেশগুলোর সক্ষমতার ঘাটতি মেটাতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অংশীদারত্ব বৃদ্ধিরও আহ্বান জানান প্রতিমন্ত্রী।
মূল অধিবেশনের সাইড লাইনে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের মাতৃমৃত্যু বিষয়ক সিগনেচার সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করেন মাননীয় প্রতিমন্ত্রী। সেখানে তিনি দেশের প্রতিটি প্রান্তে পর্যাপ্ত ও প্রশিক্ষিত ধাত্রী নিয়োগের মাধ্যমে মাতৃমৃত্যু হাসে বাংলাদেশের সাফল্য বর্ণনা করেন। এছাড়াও তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা, ইউএনএফপিএ এবং পিপিডি আয়োজিত আইসিপিডি কর্মসূচী বাস্তবায়নে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার গুরুত্ব বিষয়ক আরেকটি সাইড ইভেন্টে অংশ গ্রহণ করেন।
এ সকল আয়োজনে অংশগ্রহণের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের ভাইস মিনিস্টার ফর ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন; ও ইউএনএফপিএ এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন এবং নেদারল্যান্ডসের ভাইস মিনিস্টার কর্তৃক আয়োজিত আইসিপিডি-৩০ গ্লোবাল ডায়ালগ শীর্ষক একটি গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন।
২৯ এপ্রিল শুরু হওয়া জনসংখ্যা ও উন্নয়ন কমিশনের ৫৭তম অধিবেশন আগামী ৩ মে শেষ হবে। আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং এ সংক্রান্ত ডিকেড অফ অ্যাকশন চলাকালে এজেন্ডা ২০৩০ এর অর্জন মূল্যায়ন ও টেকসই উন্নয়নে আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনের ভূমিকা হলো এই বছরের অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য।
উল্লেখ্য, আইসিপিডি প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনের ৩০তম বার্ষিকী উদযাপনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ আগামী ১৫ থেকে ১৬ মে ২০২৪ তারিখে ঢাকায় ডেমোগ্রাফিক ডাইভার্সিটি অ্যান্ড সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করছে।
Leave a Reply