তাপপ্রবাহ অব্যাহত আছে। আজো দেশব্যাপী ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রা বাড়তে পারে এবং দেশব্যাপী তাপ প্রবাহের আওতা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তা ছাড়া বসন্তের এই শেষ সময়ে সূর্য কিরণ খাড়াভাবে পড়ায় এবং তাপের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় প্রকৃতিতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এর মধ্যে ঝড়, তুফান, বজ্রসহ ঝড়, শিলাবৃষ্টি অন্যতম। একটু ঘন ঘন বৃষ্টি হচ্ছে বলে বাতাসে বাড়ছে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ।
আবহাওয়া অফিস বলছে, রাজশাহী, নাটোর, নওঁগা, পাবনা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া চুয়াডাঙ্গা জেলাগুলোর ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। একই সাথে এই ১১ জেলার বাইরে তাপপ্রবাহ বিস্তার লাভ হতে পারে।
আজ শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা ও ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্র বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টিও হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সিলসিয়াস বেড়ে যেতে পারে। সারা দেশে ঝড়-বৃষ্টির মধ্যে বাতাসে থাকবে অত্যধিক জলীয় বাষ্প। ফলে খোলা আকাশে রোদের মধ্যে কাজ করলে অথবা চলাফেরা করলে অত্যধিক ঘাম দেখা দিতে পারে। বাতাসে জলীয় বাষ্প বেড়ে গেলে বাতাস ভেজা বা আর্দ্র থাকে। এই আর্দ্র বাতাসে মানুষের দেহ ঘাম শুকাতে পারে না। ঘাম শরীরে লেগে থাকলে, সহজে না শুকালে প্রচণ্ড অস্বস্তির সৃষ্টি করে। ঘাম থেকে অস্বস্তির কারণ হলো ঘামের মধ্যে লবণের আধিক্য বেশি থাকে এবং শরীর থেকে যে পানিটা বের হয় তা অনেকটা ভারী হয়ে থাকে সেই পানিতে নানা ধরনের রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রিত থাকে।
এ দিকে বাংলাদেশে ঝড়ের ব্যাপারে কানাডা প্রবাসী আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে কালবৈশাখী ঝড় নেত্রকোনা জেলা থেকে সুনামগঞ্জ জেলা হয়ে হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজার জেলার ওপর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের দিকে চলে গেছে। এ ছাড়া গতকাল রাতে সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে ৩ থেকে ৫ বার কালবৈশাখী ঝড় বয়ে গেছে। একই সাথে তীব্র বজ্রপাত ও শিলাবৃষ্টিতে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে গেছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামীকাল রোববারও দেশের তাপমাত্রার একই রকম থাকলেও সোমবার তাপমাত্রা কমে যাওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে। ফলে সোমবার থেকে হয়তো কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে।
আবহায়াবিদরা এ সময়ে প্রকৃতির বৈরিতা সম্বন্ধে বলেন, এ সময়টায় বিরামহীনভাবে সূর্যকিরণ দিয়ে থাকে। আকাশে মেঘমালার অনুপস্থিতির কারণ সর্বোচ্চ সূর্যতাপ মাটিতে এবং মাটির কাছাকাছি পরিবেশে আপতিত হয়। ফলে প্রকৃতি গরম হয়ে যায়। বৈরী পরিবেশের এটাই কারণ। ফলে কাল বৈশাখী, বজ্রবৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি এবং মাঝে মাঝে প্রচণ্ড গতিতে টর্নেডো হয়ে থাকে।
গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবারও রাজশাহীতেই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৯.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানী ঢাকায় গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল সিলেটে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
Leave a Reply