অরবিন্দ কেজরিওয়াল জেলে। তাই আজ রোববার দিল্লির রামলীলা ময়দানে মেগা র্যালিতে ভাষণ দেবেন তার স্ত্রী সুনীতা কেজরিওয়াল। এই র্যালি হয়ে উঠবে বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’র প্রতিবাদ বিক্ষোভের র্যালি। এতে বিরোধীরা তাদের শক্তি প্রদর্শন করবেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি।
কংগ্রেস বলেছে, এই র্যালিতে যোগ দেবে ২৭ থেকে ২৮টি দল। উপস্থিত থাকবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীসহ বড় বড় সব নেতা। র্যালির আয়োজন করেছে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। র্যালির নাম দেয়া হয়েছে ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ (সেভ ডেমোক্রেসি)। বিরোধীদের এই র্যালিকে সামনে রেখে তাদের সমালোচনা করেছেন বিজেপির এমপি সুধাংশু ত্রিবেদি। তিনি বলেছেন, এটা হলো প্রকৃতপক্ষে পারিবারিক রাজনীতি রক্ষার ইভেন্ট।
তিনি বলেন, এটা ‘লোকতন্ত্র বাঁচাও’ র্যালি নয়। বাস্তবে এটা হলো ‘পরিবার বাঁচাও’ র্যালি।
এতে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট, সিবিআই, ইনকাম ট্যাক্স ডিপার্টমেন্টের মতো কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলোর অপব্যবহার করছে বিজেপি- এমন অভিযোগ তুলে কড়া বক্তব্য রাখবে বিরোধীরা। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল, ঝাড়খন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমান্ত সরেনকে গ্রেপ্তার এবং কংগ্রেসকে ১৮০০ কোটি রুপির আয়কর নোটিশ ইস্যুর পর এসব বিষয় কেন্দ্রীয় আলোচনায় এসেছে। এতে যেসব বিরোধী নেতা উপস্থিত থাকবেন তার মধ্যে আছেন কংগ্রেসের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে, দলের সিনিয়র নেতা রাহুল গান্ধী, সমাজবাদী পার্টির প্রেসিডেন্ট অখিলেশ যাদব, এনসিপির (শরৎচন্দ্র পাওয়ার) প্রধান শরৎ পাওয়ার, শিবসেনা (ইউবিটি) প্রধান উদ্ভব ঠাকরে, আরজেডির সিনিয়র নেতা ও বিহারের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী তেজশ্বী যাদব, ঝাড়খন্ডের মুখ্যতন্ত্রী চম্পাই সরেন, ন্যাশনাল কনফারেন্সের প্রেসিডেন্ট ফারুক আব্দুল্লাহ, পিডিপির প্রধান মেহবুবা মুফতি এবং ডিএমকের তিরুচি সিবা। লোকসভা নির্বাচনে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সঙ্গে থাকা নিয়ে একটা ঝাঁকুনি দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গে নিজেরা একাই নির্বাচন করবে। তা সত্ত্বেও তারা এই র্যালিতে প্রতিনিধি পাঠাবে। ধারণা করা হয় এতে যোগ দেবেন তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ওব্রায়েন, বাম দল সিপিএম থেকে সীতারাম ইয়েশ্চুরি। আম আদমি পার্টি থেকে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগওয়ান্ত মান যোগ দেবেন। তাদের সঙ্গে থাকবেন সুনীতা কেজরিওয়াল, হেমান্ত সরেনের স্ত্রী কল্পনা সরেন। মিসেস কেজরিওয়াল এবং মিসেস সরেন এরই মধ্যে গত শুক্রবার সাক্ষাৎ করে কৌশল নির্ধারণ করেছেন। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একসঙ্গে লড়াই চালিয়ে যাবেন। তবে কেজরিওয়ালকে গ্রেপ্তার করে বিজেপি নেতারা তাকে অভিযুক্ত করার পর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব মিসেস কেজরিওয়াল নেবেন কিনা তা পরিষ্কার নয়। এ বিষয়ে হয়তো তিনি র্যালিতে কথা বলতে পারেন।
কংগ্রেস বলেছে, এই র্যালি থেকে লোক কল্যাণ মার্গে শক্তিশালী বার্তা পৌঁছে দেয়া হবে। লোক কল্যাণ মার্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবন। সেই বার্তাটি হলো বিজেপি সরকারের সময় শেষ হয়ে গেছে। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ বলেন, এটা কোনো একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে র্যালি নয়। এ জন্য এর নাম দেয়া হয়েছে লোকতন্ত্র বাঁচাও। এটা কোনো একক দলের র্যালি নয়। এর সঙ্গে যুক্ত ২৭ থেকে ২৮টি দল। ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সব অংশ ‘জনবন্ধন’ এই র্যালিতে অংশ নেবেন।
উল্লেখ্য, কমপক্ষে ২০ হাজার মানুষের সমাগম হবে এমন একটি র্যালি করার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি পেয়েছে আম আদমি পার্টি। কিন্তু আম আদমি পার্টির পাঞ্জাব শাখার প্রেসিডেন্ট বুদ্ধরাম বলেছেন, এই র্যালিতে কমপক্ষে এক লাখ মানুষের সমাবেশ ঘটবে বলে তাদের টার্গেট।
বিজেপি দাবি করছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের গ্রেপ্তার এবং কংগ্রেসকে ট্যাক্স বিষয়ক নোটিশ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট এজেন্সিগুলো স্বাধীনভাবে। এক্ষেত্রে তারা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে।
Leave a Reply