1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:১০ অপরাহ্ন

ছাত্ররাজনীতি বন্ধসহ ৬ দাবি বুয়েট শিক্ষার্থীদের

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪

দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভে নেমেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার সকাল থেকে প্লাকার্ড হাতে নিয়ে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন।

এর আগে শুক্রবার দুপুর আড়াইটা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে মিছিল নিয়ে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিদফতরের পরিচালকের দফতরের সামনে অবস্থান নেন।

শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সুস্পষ্ট বিধিমালা লঙ্ঘন করে বুয়েটের ২১ ব্যাচের পুরোকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাব্বি মধ্যরাতে রাজনৈতিক সমাগম ঘটিয়েছেন। তারা রাব্বির স্থায়ী বহিষ্কার দাবি করে রাব্বির সাথে বুয়েটের যে সকল শিক্ষার্থী এই সমাগমে জড়িত তাদেরও বিভিন্ন মেয়াদে হল এবং টার্ম থেকে বহিষ্কার দাবি জানিয়েছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করার ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিদফতরের পরিচালক (ডিএসডব্লিও) অধ্যাপক মিজানুর রহমানের পদত্যাগ দাবি জানিয়েছেন তারা। শুক্রবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে এসব দাবি উত্থাপন করেন। পরে রাত ৮টায় তারা জানান, ভিসি অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদারের মৌখিক আশ্বাসে তারা আন্দোলন স্থগিত করেছেন।

বুয়েটের ছাত্রকল্যাণ পরিদফতরের (ডিএসডব্লিও) পরিচালক অধ্যাপক মিজানুর রহমানের পদত্যাগ এবং শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বির স্থায়ী অ্যাকাডেমিক বহিষ্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা আজ সকালে বুয়েট ক্যাফেটেরিয়া ও বুয়েট শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। দুপুর ২টার মধ্যে দাবি মেনে নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আল্টিমেটাম দিয়েছেন।

একইসাথে ছাত্রলীগের জনসমাগম করার পেছনে ইমতিয়াজ রাহিম রাব্বি ছাড়াও জড়িত ছিলেন এমন আরো কয়েক শিক্ষার্থীর নাম প্রকাশ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

এ তালিকায় আছেন এ. এস. এম. আনাস ফেরদৌস, মোহাম্মদ হাসিন আরমান নিহাল, অনিরুদ্ধ মজুমদার, জাহিরুল ইসলাম ইমন ও সায়েম মাহমুদ সাজেদিন রিফাত।

এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় শিক্ষার্থীরা বুয়েট শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে তাদের দাবি তুলে ধরেন। তারা বলেন, যে সকল শিক্ষার্থী এর সাথে জড়িত তাদের একাংশের নাম-পরিচয় আমরা ছবি ও ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চিহ্নিত করেছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভঙ্গের দায়ে এবং ক্যাম্পাসে রাজনীতি করার চেষ্টায় তাদের সবাইকে স্থায়ীভাবে অ্যাকাডেমিক এবং হল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষার্থীরা বলেন, তারা ডিএসডব্লিও অধ্যাপক মিজানুর রহমান দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগেরও দাবি জানিয়েছেন।

শিক্ষার্থীরা শুক্রবার জানান, বহিরাগত রাজনৈতিক ব্যক্তি যারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না, তারা কেন আর কিভাবে প্রবেশ করার অনুমতি পেল এই ব্যাপারে সুস্পষ্ট সদুত্তর এবং জবাবদিহিতা বুয়েট প্রশাসনের কাছ থেকে আসতে হবে। আন্দোলনরত বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোনো রকম হয়রানিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যাবে না- এই ব্যাপারে লিখিত প্রতিশ্রুতি দিতে হবে।

এ সময় সংবাদকর্মীদের সামনে এক শিক্ষার্থী কথা বলেন। তবে তিনি তার পরিচয় প্রকাশ করেননি।
তিনি বলেন, ভিসি স্যার আমাদের সাথে দেখা করে কিছু দাবি মেনে নেয়ার ব্যাপারে মৌখিকভাবে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু আমাদের দাবি ছিল সকল দাবি বাস্তবায়ন করা। আগামীকাল (শনিবার) সকাল ৮টায় বুয়েটের সকল প্রবেশদ্বারে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করব। আমাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আামাদের এই দাবি চলবে।

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের ডিএসডব্লিউ স্যার শিক্ষার্থীদের মাঝে এসে নিজের ব্যর্থতা স্বীকার করেননি, উল্টো শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে উগ্র আচরণ করেছেন। অভিভাবকতুল্য আমাদের এই শিক্ষকের আচরণে আমরা মর্মাহত। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ ডিএসডব্লিউ স্যারের আমরা অতিদ্রুত পদত্যাগ চাই।’

অভিযোগের বিষয়ে ইমতিয়াজ রাব্বি বলেন, সেদিন কেন্দ্রীয় নেতারা এসেছিল। তবে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচির জন্য আসেননি। আমি যেহেতু কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের পদে আছি, সেজন্য তারা (শিক্ষার্থীরা) আন্দোলন করছে। কিন্তু আমি বলতে চাই, আমি ক্যাম্পাসের বাইরে রাজনীতি করি। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। রাজনীতি করা আমার মৌলিক অধিকার।

এদিকে ছাত্রলীগ সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, এটা সাধারণ একটা বিষয়, এটাকে রাজনৈতি মোড়ক দেয়ার কোনো বিষয় না। বরং এটাকে যারা রাজনৈতিক মোড়ক দেয়ার চেষ্টা করছে, তারা কোন রাজনীতি করছে সেটা কিন্তু আমরা জানি। বিরাজনীতির কথা বলে আজকে সেখানে অন্ধকার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।

বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার বলেন, ডিসিপ্লিনারি বোর্ড ইমতিয়াজ রাব্বিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেবে, এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্রিয়া মেনে বহিষ্কার বা অন্য সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। রাত সাড়ে ১০টায় আমাদের গেট বন্ধ হয়ে যায়। কিন্ত যে সকল স্টাফ এরপরে গেট খুলেছিল, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ডিএসডব্লিও অধ্যাপক মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত কমিটি খতিয়ে দেখবে বলে জানান তিনি।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ফোরকান উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রশাসনের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ইমতিয়াজ রাব্বির আবাসিক সিট বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি অ্যাকাডেমিক সব কার্যক্রম চলমান থাকবে বলে জানানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com