গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের সাথে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবটি পর্যালোচনা করছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। তারা ইসরাইলের সাথে বন্দী বিনিময়ের সময় স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজনসহ সকল ফিলিস্তিনির মুক্তির দাবির ব্যাপারে এখনো অনড় রয়েছে বলে জানা গেছে। কাতার, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর এই প্রস্তাব তৈরী করেছে। ইসরাইলও প্রস্তাবটি মোটামুটিভাবে মেনে নিয়েছে। তবে এই প্রস্তাবে স্থায়ী যুদ্ধবিরতির কথা নেই।
হামাসের পলিটব্যুরোর প্রধান ইসমাইল হানিয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবটি নিয়ে গাজায় আরেক দল ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদের নেতা জিয়াদ নাখালেহর সাথে ফোনে কথা বলেছেন বলে হানিয়ার অফিস জানিয়েছে। তারা দুজন একমত হয়েছেন যে বন্দী বিনিময়ে অবশ্যই পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ বন্ধ, গাজা থেকে ইসরাইলি বাহিনী প্রত্যাহার, অবরোধের অবসান, গাজা উপত্যকা পুনর্গঠন এবং ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বন্দীদের মুক্তির বিষয়গুলো থাকতে হবে। তবে ইসরাইল এসব শর্ত গ্রহণ করবে বলে মনে হচ্ছে না।
এদিকে বৈরুতে হামাসের সিনিয়র নেতা ওসামা হামদান বলেছেন, তারা এখনো স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবির প্রতি অনড় রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তদেরসহ ইসরাইলের কারাগারগুলোতে আটক সকল ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দিতে হবে।
তিনি দুজনের নাম সুস্পষ্টভাবে জানান। তারা হলেন মারওয়ান বারগুইতি। তিনি জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি নেতা। সব পক্ষের কাছেই তিনি গ্রহণযোগ্য। ২০০২ সালে ইসরাইল তাকে গ্রেফতার করে। তাকে পাঁচবার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। তার বিরুদ্ধে তিনটি হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলোর একটিতে দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় ৫ ইসরাইলিকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে।
এছাড়া হামদান আরেক জনপ্রিয় ফিলিস্তিনি নেতা আহমদ সাদাতের মুক্তিও দাবি করেছেন। তিনি পপুলার ফ্রন্ট ফর দি লিবারেশন অব প্যালেস্টাইনের নেতা। ২০০১ সালে ইসরাইলি পর্যটনমন্ত্রী রেহাভাম জেভিকে হত্যার অভিযোগে তাকে ৩০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
হামদান বলেন, ‘আমরা সাময়িক অস্ত্রবিরতি করেছি। কিন্তু তাতে দেখা গেছে যে ইসরাইলিরা কখনো অস্ত্রবিরতির প্রতি শ্রদ্ধা দেখায় না। তারা সবসময় এগুলো লঙ্ঘন করে।
শুক্রবার মিসরের এক সিনিয়র নেতা বলেছেন, তারা যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে ছয় থেকে আট সপ্তাহের যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। হামাস তাদের হাতে আটক বয়স্ক, নারী ও শিশুকে মুক্তি দেবে। আর এর বিনিময়ে ইসরাইলি কারাগারে থাকা কয়েক শ’ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেবে ইসরাইল। এছাড়া গাজায় আরো বেশি সহায়তা প্রবেশ করার সুযোগ দেবে ইসরাইল।
গত ৭ অক্টোবর হামাস প্রায় ২৫০ জন ইসরাইলিকে বন্দী করে। নভেম্বরে শতাধিক বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে ইসরাইল মুক্তি দিয়েছে ২৪০ জনকে।
সূত্র : টাইমস অব ইসরাইল
Leave a Reply