গাজায় ইসরায়েলি যুদ্ধের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের ভোটারদের কাছে সমর্থন হারাচ্ছেন দ্বিতীয় মেয়াদের প্রত্যাশী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। আসছে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে নিয়ে দ্বিধায় ভুগছেন ভোটাররা বিশেষ করে তরুণ মার্কিনিরা। সাম্প্রতিক এক জরিপে বিষয়টি ওঠে এসেছে। খবর নিউইয়র্ক টাইমসের।
নিউইয়র্ক টাইমস/সিয়েনা কলেজের এক জরিপে দেখা গেছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে পন্থায় গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন, তাতে মার্কিন ভোটাররা তার ওপর ক্ষুব্ধ। বিশেষ করে বয়স্ক ভোটারদের চেয়ে তরুণ ভোটাররা গাজায় ইসরায়েলি হত্যাকাণ্ড ও তাতে মার্কিন প্রশাসনের প্রতিক্রিয়ায় অনেক বেশি সমালোচনামুখর।
মার্কিন জনসংখ্যার সবচেয়ে বেশি ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী ভোটারদের মধ্যে প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বলেছেন, বাইডেন যেভাবে গাজার সংঘাত ইস্যুতে কাজ তাতে তারা নাখোস। এ কারণে ওই বয়সী নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে আগামী নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন ৪৯ শতাংশ, বিপরিতে বাইডেনের পক্ষে সমর্থনের কথা জানিয়েছেন ৪৩ শতাংশ। গত জুলাইতে ওই তরুণ ভোটারদের মধ্যে বাইডেনের পক্ষে সমর্থন ছিল আরও ১০ পয়েন্ট বেশি।
সামগ্রিকভাবে জরিপে অংশ নেওয়া নিবন্ধিত ভোটারদের মধ্যে দেখা গেছে, আগামী বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেনের চেয়ে ট্রাম্পের পক্ষে জনসমর্থন দুই পয়েন্ট বেড়ে গেছে। ট্রাম্পের পক্ষে জনমত ৪৬ শতাংশ, সেখানে বাইডেনের পক্ষে রয়েছে ৪৪ শতাংশ।
গাজায় যুদ্ধের পর প্রেসিডেন্ট হিসেবে বাইডেনের প্রতি সমর্থন ২ পয়েন্ট নেমে গেছে। গত জুলাইতে বাইডেনের রেটিং ৩৯, সেখান থেকে দুই পয়েন্ট কমে ৩৭ পয়েন্টে নেমে এসেছে।
অনেকের মতে, গাজায় বেসামরিক হত্যাকাণ্ডের জের ধরে মুখে মুখে যুদ্ধবিরতির কথা বললেও বাইডেন প্রশাসন ইসরায়েলকে নির্বৃত্ত করতে পারছে না। উল্টো, মিত্র হিসেবে অস্ত্র ও অর্থ দিয়ে ইসরায়েলকে সহায়তা করছে। সেই বোমা-অস্ত্রই গাজায় নিরীহ মানুষ হত্যা ও ঘরবাড়ি ধ্বংসে ব্যবহার করছে ইসরায়েল।
এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন বাসিন্দারা আসলে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছেন, কাকে ভোট দেবেন! বাইডেন নাকি ট্রাম্প?
সান ফ্রান্সিসকোর ভোটার ২৭ বছর বয়সী সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার কলিন লোহনার বলেন, আমি এমন কাউকে ভোট দিতে চাই না যিনি আমার ব্যক্তিগত মূল্যবোধের সঙ্গে যান না, যেমন বাইডেন গাজার ক্ষেত্রে আমাকে হতাশ করেছেন।
তবে কাকে ভোট দেবেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বাইডেনকে ভোট দেব নাকি দেব না, এই সিদ্ধান্ত সত্যিই কঠিন। কারণ আমি যদি বাইডেনকে ভোট না দিই, তাহলে ট্রাম্পের জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এবং আমি সেটিও সত্যিই চাই না।
গাজায় যুদ্ধ বন্ধের ডাক উঠেছে বিশ্বজুড়েই। যুক্তরাষ্ট্রেও বিভিন্ন সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে বিক্ষোভ-মিছিল করছেন দেশটির বাসিন্দারা।
গাজায় নির্বিচার ইসরায়েলি হামলা চলছে গত ৭ অক্টোবর থেকে। হামাস যোদ্ধাদের হামলার প্রতিশোধ নিয়ে গাজায় গত ৮৫ দিন ধরে অব্যাহত ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত প্রাণহানি ছাড়িয়েছে ২১ হাজার ৫০০। আহত হয়েছে আরও ৫৫ হাজার ফিলিস্তিনি। হতাহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
Leave a Reply