1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৭ পূর্বাহ্ন

আমেরিকার ভিসানীতি দুরভিসন্ধিমূলক

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। সাম্প্রতিক রাজনীতি, জাতীয় ও বহিরাগত বিষয়সহ নির্বাচনী ভাবনা নিয়ে সোমবার সকালে তার সরকারি বাসভবন ন্যাম ভবনে আমাদের সময়ের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় কথা বলেন দেশের প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ।

শুরুতেই জানতে চাওয়া হয় আমেরিকার ভিসানীতি বা নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে। এ প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমি এর আগেও এ বিষয়ে কথা বলেছি, এখনো বলছি। বাস্তবতা হচ্ছেÑ আমাদের দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায়ই শুরু হয়নি এখনো। অথচ নির্বাচন

বাধাগ্রস্ত করার জন্য তারা (আমেরিকা) ভিসানীতি প্রয়োগ করেছে। জানি না কী প্রক্রিয়ায় করা হয়েছে। আমার কাছে মনে হয়েছে দুরভিসন্ধিমূলক। তারা আসলে নির্বাচন অনুষ্ঠান নয়, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার জন্যই এটা করেছে। ফলে তারা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক এটা চায় বলে মনে হয় না। তাই নানা ধরনের বিষয় সামনে নিয়ে আসছে।’

ওয়ার্কার্স পার্টির প্রধান বলেন, ‘নির্বাচন একটা দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ভিসানীতি সব দেশেরই আছে। আমার দেশের যেমন আছে, ইংল্যান্ডের আছে, কানাডার আছে। এ ভিসানীতি তাদের (আমেরিকার) নিজস্ব ব্যাপার। সেটাকে আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ে আমাদের নির্বাচন নিয়ে কথা বলবে তা তো হয় না। তাদেরও তো নির্বাচন আছে। তাদের নির্বাচন নিয়ে তো আমরা কথা বলছি না। তাদের নির্বাচন নিয়ে এখনো মেলা প্রশ্ন আছে, যা নিয়ে কোর্টে মামলা পর্যন্ত হয়েছে। কিন্তু তাদের নির্বাচন নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলছি না; অথচ তারা আমাদের নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তার অর্থ এই যে, ভিসানীতি দিয়ে তারা আমাদের ভয় দেখাতে চাচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছেÑ আমরা এ দেশের মানুষ ভয় পাওয়ার লোক না। আমরা যুদ্ধের সময় সপ্তম নৌবহরকে ভয় পাইনি, ভিসানীতিকে ভয় পাব কেন?’

এই ভিসানীতির কারণে দেশে অর্থনৈতিক প্রভাব সম্পর্কে এক প্রশ্নের জবাবে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমি তা মনে করি না। কারণ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা হলে ব্যাপার ছিল। কিন্তু এটা তো ব্যক্তিগত পর্যায়ের নিষেধাজ্ঞা।’ ভিসানীতির ইস্যুতে অনেক নাম ভেসে বেড়াচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। আপনার নামও দেখা যাচ্ছে। আপনি এই ব্যাপারে কী বলবেন? জবাবে মেনন বলেন, ‘তা তো হতেই পারে। তবে কেউ তো জানে না।’ তার মানে আপনাকে জানানো হয়নি? জবাবে তিনি বলেন, ‘তারা তো বলছেÑ মে মাসেই তারা তালিকা দিয়ে দিয়েছে। কিন্তু এমন কোনো তথ্য আমি পাইনি। আমার ভিসা না দিলে কী আসে যায়। আমেরিকায় না গেলে আমার কী আসে যাবে! আমেরিকায় আমার কোনো সম্পদ নেই।’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিকল্পনার বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা নির্বাচনের পরিকল্পনা করেছি। আমরা প্রার্থীর বিষয় নিয়ে ভাবছি। আমরা জোটগতভাবেই নির্বাচন করব এটা আমার সিদ্ধান্ত।’ কী প্রক্রিয়ায় জোট হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা নির্ভর করবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ওপরে।’ তবে তিনি জানান, আগামী নির্বাচনে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ১০ জনের জন্য মনোনয়ন চাওয়া হবে।

বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলে পরিকল্পনা কী আর না নিলে কী হবে জানতে চাইলে মেনন বলেন, ‘বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিলেও নির্বাচন হবে, না নিলেও হবে।’ বিএনপি ছাড়া কী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন তো জনগণের ভোটে হয়। আমি নির্বাচনে অংশ না নিলে কী নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না?’

এ মুহূর্তে রাজনৈতিক অঙ্গনে বেশ কিছু দল দুই রাজনৈতিক মেরুতে অংশ নিয়েছে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে একদিকে, বিএনপির নেতৃত্বে আরেক দিকে। আবার স্বল্পসংখ্যক রাজনৈতিক দল মধ্যপন্থিও আছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে কী হতে যাচ্ছে সামনেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘খুব বেশি কিছু হবে বলে আমার মনে হয় না। ভাদ্র মাসের আবহাওয়ার মতো কিছু হতে পারে। যেমনÑ কোথাও রৌদ্র কোথাও বৃষ্টি বা কিছু তাপ-উত্তাপ ছড়াবে। কিন্তু নির্বাচন হবে।’

বিভিন্ন মহলে আলোচনা হচ্ছে যে, নির্বাচন না হয়ে অন্যকিছু হতে পারেÑ এ প্রসঙ্গে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘অন্যকিছু হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আমি দেখি না। কী হয়Ñ সেনা অভ্যুত্থান বা কোনো ফর্মুলা? কিন্তু এমন কিছু হওয়ার কোনো ইন্ডিকেটর দেখি না। আন্তর্জাতিক চাপ বা বিভিন্ন দলের আন্দোলনের বিষয় আছে।’ তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক চাপে আমার দেশের সরকার পতন হবে না। এটা কী হয় কখনো?’

বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বলছে দেশে দুর্নীতি বাড়ছে, বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এমন বক্তব্য আপনিও দিয়েছেন। আসলে কেন এমনটি হচ্ছে? জবাবে মেনন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে এগুলো সব সময়েই হয়।’ এ বিষয়ে জোট শরিক হিসাবে সরকারকে কোনো সাজেশন দিয়েছেন কিনাÑ এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা বলেছিÑ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য সিন্ডিকেট দায়ী।’ তিনি বলেন, ‘এই সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হয়। সরকার দাম বেঁধে দিল আর সিন্ডিকেট ভেঙে গেল ব্যাপারটা তা না। এই সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’ সিন্ডিকেট ধরতে না পারার জন্য তিনি রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব বলে মনে করেন।

১৪ দলের অবস্থা আগের মতো আছে কিনা বা সেই স্পিরিট আছে কিনা জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আগের চেয়ে চর্চা কমে গেছে। কিন্তু প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। ক্রাইসিস যখন হয়, তখন জোটের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ক্রাইসিস না থাকলে প্রয়োজনীয়তা কমে যায়।’ ১৪ দল আবার আপনাদের গুরুত্ব দিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রশ্নের উত্তরটা এভাবে না দিয়ে এভাবে বলা যায় যে, সমন্বয়হীনতা আছে। তবে এখন এসব আলোচনায় আমরা যেতে চাই না। কারণ সামনে নির্বাচন।’

তা হলে ১৪ দলে আছেন কেন? জবাবে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, ‘আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের জন্য লড়াই করে যাচ্ছি। এই লড়াইয়ে অর্জন আমরা কিছুটা হলেও করতে পেরেছি। এই জোটে না থাকলে পাল্টা যে শক্তিটা আসবে, তারা অতিদক্ষিণপন্থি। দেশের ভেতরে বিএনপি-জামায়াতের অবস্থা আমরা জানি। সেই ইতিহাস থেকে তারা এখনো পিছু হটেনি। জিয়াউর রহমানের আমলে ফিরে যাওয়ার পথ তারা তৈরি করতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা তা হতে দেব না। ফলে জোটের প্রাসঙ্গিকতা আছে।’

সম্প্রতি ভারতে জি-২০ সামিট অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন। আপনার দৃষ্টিতে এই দুই সফরের সাফল্য কী? জবাবে মেনন বলেন, ‘জি-২০তে বাংলাদেশ আমন্ত্রিত ছিল। সেখানে যা দেখলাম এতে আমি তো মনে করি বাংলাদেশ ভালো করেছে। জাতিসংঘেও তাই। দেশের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো নিয়ে কথা হয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com