1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০২ পূর্বাহ্ন

মেয়ের লাশ দেখেও অস্বীকার করেছিলেন মা, বাঁচিয়েছিলেন হত্যাকারীদের!

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

‘সম্পত্তির লোভে’ শিশু ঐশীকে (৬) হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দী করে পুকুরে ফেলে দেয় আপন মামা ও খালু। সন্তানের হত্যার বিষয়টি জেনেও ভাই ও বোন জামাইকে বাঁচাতে সাবেক স্বামী ও শ্বশুরের নামে ঐশীর মা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ ছয় মাস পর ডিএনএ টেস্টে বেরিয়ে আসে শিশু ঐশী হত্যার মূল রহস্য। এ ঘটনায় আজ সোমবার পুলিশ শিশু ঐশীর মামা ও খালুকে আটক করে জেল হাজতে পাঠায়।

থানা সূত্রে জানা যায়, প্রায় ৮ বছর আগে নরসিংদী সদরের পূর্ব ব্রাক্ষন্দীর কাঠাল বাগান এলাকার মন্টু বিশ্বাসের ছেলে সেন্টু বিশ্বাসের সঙ্গে গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার মোক্তারপুর ইউনিয়নের ধনপুর গ্রামের মৃত দূর্গাচরণ বিশ্বাসের মেয়ে রিমা রানীর বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে ঐশী নামে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। এক বছর পর সেন্টুর সঙ্গে রিমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। এরপর রিমা তার মেয়ে ঐশীকে নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে আসেন এবং অন্যত্র বিয়ে করে সংসার শুরু করেন।

রিমার নিঃসন্তান ফুফু অঞ্জলী রানী ঐশীর ভবিষ্যৎ চিন্তা করে তার সমস্ত সম্পত্তি লিখে দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। এতে ঐশীর মামা বিজয় চরণ বিশ্বাস বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এতে কাজ না হলে গত ২২ মার্চ সকালে বিজয় নিজ ঘরে গলা টিপে ঐশীকে হত্যা করেন। পরে লাশ গুম করতে বিজয় তার অপন বোন জামাই ও ঐশীর খালু অসীত চরণ মিস্ত্রির সহযোগীতায় বস্তাবন্দী করে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় করে পার্শ্ববর্তী জামালপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুরে ফেলে দেন। বিষয়টি জেনেও ভাই এবং বোন জামাইকে বাঁচাতে রিমা নিজে বাদী হয়ে ঐশীর বাবা ও দাদার নামে গত ২৩ মার্চ গাজীপুরের বিজ্ঞ আদালতে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

গত ২৫ মার্চ মেন্দিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন পুকুরে একটি অজ্ঞাত লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেয়। পরে পুলিশ ক্ষতবিক্ষত একটি শিশুর লাশ উদ্ধার করে। পরে পুলিশ লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ঐশীর মা, বাবা, দাদা, মামা, খালু ও নানীকে থানায় ডেকে আনে। এক বছর বয়সে ঐশী তার মায়ের সঙ্গে নানার বাড়ি চলে যাওয়ায় দীর্ঘদিন না দেখার কারণে তার বাবা ও দাদা লাশ দেখেও সনাক্ত করতে পারেনি। কিন্তু ঐশীর মা লাশ দেখে চিনতে পারলেও তার মেয়ের নয় বলে জানান।

এরপর দিন ২৬ মার্চ পুলিশ বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে কালীগঞ্জ থানায় একটি ‘ক্লু-লেস’ হত্যা মামলা দায়ের করে এবং আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করে। অধিকতর তদন্ত ও ময়নাতদন্তে পুলিশ নিশ্চিত হয় লাশটি শিশু ঐশীর এবং তাকে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু তার মা, মামা ও খালু বারবার অস্বীকার করায় বিপাকে পড়ে পুলিশ।

পরে কৌশলে পুলিশ ঐশীর মায়ের ডিএনএ সংগ্রহ করে ঐশীর ডিএনএ’র সঙ্গে মিলিয়ে দেখার জন্য ল্যাবে পাঠায়। দীর্ঘ ছয় মাস পর ডিএনএ মিলে গেলে জানা যায় লাশটি ঐশীরই ছিল। ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পেয়ে পুলিশ আবারও ঐশীর মা, মামা, খালু ও নানীকে থানায় ডেকে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন ঐশীর মামা বিজয় ‘সম্পত্তির লোভে ঐশীকে হত্যার পর লাশ গুম’ করার ঘটনা বর্ণনা করেন।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফায়েজুর রহমান বলেন, ‘এ ঘটনায় নিহত শিশু ঐশীর মামা বিজয় ও খালু অসীতকে আটক করে আজ সোমবার দুপুরে গাজীপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com