চিত্রনায়ক সিয়াম আহমেদ। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে তার নতুন ছবি ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’। এর মধ্যে গিয়েছিলেন কলকাতা। প্রথমবার কলকাতার ছবিতে অভিনয় করতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের এ অভিনেতা। এসব বিষয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ফয়সাল আহমেদ
বেশ ব্যস্ত সময় যাচ্ছে?
ব্যস্ত থাকতে চাই। ভালো কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকলে ক্লান্তি আসে না। সত্যি বলতে আমি কাজপাগল মানুষ। কাজের মধ্যেই আমার যত আনন্দ। শুটিং, প্রচার, হলে যাওয়া, চিত্রনাট্য পড়া, পরিবারকে সময় দেওয়া এসবের মধ্যে সময় চলে যাচ্ছে।
কলকাতা গিয়েছিলেন?
জ্বি। সেখানকার একটি ছবিতে কাজ করছি। মার্চের মাঝামাঝি ছবিটির শুটিং শুরু হবে। শুটিংয়ের আগে চিত্রনাট্য পড়া, ছবির লুক সেট ও চরিত্রের মহড়ার জন্য কলকাতায় গিয়েছিলাম। লুক সেট করে চার-পাঁচ দিন সহশিল্পীর সঙ্গে মহড়া করছি।
নতুন পরিবেশ ও নতুন সহশিল্পী। অভিজ্ঞতা কেমন?
ভালো। কলকাতায় আমার প্রথম কাজ শুরু হবে। তার আগে পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে খাপখাইয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি। কলকাতার তরুণরা কী ধরনের গান শুনতে পছন্দ করেন, কী ধরনের সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন; সেসব বিষয় নিজের মধ্যে আনার চেষ্টা করেছি। চিত্রনাট্যের মহড়া করেছি। প্রতিদিন পরিচালক সেই মহড়া পর্যবেক্ষণ করেছেন। সেখান থেকে কিছু মতামতও দিয়েছেন। যাতে চূড়ান্তভাবে ক্যামেরার সামনে কাজটি সহজ হয় আমার জন্য। ছবিতে আমার বিপরীতে আছেন আয়ুশী তালুকদার। আরও আছেন প্রসেনজিৎ, পূজা চ্যাটার্জি। আপাতত ছবির নাম প্রতিপক্ষ। নাম পরিবর্তন হতে পারে।
দেশের বাইরে থাকলেও ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ ছবির প্রচার করেছেন অনলাইনে এটি আমার দায়িত্ব। দেশে থাকলে হলে হলে গিয়ে ছবিটি দেখতাম। আরও বেশি প্রচার চালাতাম। সবাইকে জানানো জরুরি যে, একটি ভালো গল্পের, ভালো মানের ছবি মুক্তি পেয়েছে।
প্রসেনজিৎও আপনার ছবির প্রচার করেছেন- তিনি অসাধারণ। মাটির মানুষ। দেখলেই আপন আপন লাগে। তিনিও ছবিটি দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে ছবিটি দেখবেন?
গেল বছর আমার অভিনীত শান ছবিটিও কিন্তু আমি সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সঙ্গে দেখেছিলাম। সঙ্গে আমার স্ত্রী ছিলেন। আর ‘অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন’ তো শিশুদের জন্যই। তাই টাকা দিয়ে ছবি দেখার সামর্থ্য যাদের নেই, তাদের জন্যই এ ব্যবস্থা। যাতে তারাও ছবিটি দেখতে পারেন। ছবির গল্পেও একজন সুবিধাবঞ্চিত শিশু আছে। যে চরিত্রটি এরই মধ্যে সবার ভালো লেগেছে।
করোনার সময় করা ছবিটি এখন দর্শক দেখছেন। এটি ভালো লাগার বিষয়?
অবশ্যই। ছবিটি যখন করেছি, তখন পুরো বিশ্ব করোনায় জর্জরিত। এর শুটিং করতে গিয়ে আমাদের টিমের দুজনের প্রণয় হয়েছিল। ছবিটি মুক্তির আগে তাদের ফুল ফুটেছে। কিছু দিন আগে তারা বিয়ে করেছেন। এ সিনেমার শুটিংয়ের সময় আমিও বাবা ছিলাম না, পরীমনিও মা হয়নি। এখন দুজনের ঘরে দুটি ফুটফুটে ছেলেসন্তান। দারুণ একটা ব্যাপার। ছবিটির বেশিরভাগ শুটিং হয়েছে সুন্দরবন, সুন্দরবনের ধার ঘেঁষে নদীতে। শুটিংয়ের সময় করোনা মহামারীর মধ্যে পড়ে শুটিং ইউনিট। ফলে শুটিংয়ের দিনগুলো সহজ ছিল না। অনেক সীমাবদ্ধতার মধ্যে থেকে সুন্দরবনের কাদাপানিতে, লঞ্চে, নদীতে শুটিং করতে হয়েছে।
কোনো স্মরণীয় ঘটনা?
এ ছবিতে প্রায় ১৫ জন শিশু অভিনয় করেছে। প্রতিদিন সকালে তাদের জন্য আলাদা খাবার দেওয়া হতো। কিন্তু করোনার কারণে প্রশাসন থেকে আলটিমেটাম দেওয়া হলো। তখন আমরা মাঝ নদীতে। বলা হলো লঞ্চ ডাঙায় ভিড়তে পারবে না। লঞ্চ থেকে কেউ নামতেও পারবে না, বাইরে থেকে কেউ উঠতে পারবে না। এভাবে তিন দিন পার হয়। তত দিনে লঞ্চে খাবার শেষ। এখন বোঝেন, শিশুদের নিয়ে কী অবস্থার মুখোমুখি হয়েছিলাম আমরা তখন?
Leave a Reply