জাতীয় সংগীত ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হলো ঢাবি ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলন। শনিবার (০৩ ডিসেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩টায় অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে সম্মেলন শুরু হয়। বিকেল ৩ টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় দেরি করে আসায় নির্ধারিত সময়ের আধাঘণ্টা পর জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে সম্মেলন উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনের পর সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন শুরুর আগেই কেন্দ্রীয়, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন হলের নেতাকর্মীরা সম্মেলনস্থলে আসা শুরু করেন। মঞ্চের সামনে থেকে নিয়ে বটতলা, কলাভবনের গেট ও আশেপাশের এলাকায় নেতাকর্মীরা অবস্থান করে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সম্মেলন ঘিরে গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আবেদন ফরম বিতরণ ও জমাদান পর্ব শেষ হয়েছে। পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীরা লবিং-তদবিরে দৌঁড়াচ্ছেন। বিভিন্ন উপায়ে নিজেদের জাহির করছেন। ব্যানার-পোস্টারে নিজেদের ছবি সাঁটিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনসহ দৃশ্যমান স্থানে টানিয়ে নিজেদের প্রার্থীতা জানান দিচ্ছেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিশ্ববিদ্যালয়ের পদপ্রত্যাশী নেতাকর্মীদের ব্যনার ফেস্টুন সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দিয়েছেন।
নেতৃত্বে আসতে পদ প্রত্যাশীদের মেলাতে হবে নানা অঙ্ক। আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, সামনে জাতীয় নির্বাচন। সেদিকে লক্ষ্য রেখে ছাত্রলীগের কমিটিতে ত্যাগী এবং বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থী ও দেশের মানুষের জন্য কাজ করেছেন, শিক্ষার্থীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা, আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়তা, সাংগঠনিক দক্ষতা ও অবদান প্রভৃতি বিষয় মাথায় রেখে নতুন নেতৃত্ব বাছাই করা হবে।
ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে আঞ্চলিকতার বিষয়টিও লক্ষণীয়। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুমোদন দেয়া হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ইউনিটের নেতৃত্ব। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে যারা নেতৃত্বে এসেছেন তাদের অধিকাংশরাই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতৃত্বে থাকা নেতাদের অঞ্চলের বলে অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগের বিগত কয়েকটি কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পরিচয় বিবেচনা করে দেখা যায়, কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে একাধিকবার নেতৃত্ব বাছাই করা হয়েছে।
দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ছাত্রলীগের নেতৃত্বে বরাবরই পরিবারের রাজনৈতিক মতাদর্শ নেতৃত্বে আসতে গুরুত্বপূর্ণ মানদণ্ড হিসেবে কাজ করে। পরিবারের সদস্যদের কেউ আওয়ামী রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত থাকলে সেই নেতৃত্ব প্রত্যাশী দৌঁড়ে এগিয়ে থাকেন। এছাড়াও, পরিবারে মুক্তিযোদ্ধা থাকলেও সেটা গুরুত্ব পায়।
এছাড়াও নেতৃত্ব প্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির কিংবা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ থাকলে সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে বলে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীল সূত্র। শিক্ষার্থী মহলে জনপ্রিয় ও ক্লিন ইমেজের প্রার্থীদের হাতেই নেতৃত্ব দিতে চায় দলীয় হাইকমান্ড।
Leave a Reply