ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফার্মেসি অনুষদের তহবিল থেকে টাকা আত্মসাতের মামলায় অনুষদের অফিস সহকারী সাজ্জাদ হোসেন ও পিয়ন মো. সুজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। তবে যার স্বাক্ষরে টাকা উত্তোলন করা হয়, অনুষদের সেই সাবেক ডিন অধ্যাপক আবদুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দিয়েছে শাহবাগ থানা পুলিশ। এ বিষয়ে অধ্যাপকের দাবি, তার স্বাক্ষর জাল করা হয়েছে। এ কাজের সঙ্গে তিনি কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। যদিও গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে জানিয়েছেন, অধ্যাপক আবদুর রহমানের স্বাক্ষরটি জাল নয়। মূলত অনিয়মটি ধামাচাপা দিতে অভিযুক্তরা নানা তৎপরতা চলাচ্ছেন। এদিকে মামলাটি দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) স্থানান্তর করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি অনুষদ সূত্রে জানা গেছে, অনুষদে বিগত সময়ে হওয়া নানা অনিয়ম-দুর্নীতি
ধামাচাপা দিতে একটি মহল নানা অপতৎপরতা শুরু করেছে। ‘কেঁচো খুঁড়তে সাপ’ বেরিয়ে আসার ভয়ে তারা প্রভাশালীদের সহযোগিতায় মামলা উঠিয়ে নিতে এবং গ্রেপ্তার অফিস সহকারী ও পিয়নকে ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে করে দুর্নীতির বিষয়টি চাপা পড়ে যায়। আর সেই মহলটি যদি এতে সফল হয়, পরে এ ধরনের দুর্নীতি আরও বেড়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকেই।
এমন পরিস্থিতিতে গত ১৫ এপ্রিল দুদক চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দেওয়া হয়, যা ১১ মে গৃহীত হয়। অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে ডিনের দায়িত্ব শেষ হওয়ার তিন দিন পর অধ্যাপক আবদুর রহমান আগের তারিখে অনুষদের তহবিল থেকে ১৩ লাখ টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছেন। এ ছাড়া তিনি করোনার সময় হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির নামে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে অনুদান বাবদ পাওয়া প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, অধ্যাপক আবদুর রহমান বিগত পাঁচ বছরে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ আর্থিক অনিয়ম করেছেন। পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা ব্যাংক হিসাব স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি এনবিআরের মাধ্যমে তদন্ত করলেই সব বের হয়ে আসবে।
গ্রেপ্তারকৃত দুই কর্মচারী অনুষদের সাবেক দুই ডিনের ঘনিষ্ঠ। এদের মধ্যে পিয়ন সুজন সাবেক এক ডিনের স্ত্রীর ভাগ্নে, যার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে। তারা আদালতে সাক্ষ দিলে অনেকেই ফেঁসে যেতে পারেন, এ জন্য বর্তমান ডিনকে বিয়ষটি সুরাহা করে মামলা প্রত্যাহারে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে অভিযোগপত্রে।
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আবদুর রহমান আমাদের সময়কে বলেন, ‘সামনে সিনেট নির্বাচন। আমি নির্বাচনে একজন প্রার্থী। এ ক্ষেত্রে প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে কেউ এ অভিযোগ করছেন। তা ছাড়া আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ সেগুলো নিয়ে দুদক ইতোমধ্যে তদন্ত করেছে। সেই তদন্তে এর কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে, তারা চিহ্নিত হয়েছেন এবং কারাগারে আছেন। মূলত অসত্য তথ্য দিয়ে আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এসব করা হচ্ছে।’
Leave a Reply