ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের আলোচনা সভায় খন্দকার মোশতাক আহমেদের প্রতি ‘শ্রদ্ধা’ জানিয়ে সমালোচনার মুখে ক্ষমা চেয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে নিজের অবস্থান তুলে ধরেন তিনি।
অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহ বলেন, ‘গতকালের আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদানকালে আমি যদি অজ্ঞতাবশত কোনো শব্দ বা বাক্য উচ্চারণ করে থাকি, তা নিতান্তই আমার অনিচ্ছাকৃত ভুল। এজন্য আমি ব্যক্তিগতভাবে দুঃখ প্রকাশ ও ক্ষমা প্রার্থনা করছি।’
‘একই সঙ্গে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির মধ্যে যেন কোনো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সচেতন থাকার জন্য মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী সবার প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি’, বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার টিএসসি মিলনায়তনে আলোচনা সভার আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অনুষ্ঠানে অধ্যাপক রহমত উল্লাহ তার বক্তব্যে মুজিবনগর সরকারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে খন্দকার মোশতাক আহমদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ তাৎক্ষণিকভাবে ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান এবং তা এক্সপাঞ্জ করার দাবি জানান। পরে উপাচার্য আখতারুজ্জামান ওই বক্তব্যের অংশটুকু এক্সপাঞ্জ করেন।
একাত্তরে মুজিবনগর সরকার গঠনের সময় পররাষ্ট্রমন্ত্রী পদে ছিলেন খন্দকার মোশতাক। তবে ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডে তার জড়িত থাকার কথা বলে আসছেন আওয়ামী লীগের নেতারা।
অনুষ্ঠানের পর অধ্যাপক রহমত উল্লাহ দাবি করেন, তিনি বক্তব্যে মুজিবনগর সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তদের নাম উল্লেখ করেছিলেন, খন্দকার মোশতাককে শ্রদ্ধা জানাননি। বক্তব্যের রেকর্ডে সত্যতা প্রমাণিত হলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চাইবেন বলেও সে সময় জানিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের এই নেতা।
এদিকে, অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বক্তব্যকে ‘ধৃষ্টতাপূর্ণ’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহার ও আনুষ্ঠানিক ক্ষমা প্রার্থনার দাবিতে সোমবার উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ নামে একটি সংগঠন অধ্যাপক মো. রহমত উল্লাহকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কারের দাবিতে সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়।
Leave a Reply