বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির (বিএফডিসি) নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও কার্যকরী পরিষদের সদস্য চুন্নুর পদ বাতিল হতে পারে। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে তাদের বিজয়ী ঘোষণা করা হলেও সেই ফলাফল বাতিলে আপিল বিভাগের কাছে আবেদন করেছেন আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী চিত্রনায়িকা নিপুণ। আপিল বিভাগের কাছে এ বিষয়ে আজ বুধবার দিকনির্দেশনা এসেছে।
অভিনেত্রী নিপুণের দাবি, জায়েদ খান ভোট কিনেছেন। এ ছাড়া বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক, প্রধান নির্বাচন কমিশনার সবাই কাজ করেছেন জায়েদের পক্ষে। নির্বাচনের দিন থেকেই এ অভিযোগ করে আসছিলেন তিনি।
এরপর ফল প্রকাশের পর ১৩ ভোটে হেরে যাওয়া নিপুণ একটি ভিডিও জনসম্মুখে প্রকাশ করেন। সেই ভিডিওতে জায়েদ ও তার প্যানেলের কার্যকরী সদস্য পদে বিজয়ী চুন্নুকে ভোটারদের টাকা দিতে দেখা গেছে বলে জোর দাবি জানান নিপুণ। এর পর থেকেই এ নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ।
এ বিষয়ে চিত্রনায়ক জায়েদ খান বলেন, আপিল বিভাগের পুনর্গণনা শেষে নিপুণ তার পরাজয় মেনে নিয়ে স্বাক্ষর করে গেছেন। নির্ধারিত সময়ের পরে এ আবেদন মন্ত্রণালয়ের যেতে পারে না। এটি সম্পূর্ণ অবৈধ প্রক্রিয়ায় হয়েছে।
এদিকে জায়েদ ও চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহানের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন নিপুণ। অভিযোগ আমলে নিয়ে শিল্পী সমিতির নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান ও কার্যনির্বাহী সদস্য চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিলের দিকনির্দেশনাও চেয়েছেন সোহানুর রহমান। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর দেওয়া এক চিঠিতে এই দিকনির্দেশনা চেয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সমাজসেবা অধিদপ্তর জানিয়েছে, ১৯৬১ সালের সেচ্ছাসেবী সংস্থা নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ ১৯৬১-এ বলা আছে, এই প্রতিষ্ঠানের আওতায় নিবন্ধিত কোনো সংস্থা বা সংগঠনের নির্বাচন নিয়ে তদন্তে যদি অনিয়ম পাওয়া যায়, তাহলে কমিটি বাতিল করে প্রশাসক নিয়োগের ব্যবস্থা আছে। গঠনতন্ত্রে যদি সমাধান পাওয়া না যায়, সে ক্ষেত্রে আইনের শরণাপন্ন হওয়া যাবে।
এদিকে সমিতির গঠনতন্ত্রে শপথ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা না থাকায় নিজের দায়িত্ব নিজেই বুঝে নিয়েছেন জায়েদ খান। এক সংবাদ সম্মেলনে সম্প্রতি এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমাদের গঠনতন্ত্রের কোথাও শপথের কথা উল্লেখ নেই। আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায়ী কমিটি নতুন কমিটিকে ক্ষমতা বুঝিয়ে দেবে। যেহেতু আমি নিজেই সেক্রেটারি, তাই আমারটা আমি বুঝে নিয়েছি।’
এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন বলেন, ‘যেহেতু সাধারণ সম্পাদক পদটি নিয়ে এখনো বিতর্ক চলছে, সেহেতু ক্ষমতা বুঝিয়ে দিতে একটু সময় লাগবে।’
তবে আজ ঢাকা জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. রকনুল হক সাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্র অনুসারে নির্বাচনের আপিল বোর্ড চূড়ান্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত। অর্থাৎ এখন আপিল বোর্ডের সিদ্ধান্তের ওপরেই নির্ভর করছে জায়েদ ও চুন্নুর পদ।
Leave a Reply