কনডেমড সেলে অনেকটা চুপচাপ রয়েছেন টেকনাফ থানার বরখাস্ত সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ এবং পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত আলী। মেজর (অব) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত এ দুই আসামিকে রাখা হয়েছে কক্সবাজার জেলা কারাগারের কনডেম সেলে। এদিকে রায় ঘোষণার দিন সোমবার সন্ধ্যায় কারাগার থেকে বের হয়ে গেছেন খালাসপ্রাপ্ত ৭ পুলিশ সদস্য। ওইদিনই তারা নিজ নিজ পরিবারে ফিরে গেছেন। সোমবার মামলার রায়ের পরই ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত প্রদীপ ও লিয়াকতের জন্য কনডেম সেল বরাদ্দ করা হয় বলে জানান কক্সবাজার জেলা কারাগারের সুপার নেছার আলম।
তিনি বলেন, প্রদীপ ও লিয়াকত স্বাভাবিক আচরণ করছেন। তাদের খাওয়া দাওয়াও স্বাভাবিক। কনডেম সেলে রাখার আগে তাদের চিকিৎসক দিয়ে পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসক শারীরিক সুস্থতার ব্যাপারে মত দেওয়ার পরই তাদের কনডেম সেলে নেওয়া হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকালে তারা নাস্তা ও দুপুরের খাবার ঠিকমতো খেয়েছেন। তারা অনেকটা চুপচাপ আছেন।
বেকসুর খালাস পাওয়া আসামিদের মুক্তি প্রসঙ্গে নেছার আলম বলেন, আদালতের রায়েই উল্লেখ আছে রায় ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে তাদের মুক্তি দিতে হবে। ওই সময় ফাঁসির আসামি ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সঙ্গে ছিল। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা সবাইকে জেলখানায় নিয়ে আসি। পরে সন্ধ্যার দিকে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়। মুক্তি পাওয়া ৭ পুলিশ সদস্য হলেন এএসআই লিটন মিয়া, কনস্টেবল সাফানুল করিম, কামাল হোসেন, আবদুল্লাহ আল মামুন, এপিবিএনের এসআই শাহজাহান, কনস্টেবল রাজীব হোসেন ও আবদুল্লাহ। এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে মারিশবুনিয়ার ৩ বাসিন্দা এবং ৩ পুলিশ সদস্যকে পৃথকভাবে কারাগারে রাখা হয়েছে বলে জানান জেল সুপার।
পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহা নিহত হওয়ার ১৮ মাস পর গত সোমবার এ মামলার রায় দেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। জনাকীর্ণ আদালতে মামলার রায়ে প্রধান আসামি পুলিশ পরিদর্শক লিয়াকত ও টেকনাফ থানার বরখাস্ত ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে মৃত্যুদণ্ড, ৬ জনকে যাবজ্জীবন ও ৭ আসামিকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়।
মুক্ত হওয়া ৭ জনের আইনজীবী মমতাজ আহমেদ বলেন, আমার মক্কেলরা সোমবারই জেলা কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে নিজ নিজ বাড়ি ফিরে গেছেন।
বাঁশখালী উপজেলার বাহারছড়া ইউপি সদস্য উমসান গণি বলেন, আদালতের রায়ে মামলা থেকে মুক্তি পেয়ে সোমবার রাতে গ্রামের বাড়ি ইলশায় ফিরেছেন পুলিশের কনস্টেবল রাজীব হোসেন। তিনি এখন ভালো আছেন। রাজীব নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় আমরা খুব খুশি।
২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা। এতে তার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস কক্সবাজার আদালতে হত্যা মামলা করেন। গত সোমবার মামলায় রায় হয়।
Leave a Reply