নতুন নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তৃতীয় দল হিসেবে সংলাপে বসতে যাচ্ছে ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দল- বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ)। আজ রবিবার বিকাল ৪টায় বঙ্গভবনে এই সংলাপ শুরু হওয়ার কথা। সংলাপে অংশ নেওয়া আগের দুই দল জাতীয় পার্টি ও জাসদের মতো ন্যাপও ইসি পুনর্গঠনে আইন করার প্রস্তাব দেবে।

আজ সন্ধ্যা ৬টায় সংলাপের জন্য বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলকে (বাসদ) আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু দলটি সংলাপে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটে বাসদ ছাড়া আর কোনো দল এখনো আমন্ত্রণ পায়নি।

ন্যাপের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন আমাদের সময়কে জানান, সংলাপে তারা ইসি পুনর্গঠনে আইন প্রণয়নসহ নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেবেন। এদিকে ২৮ তারিখ বিকাল ৪টায় আমন্ত্রণ পেয়েছে ক্ষমতাসীন ১৪ দলীয় জোটের আরেক শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি। সংলাপে তারাও আইনের পক্ষে বলবেন বলে জানিয়েছেন দলটির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি আমাদের সময়কে বলেন, ‘সংলাপে আমরা নির্বাচন কমিশন আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাব দেব।’

সূচি অনুযায়ী, ২৭ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় তরিকত ফেডারেশনের সঙ্গে এবং সন্ধ্যা ৬টায় খেলাফত মজলিসের সঙ্গে সংলাপ হবে। ২৯ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) এবং ইসলামী ঐক্যজোটের সঙ্গে সন্ধ্যা ৬টায় সংলাপ হবে। শিগগিরই আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ নিবন্ধিত অন্য দলগুলোকে ডাকা হবে বলে জানা গেছে।

এর আগে ২০ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় প্রথম দল হিসেবে সংলাপে অংশগ্রহণ করে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দলের চেয়ারম্যান ও মহাসচিবসহ ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল সংলাপে অংশগ্রহণ করে। সংলাপে তারা নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনে আইন প্রণয়নের কথা বলেছে। দলটির নেতারা জানান, এ প্রস্তাবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আইন প্রণয়নের জন্য যথেষ্ট সময় হাতে নেই। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাপা বলেছে, সংসদে এ বিষয়ে বিল উত্থাপন করা হলে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে। সময় স্বল্পতার কারণে যদি সংসদে আইন প্রণয়ন সম্ভব না হয়, তা হলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে আইন বলবৎ করতে পারেন। পরবর্তী সংসদ অধিবেশনে তা বিল আকারে পাস করার জন্য জাপা সহযোগিতা করবে। যদি কোনো কারণে অধ্যাদেশ জারি সম্ভব না হয় এবং আগের মতো সার্চ কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে সার্চ কমিটিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য চার জনের নাম প্রস্তাব করেছে জাপা। ২২ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় সংলাপে অংশ নিয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল জাসদ। তারাও ইসি পুনর্গঠনে আইনের প্রস্তাব দিয়েছে।

নূরুল হুদা নেতৃত্বাধীন ইসির মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। তার আগেই নতুন ইসি নিয়োগ দিতে হবে। সংলাপের মাধ্যমে সার্চ কমিটি গঠন করে বর্তমান নির্বাচন কমিশন নিয়োগ দিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। এবারও তাই হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আগের নির্বাচনের আগে ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর বিএনপির সঙ্গে আলোচনার মধ্য দিয়ে সেই সংলাপ শুরু হয়েছিল। তা এক মাস ধরে ৩১টি দলের সঙ্গে চলে।

বঙ্গভবন সূত্র জানায়, এবার এক মাস ধরে এই সংলাপ নাও হতে পারে। করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে কম সময়ে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ করবেন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির এই আলোচনাকে ‘সংলাপ’ বলা হলেও বঙ্গভবনের ভাষা অনুযায়ী বলা হয়, ‘নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনের বিষয়ে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতবিনিময়’।