প্রাক-প্রাথমিকের অর্ধেক বই এখনো ছাপা বাকি। ফলে এবারের বই উৎসবের আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে খুদে শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর (ডিপিই) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতেই প্রাক-প্রাথমিকের বই বিতরণের এমন চিত্র দেখা গেছে। সূত্র আরো জানায়, পার্বত্য তিন জেলার নৃগোষ্ঠী ছাড়া দেশের কোথাও এখন পর্যন্ত শতভাগ বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক পৌঁছেনি। যদিও আর মাত্র ১০ দিন পরেই একযোগে সারা দেশে বই উৎসব অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এই অবস্থায় বই না পৌঁছানো গেলে বই উৎসবের আনন্দই ফিকে হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সূত্র আরো জানায়, যথাসময়ে পাঠ্যবই না পাওয়ার সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে রয়েছে প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা। আগামী শিক্ষাবর্ষে দেশের প্রাক- প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬৬ লাখ ৫ হাজার ৪৮০ টি বইয়ের চাহিদা থাকলেও এখন পর্যন্ত বই ছাপা হয়েছে মাত্র ৩৩ লাখ দুই হাজার ৭৪০ কপি। অর্থাৎ অর্ধেক বই এখনো ছাপা বাকি রয়েছে। দেশব্যাপী বই উৎসবের মাত্র দশ দিন বাকি থাকলেও গতকাল সোমবার পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলায় উপজেলায় মাত্র অর্ধেক প্রাক-প্রাথমিকের পাঠ্যবই পৌঁছেছে।
ডিপিইর বই বিতরণ শাখা থেকে জানা যায়, এ পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় প্রাথমিকের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর মোট চাহিদার দুই কোটি ৪৮ লাখ ৩৭ হাজার ৫০২টি বইয়ের মধ্যে ছাপা হয়েছে দুই কোটি ২১ লাখ ৬১ হাজার ৩৯২ কপি। এর মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছানো হয়েছে দুই কোটি ৭৩ হাজার ৮৮৫ কপি। শতকরা হিসেবে যা মোট চাহিদার ৮১ ভাগ।
অপর দিকে তৃতীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর মোট চাহিদার ৬ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার ৫২৮ কপি বইয়ের মধ্যে জেলা উপজেলায় বই পৌঁছানো হয়েছে ৬ কোটি ২৫ লাখ ৮ হাজার ৬৫৫ কপি। শতকরা হিসেবে যা ৮৮ ভাগ। অপর দিকে নৃগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য বই ছাপা এবং বই পৌঁছানো হয়েছে শতভাগ। সূত্র মতে তিন পাহাড়ি নৃগোষ্ঠীর শিশুদের জন্য মোট চাহিদা রয়েছে দুই লাখ ১৯ হাজার ৩৬৪ কপি বই। এই সব বই ইতোমধ্যে ছাপা শেষ হয়েছে এবং সব বই পাহাড়ি তিন জেলায় ইতোমধ্যে পৌঁছানোও হয়ে গেছে।
এ দিকে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবির) সহকারী বিতরণ নিয়ন্ত্রক মো: ওবাইদুল হক গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় নয়া দিগন্তকে জানান, বছরের এই সময়টাতে বই ছাপা হয় বেশি। আমাদের পুরো টিম বই ছাপার কাজ মনিটরিং করছে। আমরা নিজেরাও রাতে দিনে কাজ করছি। বিভিন্ন ছাপাখানায় পরিদর্শন করছি। প্রাক-প্রাথমিকের বইও আশা করছি যথাসময়ে শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে যাবে। তবে কিছু বই বাকি থাকলেও শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার আগেই তারা হাতে হাতে নতুন বই পেয়ে যাবে। আমরাও সেভাবেই বই ছাপার কাজে জোর দিয়েছি।
Leave a Reply