1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:১১ অপরাহ্ন

কোভিডের কারণে হৃদরোগ

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট, ২০২১

প্রাথমিকভাবে কোভিড ১৯-কে শ্বাসতন্ত্রের রোগ মনে করা হলেও অল্পদিনের মধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গেছে, এটি দেহের প্রতিটি অঙ্গই কমবেশি আক্রমণ করে থাকে। বিশেষ করে এটি হৃৎপিণ্ডের অনেক জটিলতা তৈরি করে। উহান থেকে শুরু করে উন্নত বিশ্বের গবেষণা বলছে, করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর এক-চতুর্থাংশ থেকে এক-তৃতীয়াংশই হৃৎপিণ্ডের ক্ষতির শিকার হয়। মূলত কোভিডের কারণে হতে পারে এলোমেলো হৃদস্পন্দন, হার্ট অ্যাটাক, হৃদপেশির প্রদাহ ও হৃৎপিণ্ডের বৈকল্যতা (হার্ট ফেইলিউর)। কোভিডে মৃত্যুর নেপথ্যে হৃৎপিণ্ডের এ ব্যাধিগুলোর বিরাট ভূমিকা রয়েছে।

অ্যারিদমিয়া বা এলোমেলো হৃদস্পন্দন : রোগীর মনে হতে পারে বুক ধড়ফড় করছে। কখনো হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়, কখনো কমে যায়। কখনো স্পন্দনের তাল-লয় হয়ে পড়ে এলোমেলো। এমনটি হতে পারে রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতার জন্য। ভাইরাস কিংবা ভাইরাসসৃষ্ট জটিলতা সরাসরি ধ্বংস ডেকে আনতে পারে হৃদপেশির। এতেও এমন এলোমেলো দশা নেমে আসতে পারে। এ ছাড়া অনেক করোনা রোগীর রক্তে পটাসিয়ামের মাত্রা কমে যায় আর এক কারণে হৃদস্পন্দনের গতির ছন্দপতন ঘটে। এই রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ওষুধও এর পেছনে দায়ী। এ ক্ষেত্রে হাইড্রক্সি-ক্লোরোকুইন কিংবা এজিথ্রোমাইসিনের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে।

হার্ট অ্যাটাক : যাদের আগে থেকে হার্ট অ্যাটাকের ইতিহাস রয়েছে, কোভিডে তাদের মৃত্যুঝুঁকি যাদের এমনটি হয়নি- তাদের চেয়ে বেশি। তবে এ কথাও সত্য, কোভিড আক্রান্তদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি অনেক বেশি। কোভিডে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তনালি আটকে যেতে পারে। ফলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক। এ ছাড়া কোভিডসৃষ্ট রাসায়নিক ঝড় হৃৎপিণ্ডের বিপত্তি ডেকে আনতে পারে। কোভিডের মধ্যে হার্ট অ্যাটাক পরিস্থিতি জটিল করে তুলতে পারে।

হৃদপেশির প্রদাহ : করোনা ভাইরাস হৃদকোষের প্রত্যক্ষ ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। অনেক ভাইরাস হৃদকোষের প্রদাহ করে থাকে। করোনা এ ক্ষেত্রে এক কাঠি সরেস। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া প্রায় এক-চতুর্থাংশ রোগীর এমনটি হওয়ার নজির মিলেছে। এমনকি মৃদু করোনা রোগী- যারা হাসপাতালে ভর্তি হননি, তাদেরও হৃদপেশি আক্রান্ত হওয়ার প্রমাণ মিলেছে গবেষণায়। ইকো কার্ডিওগ্রাফি করে অনেক সময় এটি ঠাওর করাও কঠিন হয়ে পড়ে। রক্ত পরীক্ষায় দেখা যায় হৃদপেশি ক্ষত হওয়ার আলামত।

হৃৎপিণ্ড বিকল : গবেষণা বলছে, কোভিডের কারণে শতকরা ২৩ ভাগ রোগীর হৃৎপি- বিকল হতে পারে। তা প্রকারান্তরে মৃত্যুঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় কয়েকগুণ। এ জন্য কোভিড আক্রান্ত রোগীদের হৃৎপিণ্ডের হালহকিকত যাচাই করা খুব জরুরি।

উপসর্গ : কিছু উপসর্গ হৃৎপিণ্ডের রোগ নির্দেশ করে। এসব উপসর্গ দেখা দিলে আরও সতর্ক হতে হবে। এগুলো হলো বুকে ব্যথা, প্যালপিটেশন বা বুক ধড়ফড় করা, পায়ে পানি আসা, চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে শ্বাসকষ্ট অনুভব হওয়া, ঘুমের মধ্যে দম বন্ধ হয়ে আসা, মাথা ঘোরানো, অতিরিক্ত দুর্বলতা, ঠোঁট-মুখ নীলাভ হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এসব উপসর্গ অন্য কারণেও হতে পারে। তবে এসব লক্ষণের যৌক্তিক কারণ নির্ণয় করা জরুরি।

করণীয় : করোনা আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ শারীরিক ও মানসিক বিশ্রামে থাকা। পর্যাপ্ত পানীয় গ্রহণ করে পানিশূন্যতা রোধ করা। উপরিল্লিখিত উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসককে অবহিত করা খুব জরুরি। নিয়মিত পালস অক্সিমিটারের সাহায্যে অক্সিজেনের মাত্রা দেখে নেওয়া। অক্সিজেনের মাত্রা ৯২-এর নিচে নেমে গেলে অক্সিজেন সাপোর্ট নেওয়া। অক্সিজেন ঘাটতি দেখা দিলে পটাসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা। ঝুঁকিপূর্ণ রোগীদের রক্ত জমাটবাঁধার প্রবণতা পরখ করা। প্রয়োজনে ইসিজি, ইকো কার্ডিওগ্রাফিসহ রক্তের আনুষঙ্গিক পরীক্ষা করা।

লেখক : ক্ল্যাসিফাইড মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সিএমএইচ, ঢাকা

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com