1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন

চেয়ারম্যানকে টাকা না দেওয়ায় মেলেনি উপহারের ঘর

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১ আগস্ট, ২০২১

খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় গৃহহীনদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার ঘর নির্মাণ প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঘর পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে এলাকার হতদরিদ্রদের কাছ থেকে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হয়েছে। বরাদ্দের তালিকায় নাম থাকলেও টাকা দিতে না পারায় ঘর পাননি কেউ। এ ছাড়া ঘর নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে রডের বদলে জিআই তার ও নিম্নমানের উপকরণ। উপজেলার গোমতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন লিটনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।

তাদের অভিযোগ, ঘরের বরাদ্দ পেতে চেয়ারম্যানকে টাকা দিতে হয়েছে। টাকা দেওয়ার পর ঘর নির্মোণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ৪৫ কেজি করে রড বরাদ্দ থাকলেও দেওয়া হয়েছে গ্যালভানাইজ আয়রন (জিআই) তার। এ ছাড়া ঘর নির্মাণে অন্যান্য নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে।

গৃহহীনদের ঘর বরাদ্দের তালিকায় নাম থাকার পরও চেয়ারম্যানের দাবি অনুযায়ী ৫০ হাজার টাকা দিতে না পারায় ঘর পায়নি দিনমজুর আবু তাহের। বিষয়টি নিয়ে চলতি বছরের ৫ এপ্রিল জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী। আবু তাহের বলেন,‘ঘর বরাদ্দের তালিকায় আমার নাম ছিল এক নম্বরে। চেয়ারম্যান আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিতে বলেন। আমি টাকা দিতে না পারায় আমার নামের বরাদ্দকৃত ঘর ইসমাইল হোসেন নামে এক প্রভাবশালীকে বরাদ্দ দিয়েছেন চেয়ারম্যান।’

ঘরের কাজ শেষ না করেই তা বুঝিয়ে দেওয়া হয় উপকারভোগীদের।

গোমতি ইউনিয়নের শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা মালেকা বেগম বলেন, ‘ঘরের বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আমার কাছে গোমতি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন লিটন ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি ধার করে চেয়ারম্যানকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছি। এরপর আমাকে ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়। রমজানের আগে থেকে ঘরের কাজ বন্ধ। এখনো ফ্লোর করা হয়নি, টয়লেট বসানো হয়নি।’

শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা ফুল মিয়া ও সেলিনা বেগম দম্পতিও ঘর পেতে চেয়ারম্যানকে ২৫ হাজার টাকা দেন। তারা বলেন, ‘ঘরের বরাদ্দ পাওয়ার জন্য চেয়ারম্যান আমাদের কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা দাবি করে। পরে গরু বিক্রি করে আমরা চেয়ারম্যানকে ২৫ হাজার টাকা দিয়েছে। অথচ আমার ঘরটা দেখেন। কোথাও লোহার রড ব্যবহার করেনি। কেবলমাত্র জিআই তার দিয়েই ঘর নির্মাণ করেছে। সাত বস্তা বালুর সাথে এক বস্তা সিমেন্ট দিয়েছে। মিস্ত্রীরা বালু বেশি দিয়েছে।’

একই গ্রামের বাসিন্দা আনু মিয়া বলেন, ‘আমি ঘরের জন্য চেয়ারম্যানকে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি। ঘরের কাজ এখনো শেষ হয়নি। ঘরে কোনো লোহার রড ব্যবহার করা হয়নি।’ একই অভিযোগ গোমতি বাজার এলাকার বাসিন্দা আজমেহেরের। তিনি বলেন, ‘ঘরের কাজ এখনো শেষ হয়নি, অথচ পিলার ভেঙে পড়ে গেছে। ঘরে ভেতর কোনো রড দেয়নি। ঘরের কাজ বন্ধ রয়েছে প্রায় ৩ মাস ধরে।’

স্থানীয়দের অভিযোগের বিষয়ে গোমতি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক হোসেন লিটন জানান, ‘আমি টাকা নেইনি। আর টাকা নিতে যাব কেন। ঘরের কাজ ভালো করার জন্য যা যা করার দরকার করেছি।’ রডের বদলে জিআই তার ব্যবহার প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘তার দিয়ে ছাউনির কাঠ বাঁধা হবে। পিলারে কোনো রড বরাদ্দ না থাকায় জিআই তার দিয়েছি। রড বরাদ্দ নাই, ঘর শুধু ইটের উপর থাকবে।’

এ ব্যাপারে মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও ) মো. হেদায়েত উল্ল্যাহ জানান, ‘আমি এখানে তিনদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। ইতোমধ্যে বেশকিছু অনিয়মের অভিযোগের ব্যাপারে শুনেছি। এখনো কিছু ঘরের কাজ চলমান আছে। আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেব।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো.কামরুল হাসান মুঠোফোনে জানান, ‘প্রধানমন্ত্রীর ঘরগুলো যে মানে নির্মিত হওয়ার কথা সেই মানে নির্মিত হতে হবে। এখানে কোনো ধরনের অনিয়ম, দুর্নীতি বরদাস্ত করা হবে না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com