ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার খেলা মানে বাংলাদেশে ভিন্ন এক উন্মাদনা। তবে সেটা যদি কোনো শিরোপার লড়াই হয়, তবে তা তো কোনো কথাই নেই। চায়ের কাপে তর্কের লড়াই থেকে শুরু করে পাড়ায় পাড়ায় হৈ হুল্লোড় তো থাকছেই। ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের খেলা নিয়ে এ দেশে কান্নাকাটি কিংবা মারামারি সবই তো হচ্ছে রীতিমতোই। তবে দীর্ঘ ২৮ বছর পর কোপার শিরোপা ঘরে তোলা আর্জেন্টিনার কাছ থেকে দারুণ এক স্বীকৃতি পাচ্ছে বাংলাদেশের আর্জেন্টাইন ভক্তরা।
আর্জেন্টিনার কোপা জয়ের পর বাংলাদেশি সমর্থকদের স্মরণ করতে ভুলেননি দেশটির সাবেক অধিনায়ক হুয়ান পাবলো সোরিন। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা দলের নেতৃত্ব দেওয়া এই ফুটবলারের চোখে ভাসছে ১৯৯৫ সালের একটি স্মৃতি। কাতারের মাটিতে যুব বিশ্বকাপের ফাইনালে ব্রাজিলকে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল আর্জেন্টিনা। ওইদিন সোরিন প্রথমবারের মতো জানতে পারেন শুধু আর্জেন্টিনাই নয়। তার থেকেও ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরে ছোট একটি দেশে আলবিসেলেস্তাদের সমর্থন জানাতে বসে থাকে লাখ লাখ মানুষ।
ইনস্টাগ্রামে সোরিন বাংলাদেশি সমর্থকদের কিছু ভিডিও শেয়ার করে সেখানে লিখেছেন, ‘আজ মনে পড়ছে ২৬ বছর আগের এক রাতের কথা। ১৯৯৫ সালে ব্রাজিলের সঙ্গে ম্যাচ খেলছিলাম কাতারে। সে সময় এখনকার মতো চাইলেই পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যেত না। ব্রাজিলের সঙ্গে ম্যাচের সময় গ্যালারিতে আর্জেন্টিনার পতাকার ছড়াছড়ি। রূপালি রঙা পতাকায় দূর থেকে খেয়াল করেছিলাম একটি লেখা, বাংলাদেশ। একস্বরে লাফিয়ে, নেচে আমাদের সমর্থন জানিয়ে যাচ্ছিল ওরা। দম আটকে আসা মুহূর্তে ওই দৃশ্য আমাদের দিয়েছিল বুক ভরে নিশ্বাস নেওয়ার সুযোগ।’
‘আজ আমি তাদের স্মরণ করতে চাই, আর এই মুহূর্তটা উৎসর্গ করতে চাই। পৃথিবীর অন্যপ্রান্তে বাংলাদেশ, সেখানকার সমর্থকেরা কোপা আমেরিকা জয়ের পর রাস্তায় নেমে এসেছে, আনন্দ উল্লাসে মেতেছে। ধন্যবাদ ডিয়েগো ম্যারাদোনাকে, ধন্যবাদ লিও মেসিসহ বাকিদের, যারা আমাদের ‘৭৮ ও ‘৮৬ তে শিরোপা জিততে সাহায্য করেছেন। আমাদের দেশের সমর্থকেরা ছড়িয়ে আছেন বিশ্বজুড়ে। ২৮ বছর পর আর্জেন্টিনা তাদের প্রাপ্যটা বুঝে পেল, চ্যাম্পিয়ন হলো। শনিবার (কোপা আমেরিকা ফাইনালের দিন) যেমন নীল-সাদায় ছেয়ে গেল, কাতারের সেই দিনটাতে ওদের সঙ্গে আমরা একইভাবে উদযাপন করেছিলাম।’
Leave a Reply