হাসতে হাসতে ক্রীড়া সাংবাদিক প্রশ্ন করলেন, ‘নেইমার তো আর্জেন্টিনাকে ফাইনালে চেয়েছেন। এ ব্যাপারে কী বলবেন?’ মেসি অবাক না হয়ে বলেছেন, ‘নেইমার ভালো ছেলে। ও জানে এই ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ফাইনাল মানে কী। আমরা সবাই এই ফাইনাল খেলতে চাই।’ মেসি ও নেইমার শুধু নন, ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার ম্যাচ মানেই ফুটবলবিশ্ব যেন দুভাগ হয়ে যায়। শুধু বাংলাদেশেই নয়। বিশ্বের সব প্রান্তেও। ১৪ বছর পর কোপা আমেরিকার ফাইনালে আরও একবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশ মুখোমুখি হচ্ছে। রিও ডি জেনিরোর ঐতিহাসিক মারাকানা স্টেডিয়ামে আগামীকাল ভোরে কাঙ্ক্ষিত সেই ফাইনাল। প্রশ্ন বেশ সাধারণ- ব্রাজিল না আর্জেন্টিনা, নেইমার না মেসি? খেলা ফাইনাল!
পুরো বিশ্বের মেসিভক্তরা আরেকবার ব্যর্থতা দেখতে চায় না। ১৯৯৩ সালের পর আর্জেন্টিনা কোনো শিরোপা জেতেনি বড় মঞ্চে। ২০১৯ সালে ব্রাজিল সর্বশেষ কোপা আমেরিকা জিতলেও সে আসরে ছিলেন না নেইমার। ফলে দুজনের জন্যই শিরোপা জয় হবে নতুন অভিজ্ঞতা। মেসি সম্ভবত ২০২২ বিশ্বকাপ খেলে অবসর নেবেন। বিশ্বকাপ জেতাটা বেশ কঠিন। তবে
এই আসরের ফাইনাল জিতলে সমর্থকরা খুশি হবে। ছয়বারের এই ব্যালন ডি’অরজয়ী ক্লাব ক্যারিয়ারে সব জিতেছেন। এমনকি ৭ নম্বর ব্যালন ডি’অরও জিতবেন। কিন্তু দেশের হয়ে একটি শিরোপার তিনি যোগ্য দাবিদার। ৩৪ বছর বয়সী কিংবদন্তি এই ফুটবলার জাতীয় দলের ক্যারিয়ারে ৫ নম্বর ফাইনাল খেলতে যাচ্ছেন। চারটি কোপা আমেরিকা ফাইনাল ও একটি বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলেছেন। প্রতিবারই হতাশ হতে হয়েছে তাকে। এবার হতেই হবে প্রিয় মেসি, এটিই বার্তা আর্জেনাইন সমর্থকদের। নেইমার বিশ্বকাপের পরও কোপা খেলবেন। তার সুযোগ থাকলেও মেসির নেই। গোল্ডেন বুট তো পাবেন। তবে শিরোপাটিও তার চাই।
এই আসর শুরুর পর থেকেই মেসি ও নেইমারকে নিয়ে কথা উঠেছিল। সবাই মনেপ্রাণে চাইছিলেন ব্রাজিলের সঙ্গে যেন আর্জেন্টিনার দেখা হয়। এই সময়ে মেসি, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পর ক্রেজ নেইমারের। ফলে এ দুজনের লড়াই হলে কেমন দেখাবে, সেটি জানার ইচ্ছা সবার। তবে চলতি কোপা আমেরিকা দেখে বেশিরভাগ সমর্থক মনে করছে, আগে গোল যে করবে তার ফাইনাল জেতার সুযোগ বেশি। আর কায়মনবাক্যে প্রার্থনা- খেলা টাইব্রেকে যেন না যায়!
আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের ডিফেন্সিভ লাইন ও গোলকিপার দুই সাইডেই ভালো। লড়াইটা হবে মাঝ মাঠের। মেসি এই আসরে অবিশ্বাস্য। চারটি গোলের পাশাপাশি রয়েছে পাঁচ অ্যাসিস্ট। নেইমার দুই গোল করলেও গোল করিয়েছেন। ফলে ফাইনালে নেইমার ও মেসির সফলতার ওপর অনেক কিছুই নির্ভর করছে।
নেইমারের ব্রাজিল এই আসরে ছয় ম্যাচে দুটি গোল হজম করেছে। অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার থিয়াগো সিলভা, মারকুইনহস, মিলিটাও সিফট করে খেলেন। আবার ডিফেন্সিভ মিডে রয়েছেন কাসেমিরো ও ফ্রেড। রাইট ব্যাক ডানিলো ও লেফট ব্যাক রেনেন লোডি দুর্দান্ত। আর্জেন্টিনার ডিফেন্স ও গোলকিপার মার্টিনেজ অবিশ্বাস্য। আর মেসি একাই আক্রমণভাগের জন্য যথেষ্ট। তিনি গোল করেন ও করান। একাই টানছেন আর্জেন্টিনাকে। আরেকবার ১৯৮৬ বিশ্বকাপের ম্যারাডোনা হতে হবে মেসিকে। যিনি একা বিশ্বকাপ জিতিয়েছিলেন। মেসি কি পারবেন?
Leave a Reply