নভেম্বর, ২০১৯। টেস্ট পরীক্ষা শেষ। প্রস্তুতি নিচ্ছি ফাইনাল পরীক্ষার। মাথায় নানা চিন্তা, টেনশন। এরইমধ্যে চীনে নতুন এক ভাইরাসের সংক্রমণের খবর। ক্রমশ তা ছড়িয়ে পড়ে দেশে দেশে। বাংলাদেশও শেষ পর্যন্ত মুক্ত থাকেনি। ২১শে মার্চ, ২০২০, আমাদের প্রবেশপত্র দেওয়ার কথা ছিল।
এই ঘোষণাতেই অবশ্য আমাদের মুক্তি মিলে না। কুমিল্লা থেকে চলে আসলাম ঢাকায়। প্রস্তুতি নিতে শুরু করি ভর্তি পরীক্ষার। জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। আমাদের আগামী দিনগুলো কেমন যাবে তাতো আসলে এ ভর্তি পরীক্ষাতেই অনেকটা নির্ধারিত হয়ে যায়। ভর্তি হলাম কোচিং সেন্টারে। তবে সেখানেও নতুন এক ব্যবস্থা। করোনার কারণে সশরীরে ক্লাস সম্ভব নয়। ক্লাস চলে অনলাইনে। আমাদের অবশ্য শুধু ক্লাস আর পরীক্ষার প্রস্তুতিতে মন দিলেই চলছে না। খেয়াল রাখতে হয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের দিকে। কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা কবে হবে? কোন বিশ্ববিদ্যালয় কবে ফরম ছাড়বে। একের পর এক মিটিং। অনলাইনে ফরম পূরণ। কিন্তু বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে আলাদা আলাদা পরীক্ষা। ফরমও পূরণ করতে হচ্ছে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের। এজন্য অনেকক্ষেত্রেই বের হতে হয় বাসা থেকে।
বারবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির তারিখ ঘোষণা করা হচ্ছে। আবার পিছিয়ে দেয়া হচ্ছে তারিখ। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার তারিখ দুই বার মোটামুটি ঠিক হয়ে যায়। কীভাবে হলে পৌঁছাবো তা নিয়ে যখন চিন্তা শুরু করি তখনই জানা যায়, পরীক্ষা স্থগিত। আসলে পুরো পৃথিবী, বিশ্বইতো অনিশ্চিত। কিন্তু আর কতদিন এই অনিশ্চয়তা। দিনের পর দিন কী এভাবে প্রস্তুতি নেয়াও সম্ভব?
উইলিয়াম ব্ল্যাক এর স্কুলবালকের মতো আমরাও এখন করোনার খাঁচায় বন্দি। জানি না, কবে মুক্তি মিলবে এর থেকে। কবে বসতে পারবো পরীক্ষার টেবিলে। কবে কাটবে এই অনিশ্চয়তা? কবে খুশি মনে মাকে বলতে পারবো, আর টেনশন করো না।
লেখক: বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিচ্ছু।
Leave a Reply