চীন থেকে ফল আমদানিতে সরকার ব্যবসায়ীদের নিরুৎসাহিত করছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সাথে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, করোনাভাইরাস দ্বারা চীন আক্রান্ত হওয়ার আগেই চীনের সরকারি এক মাস ছুটি এবং ছুটির মধ্যবর্তী সময় ভাইরাস সনাক্ত এ সকল কারণে চীন হতে ফল আমদানি বন্ধ আছে। চীনের করোনাভাইরাস পরিস্থিতির উন্নতি না হলে রোজার সময় ফলের সরবরাহে প্রভাব পড়বে কিনা-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে কৃষিমন্ত্রী বলেন, রমজান মাসে চীন ব্যতীত অন্য সকল দেশ হতে ফল আমদানি করা হবে; রমজান মাসে ফলের কোনো সমস্যা হবে না বাজারে। আর রোজার সময় আমরা মূলত খেজুর খেয়ে থাকি। সেই সময় অনেক গরম থাকবে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, গরম পড়লে করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাব কমে যায়। এই মুহূর্তে আমদানিকারকদের চীন থেকে ফল আমদানিতে ডিসকারেজ (নিরুৎসাহিত) করব আমরা। যদিও ফলের মাধ্যমে এ ভাইরাস আসে না।
চীন হতে কোন ফল এই মুহুর্তে আমদানি করা হচ্ছে না। করোনাভাইরাস দ্বারা চীন আক্রান্ত হওয়ার আগেই চীনের সরকারি একমাস ছুটি এবং ছুটির মধ্যবর্তী সময় ভাইরাস সনাক্ত এসকল কারনে চীন হতে ফল আমদানি বন্ধ আছে। এবং সামনে রমজান মাসে চীন ব্যতীত অন্য সকল দেশ হতে ফল আমদানি করা হবে; রমজান মাসে ফলের কোন সমস্যা হবে না বাজারে। এই মুহুর্তে ক্ষেত্রে চীন থেকে ফল আমদানির জন্য আমদানিকারকগণদের নিরুৎসাহিত করা হবে।
ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এক সময়কার বাড়ীর আঙ্গিনায় উৎপাদিত ফসল এখন মাঠে উৎপন্ন হচ্ছে। তেমনি রাজশাহীর উন্নত জাতের আম এখন প্রায় সকল জেলাতেই উৎপন্ন হচ্ছে। দেশে এখন অর্থকরি অপ্রচলিত বিদেশি ফসল/ফল উৎপন্ন হচ্ছে। বিদেশি ড্রাগন ফল উৎপাদন যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে আর কয়েক বছর পরে চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানীতে যেতে হবে। যে সকল ফল/ফসল আমাদের দেশে উৎপন্ন হয় সেগুলো আমদানি কমানো এবং দেশে উৎপন্ন ফল/ফসল রফতানির পথ বের করতে হবে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে নতুন নতুন জাতের আম, মাল্টা, কমলা, ড্রাগন ফলসহ বিদেশি জাতের ফলের আবাদ হচ্ছে। এক সময় সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত বিদেশি ফলের ওপর নির্ভরতা ছিল। এখন এই সময়ে দেশীয় ফলের সরবরাহ বাড়ছে। তাজা ও রাসায়নিকমুক্ত ফলে আগ্রহ বাড়ছে মানুষের। দেশে গ্রীষ্ম ও বর্ষা ছিল ফল উৎপাদনের ভরা মৌসুম। সেপ্টেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত পাঁচ মাসে ফলের উৎপাদন বা সরবরাহ ছিল কম। তাই এই সময়টাতে মানুষকে বাধ্য হয়ে বিদেশি ফল কিনতে হয়। তবে সময় পাল্টেছে। বিদেশি ফল বেচাকেনার ভরা মৌসুমেও এখন পাওয়া যাচ্ছে দেশি ফল। আপনারা আমদানিকারক আবার আপনারাই রপ্তানীকারক হতে পারেন। কৃষিকে লাভজনক করতে আপনাদের সহযোগিতা গুরুত্বপূণ-যোগ করেন মন্ত্রী।
বাংলাদেশ ফ্রেশ ফ্রুটস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশের মানুষের ফল খাওয়ার প্রবণতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে এবং উৎপাদনও বৃদ্ধি পেয়েছে। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ফল দেশের মোট চাহিদার মাত্র ৩৫ ভাগ পূরণ করে, যা দুই বছর আগেও ছিল ২৮ ভাগ। বাকিটা আমদানির মাধ্যমে পূরণ হয়। এজন্য আমদানিকৃত ফলের চাহিদা বেশি। দেশে সারা বছর বিদেশি ফলের চাহিদা রয়েছে। অপ-আমদানি বন্ধের দাবি জানান তারা। যে সকল ফল আমাদের দেশে যথেষ্ট পরিমাণে উৎপন্ন হয় সেগুলো আমদানি বন্ধ হলে দেশের মানুষ উপকৃত হবে। ফল রফতানির জন্য প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেজিং শিল্প প্রতিষ্ঠান জরুরি। ফলে কোনো ফরমালিন মেশানো হয় না এবং ফল রফতানির জন্য সরকারের সহযোগিতা চান।
কৃষি সচিব মো: নাসিরুজ্জামান ফল রফতানির জন্য সকল ধরনের সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেন। আম রফতানির জন্য ভিএইচটি/লেজার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট স্থাপন। বিশ্বব্যাপি সবচেয়ে বেশি রফতানি হয় কলা; আমাদের রফতানি উপযোগি জাত উদ্ভাবন করে এর উৎপাদন বৃদ্ধি করে রফতানি করতে হবে। টিস্যু কালচার এর মাধ্যমে উন্নত কলার জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে।
Leave a Reply