প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের দুপুরের খাবার দিতে ‘প্রাইমারি স্কুল মিল’ নামের প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে উপস্থাপিত প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৭ হাজার ২০০ কোটি টাকার বেশি। কিন্তু এটি অনুমোদন না দিয়ে ভিন্ন আঙ্গিকে প্রকল্প নেওয়ার জন্য ফেরত দেওয়া হয়েছে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুষ্টির যোগান বাড়াতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ প্রকল্পের আওতায় দেশের ৪৯২টি উপজেলা ও সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার ২১টি শিক্ষা থানার শিক্ষার্থীদের দুপুরে স্কুলে গরম খাবার দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
গরম খাবার বলতে মূলত ডাল আর স্থানীয় সবজি দিয়ে খিচুড়ি রান্না করে শিক্ষার্থীদের খাওয়ানো।
২০২১ সালের জুন থেকে ২০২৬ সালের জুন পর্যন্ত পাঁচ বছর মেয়াদী এ প্রকল্পের জন্য শুরুতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছিল এক হাজার ৯৬১ কোটি টাকা।
এর মধ্যে খিচুড়ি রান্না ও পরিবেশনের প্রশিক্ষণ নিতে ১ হাজার সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীর বিদেশ সফরের একটি প্রস্তাব ছিল, যা নিয়ে গতবছর ব্যাপক সমালোচনা হয়।
শেষ পর্যন্ত ১ হাজার লোকের বিদেশ সফরের ওই অংশটি বাদ দিয়ে ব্যয়ের পরিমাণ এক হাজার ৬৭১ কোটি টাকা কমিয়ে ১৭ হাজার ২৯০ কোটি টাকা করা হয়। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকেএ প্রকল্পের পুরো অর্থ যোগানোর কথা ছিল।
একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা বলেছেন, খিচুরি রান্না করতে গেলে অনেক সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়া এটির ব্যবস্থাপনা অনেক জটিলও হবে। তাই খিচুরি রান্নার পরিবর্তে দুধ, কলা বা অন্য কোনো ব্যবস্থা করা যায় কিনা ভেবে দেখতে হবে।
সেই সঙ্গে প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সরকারি অর্থের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায় কিনা তারও প্রচেষ্টা চালানোর কথা বলেছেন তিনি।
বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই এত বড় প্রকল্প হাতে নেওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে পরিকল্পনা মন্ত্রী এমএ মান্নান জানান, চলমান প্রকল্পের অংশ হওয়ায় এবং মানবিক কারণে সম্ভাব্যতা সমীক্ষা ছাড়াই হাতে নেওয়া হয়েছে। তবে নতুন সমীক্ষা করা হবে।
এছাড়া বৈঠকে ৫ হাজার ২৩৯ কোটি ৬২ লাখ টাকার ৯টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
Leave a Reply