গত বছর মার্চে দেশে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। আরো সহজ করে বললে ১৪ মাসের বেশি সময় ধরে তালা ঝুলছে স্কুল-কলেজে-বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে দেশের প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। আবার করোনার বাস্তবতায় দফায় দফায় ছুটি বাড়াতেও হচ্ছে। সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ২৯ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
কিন্তু এরপরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। প্রথমত, সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী ৩০ মে পর্যন্ত মানুষের চলাচল ও কার্যক্রমে বিধিনিষেধ ঘোষণা করা হয়েছে। সুতরাং আপাতদৃষ্টে বোঝাই যাচ্ছে ২৯ মের পরদিনই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সুযোগ নেই।
এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি আবার বাড়বে কি না, বাড়লে কত দিন বাড়বে, নাকি একটি সময় ঘোষণা করে সীমিত পরিসরে খোলার ঘোষণা হতে পারে, এসব বিষয় জানা যাবে আগামীকাল বুধবার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি ও শিক্ষাসংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি এদিন সংবাদ সম্মেলনে এসব বিষয় নিয়ে কথা বলবেন বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে। দুপুর ১২টায় ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠিত হবে সংবাদ সম্মেলনটি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, এ বিষয়ে সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে যে নির্দেশনা দেয়া হবে, মূলত সে অনুযায়ীই ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে ২৩ মে থেকে স্কুল ও কলেজে এবং ২৪ মে থেকে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দেয়া হলেও করোনার বাস্তবতায় ছুটি বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার। তবে বাস্তবতা হলো দীর্ঘ ছুটির কারণে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থী মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের অনেকে ঘাটতি নিয়ে ওপরের ক্লাসে উঠছে। কতটুকু শিখল, সেটাও যাচাই করা যাচ্ছে না। কিছুদিন আগে একটি বেসরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, করোনা ভাইরাসজনিত বন্ধে প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ এবং মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার বা শিক্ষণ ঘাটতির ঝুঁকিতে আছে। এমন অবস্থায় শিক্ষার এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার তাগিদ দিচ্ছেন শিক্ষাবিদেরা। তাদের অনেকে যেসব এলাকায় সংক্রমণ নেই বা কম, সেসব এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ারও সুপারিশ করেছেন।
Leave a Reply