1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:২৬ অপরাহ্ন

সময়মতো ভারত থেকে টিকা আসবে কি

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২১

ভারতের সেরাম উৎপাদিত যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা বাংলাদেশ যথাসময়ে পাবে কি-না তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এই টিকার উৎপাদন ও বিপণনের সঙ্গ যুক্ত সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার বরাতে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রপ্তানি শুরুর আগে আগামী দুই মাস তারা ভারতের স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতেই জোর দেবে। এই খবরের পর গতকাল দিনভর নানা ধরনের আলোচনা হয়, শুরু হয় জল্পনা-কল্পনা। চুক্তি মোতাবেক যথাসময়ে পাওয়া যাবে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্য, পররাষ্ট্র ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বেক্সিমকো ফার্মা টিকা চুক্তি মোতাবেক পাওয়ার আশা প্রকাশ করলেও নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেনি। তবে সবাই বলেছে, যেহেতু সেরামের সঙ্গে চুক্তি হয়ে গেছে, তাই সময়মতো টিকা পাওয়া যাবে বলে তাদের আশা। ভারত সরকার থেকেও বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার অবশ্য সেরাম ইনস্টিটিউট বলেছে, টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা ‘পুরোপুরি সঠিক নয়’। তাদের টিকা রপ্তানির ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। তবে কোম্পানিটি এখন অন্য দেশে টিকা রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যা পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে।

অনেকের ধারণা, সেরামের এই বক্তব্যও যদি সঠিক হয়, তাহলে টিকা পেতে বাংলাদেশকে আরও কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। সেক্ষেত্রে ওই টিকা কবে পাওয়া যাবে তা নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা থেকে যাবে। কারণ, যে কোনো প্রক্রিয়া-ই সময়সাপেক্ষ। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও সেরাম ইনস্টিটিউশন টিকা রপ্তানি করতে পারবে না মর্মে খবর নাকচ করে দিয়ে বলেছে, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। ভারতে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশ প্রথম থেকেই পাবে।

টিকা দ্রুত পাওয়া নিয়ে এমন জল্পনা-কল্পনার মধ্যে গতকাল সোমবার বেক্সিমককো ফার্মাসিউটিক্যালকে টিকা আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশের ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর। গতকাল অধিপ্তরের উপ-পরিচালক আইয়ুব হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, বেক্সিমকো টিকা আমদানির অনুমতি চেয়েছিল। যাচাই-বাছাই শেষে আমদানির অনাপত্তির ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। কোভিশিল্ড নামের এই টিকার তিন কোটি ডোজ কিনতে গত ৫ নভেম্বর সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার সঙ্গে চুক্তি করে বাংলাদেশ। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাঠানোর কথা। ওই তিন কোটি ডোজ টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬০০ কোটি টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে জমা দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। ভারত থেকে টিকা এনে বাংলাদেশে সরবরাহের দায়িত্বে রয়েছে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। বাংলাদেশে সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ তারা। এরই মধ্যে ভারতের ওষুধ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা রবিবার কোভিশিল্ডের জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দিলে বাংলাদেশেও দ্রুত টিকা পাওয়ার আশা জোরালো হয়ে ওঠে। কারণ স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলে আসছিলেন, ভারত অনুমোদন দিলে জানুয়ারির মধ্যেই বাংলাদেশ অক্সফোর্ডের টিকার প্রথম চালান পেয়ে যাবে। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আদর পুনাওয়ালার বরাত দিয়ে রবিবার রাতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রপ্তানি শুরুর আগে দুই মাস তারা ভারতের স্থানীয় চাহিদা পূরণ করতেই জোর দেবে।

এই খবরের পর গতকাল দিনভর বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও কর্তৃপক্ষগুলো ভারত সরকার ও সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই টিকা দ্রুত সময় পাওয়ার অনিশ্চয়তা কাটাতে সারাদিন ব্যস্ত ছিল সরকারের উচ্চপর্যায়ও। অবশ্য, বেক্সিমকোর একটি সূত্র জানিয়েছে, টিকা কখন পাওয়া যাবে, আদৌ বিলম্ব হবে কি-না তা দু’একদিনের মধ্যে জানা যাবে। কারণ, নতুন কিছু শর্তে যুক্ত হওয়ায় টিকা পাওয়ার প্রক্রিয়ায় কিছুটা পরিবর্তন আনতে হতে পারে। সেক্ষেত্রে কিছুটা সময় ‘খরচ’ তো হবেই।

সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদার পুনেওয়ালার বরাত দিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এবং ভারত ও বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তারা এই মুহূর্তে টিকা রপ্তানি করতে পারছে না। ভারতীয় একটি বাণিজ্য বিষয়ক টিভি চ্যানেল সিএনবিসি টিভি এইটিন-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পুনাওয়ালা বলেন, এখনো এ বিষয়ে তারা কোনো লিখিত নির্দেশনা না পেলেও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় তারা বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন। তিনি বলেন, আমাদের যে লাইসেন্স রয়েছে সেটি অনুযায়ী, এই মুহূতে রপ্তানি করতে পারব না এবং খোলাবাজারে বিক্রি করতে পারব না। তাদের কাছে ভারত সরকারসহ সবাইকে দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত ভ্যাকসিনের মজুদ রয়েছে। এ নিয়ে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।

এমন ধূ¤্রজালের মধ্যে ভারতের সঙ্গে হওয়া টিকা নিয়ে চুক্তি সরকারের সঙ্গে সরকারের না-কি বাণিজ্যিক তা নিয়েও দুই ধরনের বক্তব্য এসেছে। সাস্ব্য বিভাগ এবং বেক্সিমকো পৃথক সংবাদ সম্মেলনে দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন।

আশাবাদী হলেও নিশ্চিত নন স্বাস্থ্যমন্ত্রী : সেরাম ইনস্টিটিউট তাদের তৈরি টিকা এখন ভারতের বাইরে রপ্তানি করতে পারবে না এমন একটি খবর প্রকাশ হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলন করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ভারতে ভ্যাকসিন রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা শুনেছি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আমরা যোগাযোগ করছি। বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গেও কথা বলেছি। আশা করছি সিরামের সঙ্গে চুক্তি ব্যাহত হবে না। চুক্তি অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন পাব।

আগে বলেছিলেন জানুয়ারির মধ্যে আমরা সিরামের টিকা পাবো, এখন কবে পাওয়া যেতে পারে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে বলেন, এটা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। নিশ্চিত হলে বলতে পারব। এ সমস্যাটি নতুন করে তৈরি হয়েছে। ভারতকে ভ্যাকসিন দেওয়া বাবদ টাকা পাঠানোর সব কাজ শেষ হয়ে গেছে। আজ মঙ্গলবার চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক টাকা অর্থাৎ ১২০ মিলিয়ন ডলার পাঠানো হবে।

পেঁয়াজ নিয়ে ভারত আমাদের যেভাবে নাজেহাল করেছে টিকা নিয়ে ভারতের ওপর কীভাবে বিশ্বাস রাখতে পারি সাংবাদিকের এই প্রশ্নে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক গভীর। কাজেই আমরা ভারতের ওপর বিশ্বাস রাখতে চাই। অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হওয়ার খেসারত দিচ্ছি কিনা এমন প্রশ্নে বলেন, তারপরও বিশ্বাস রাখতে চাই।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, সম্প্রতি ভারত সরকার তাঁদের দেশে অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন প্রদানের অনুমতি দিয়েছে। তবে, ভ্যাকসিন প্রয়োগে বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন লাগবে। এসব কারণে ওদের দেশেও ভ্যাকসিন প্রয়োগে কিছুটা সময় লাগবে।

যথাসময়ে টিকা পাওয়ার শঙ্কা নেই -পররাষ্ট্রমন্ত্রী : বাংলাদেশ-ভারত শীর্ষ বৈঠকের পর গতকাল সোমবার বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেন, টিকা দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশকে অগ্রাধিকার দেবে নয়াদিল্লি। ভারত থেকে করোনার টিকা আসা নিয়ে অনিশ্চয়তার খবর এলেও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শীর্ষ বৈঠকের সিদ্ধান্তের আলোকে যথাসময়েই টিকা পাবে বাংলাদেশ। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এমন কথা জানানো হয়েছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।

কবে নাগাদ আসতে পারে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, সেটা স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেছেন, এ মাসের শেষে। সুতরাং এ মাসের শেষেই আসবে। এটাতে ব্যাঘাত ঘটবে না।

সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে আব্দুল মোমেন বলেন, যেহেতু ভারত বাংলাদেশকে ভ্যাকসিনটা দেবে, এটা সর্বোচ্চ পর্যায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেটা তারা বাস্তবায়ন করবে। এটা ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আমাদের জানিয়েছে। এটা নিয়ে উদ্বেগ, আতঙ্কের কোনো কারণ নাই।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, উনি বলেছেন, সেরাম কোম্পানির প্রধান যে বক্তব্য দিয়েছেন, এটা ভারত সরকারের কোনো পলিসি না। এটা ব্যক্তিগত এবং প্রিম্যাচিউর্ড।

এর আগে বিবিসিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন বলেন, এই খবরটি তিনি বাংলাদেশের গণমাধ্যম মারফতে পেয়েছি। এরপর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনের সাথে যোগাযোগ করেছি। তারা জানিয়েছে তারা এ ব্যাপারে কিছু জানে না। কী হয়েছে তারা জানার চেষ্টা করছে। আমরা এ নিয়ে ভারতের সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রাখছি। আব্দুল মোমেন আরও বলেছেন, ভারত যদি নিষেধাজ্ঞা দেয়ও তাহলেও তাদের সাথে বাংলাদেশের যে উষ্ণ সম্পর্ক, তাতে টিকা পেতে কোন সমস্যা হবে না বলে আশা করি।

রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও প্রক্রিয়ায় কয়েক মাস লাগতে পারে -সেরাম ইনস্টিটিউট :

গতকাল সোমবার জনসংযোগ কর্মকর্তা মায়াঙ্ক সেন দিল্লিতে বিবিসিকে জানিয়েছেন, ভারত থেকে টিকা রপ্তানিতে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। টিকা রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা পুরোপুরি সঠিক নয়। তবে কোম্পানিটি এখন অন্য দেশে টিকা রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে, যা পেতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লেগে যেতে পারে। তবে রপ্তানি শুরুর আগেই ভারত সরকারকে ১০ কোটি টিকা দেয়ার বিষয়ে সম্মত হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে তারা রপ্তানি করতে পারবে না, যেহেতু তাদের রপ্তানির অনুমতি নেই।

চুক্তি নিয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ও বেক্সিমকোর দুই ধরনের বক্তব্য : গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘টিকার ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে যেহেতু জিটুজি (সরকারের সাথে সরকারের) চুক্তি হয়েছে সেহেতু বাংলাদেশের যথাসময়ে টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না। এইমাত্র ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকা-ের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে।’

বিকালে এই বক্তব্যের বিরোধিতাই করলেন বেক্সিমকো ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান। তিনি বলেছেন, চুক্তিটি বাণিজ্যিক, এটি সরকারের সঙ্গে সরকারের চুক্তি নয়।

স্বাস্থ্য বিভাগ সচিব বলেন, ভ্যাকসিন নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে চুক্তি হয়েছে, তা ব্যাহত হবে না। সব দেশের জন্য তারা এই বার্তা দিয়েছে, আগে ভারতের জন্য হবে, তারপরে অন্য দেশে যাবে। তবে আমরা আশ্বস্ত যে, এটা কোনো সমস্যা হবে না, সমাধান হয়ে যাবে। তারা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদন পাওয়ার পর জানাবে, যে আমরা কবে পাব। তবে এখনো আশ্বস্ত থাকতে পারি যে, আমাদের চুক্তি অনুযায়ী আমরা ভ্যাকসিন পাবো। ভারতের দিক থেকে কোন সুনিশ্চিত কোন আশ্বাস পাওয়া গেছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা যেহেতু আন্তর্জাতিক চুক্তি, সেটাকে সম্মান দেখানো হবে বলে আমরা আশা করি। সেই সঙ্গে সকাল থেকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। সব বিষয়ে আমরা আশাবাদী। তারা কেউ নেগেটিভ কিছু বলেননি। চুক্তি অনুযায়ী অর্ধেক টাকা, ১২০ মিলিয়ন ডলার পাঠাতে হবে। সেটা বাংলাদেশ এর মধ্যেই পাঠিয়ে দিয়েছে বলে তিনি জানান।

নাজমুল হাসান সোমবার সন্ধ্যায় গুলশানের নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারত থেকে টিকা পাওয়ার ব্যাপারে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব হয়তো অন্য কোনোও টিকা আমদানির চুক্তির কথা বলেছেন। এখানে জিটুজির কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমার জানা নাই। স্বাস্থ্য সচিব কোন ভ্যাকসিনের কথা বলছেন আমি জানি না। এটা হতে পারে অন্য ভ্যাকসিন, সরকারের অন্য কোম্পানির সঙ্গে থাকতেই পারে। এখানে বেক্সিমকো ফার্মাও গভর্নমেন্ট না সেরাম ইনস্টিটিউটও গভর্নমেন্ট না। কাজেই এখানে গভর্নমেন্ট টু গভর্নমেন্ট কীভাবে হতে পারে? এটা ত্রিপক্ষীয় চুক্তি।

নাজমুল হাসান পাপন বলেন, ভারত টিকা দেবে না এমন একটা খবর এসেছে। কিন্তু বেক্সিমকো আজও সেরামের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছে। চুক্তি অনুযায়ীই সেরাম বাংলাদেশকে টিকা দেবে। ওদের কাছ থেকে কোনো নেতিবাচক কথা শুনিনি। আমার ধারণা কেউ কোনো ভুল করছে। এখানে কোথাও বলা হয়নি এক্সপোর্ট করা যাবে না। নিউজটা আমিও শুনেছি। তিনি বলেন, সত্যি কথা বলতে আমি বা আমরা এটা নিয়ে অতটা চিন্তিত না। কারণ, আমার অ্যাগ্রিমেন্টটা হয়ে গেছে। ওই চুক্তিতে ক্লিয়ার বলা আছে, আমাদের দেশে অ্যাপ্রুভাল দেওয়ার এক মাসের মধ্যে টিকা পাঠাবে।

নাজমুল হাসান জানান, এখন সরকারের সামনে দুটো কাজ, যত দ্রুত সম্ভব এই টিকার অনুমোদন দেওয়া এবং দ্রুত টাকা পাঠিয়ে দেওয়া। আমরা আমাদের ব্যাংক গ্যারান্টি সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছি। ব্যাংক গ্যারান্টি পাওয়ার পর এক সপ্তাহের মধ্যে সরকারের এটা পৌঁছে দিতে হবে। আরেকটা হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন, যেটা ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তর দেবে। আমরা ডকুমেন্টস সব আগেই জমা দিয়েছি। আজকে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছি। এখন তারা এটা (অনুমোদন) কখন দেবে সেটা তাদের ব্যাপার।

পাপনের মতে, ভারত সরকার যা বলেছে তা যৌক্তিক, তাদের দেশের মানুষকে না দিয়ে রপ্তানি করা যাবে না। তারা তাদের দেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এটা সব দেশই করে। আমার ধারণা ইট কুড বি ওয়ান ইন্টারপ্রিটেশন, কেউ ভুল করছে বা অন্য কিছু করছে। ওখানে কোথাও লেখা নাই যে এক্সপোর্ট করতে পারবে কি পারবে না। তবে এক্সপোর্টের ওপর একটা বার (নিষেধাজ্ঞা) দিতেই পারে।

বাংলাদেশ প্রথম থেকেই টিকা পাবে : ভারতের পররাষ্ট্র সচিব

‘ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউশন টিকা রপ্তানি করতে পারবে না’ খবরে যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে, তা নাকচ করে দিয়েছেন সে দেশের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলা। দিল্লি থেকে তিনি জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে বাংলাদেশের টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই। ভারতে উৎপাদিত টিকা বাংলাদেশ প্রথম থেকেই পাবে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বলেন, সেরাম-প্রধানের যে বক্তব্য সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা আমাদের নজরে এসেছে। এতে প্রতিবেশী বাংলাদেশের উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ, ভারত বরাবরই প্রতিবেশীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় নিয়ে থাকে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com