কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মেধাবী ছাত্রী উলফাত আরা তিন্নির (২৪) রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে নিহত তিন্নির মা হালিমা বেগম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এ মামলা করেন। এ ঘটনায় ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আজ শনিবার এই রিপোট লেখা পর্যন্ত কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করছেন। তিন্নি শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামের মৃত মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আলীর ছোট মেয়ে। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত মধ্যরাতে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার শেখপাড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে আত্মহত্যা করেন তিন্নি। শুক্রবার দুপুরে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্ত কার্যক্রম শেষে সন্ধ্যায় তাকে দাফন করা হয়। বড় বোনের সাবেক স্বামীর নির্যাতনের শিকার হয়ে লজ্জায় অপমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে দাবি করেছে তার পরিবার।
খালাতো ভাই মখলেছুর রহমান জানান, তিন্নির বড় বোন মিন্নির একই গ্রামের নুরুদ্দীনের ছেলে শেখপাড়া বাজারের ব্যবসায়ী জামিরুলের সঙ্গে বিয়ে হয়। বনিবনা না হওয়ায় মিন্নি ও জামিরুলের মধ্যে ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। কিন্ত মিন্নিকে ফিরে পাওয়ার জন্য বেপরোয়া হয়ে ওঠেন জামিরুল। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই পিতৃহীন দুই বোনের ওপর নানা সময়ে নিপীড়ন চালিয়ে আসছিলেন।
বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে জামিরুল তিন্নিদের বাড়িতে লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে ফিরে যান। দুই ঘণ্টা বিরতি দিয়ে রাত ১২টার দিকে ফের জামিরুল ওই বাড়িতে আসে এবং তিন্নির ওপর নির্যাতন চালান। জামিরুল চলে যাওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে ফ্যানে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিন্নি।
পরে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। পরিকল্পিতভাবে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন বড় বোন মিন্নি।
জানতে চাইলে শৈলকুপা থানার পরির্দশক (তদন্ত) মহসীন আলী বলেন, এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা হয়েছে। এখন পর্যন্ত চারজনকে আটক করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তাদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
Leave a Reply