1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
নিরবের পরকীয়ার অভিযোগ নিয়ে সুর পাল্টালেন স্ত্রী ড. ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে কী কথা হলো, জানালেন মির্জা ফখরুল ভারত থেকে চিন্ময়ের মুক্তি দাবি কিসের আলামত, প্রশ্ন রিজভীর আইনজীবী হত্যার ভিডিও ফুটেজ দেখে গ্রেফতার ৬ : প্রেস উইং চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের বিবৃতি দেয়া অনধিকার চর্চা : উপদেষ্টা নাহিদ রয়টার্সের মনগড়া সংবাদের প্রতিবাদ জানালো সিএমপি হাইকোর্টের নজরে ইসকন-চট্টগ্রামের ঘটনা : আদালতকে পদক্ষেপ জানাবে সরকার অনির্দিষ্টকালের জন্য সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল বন্ধ ঘোষণা অহিংস গণঅভ্যুত্থানের আহ্বায়কসহ ১৮ জনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ ঢাকা ও চট্টগ্রামে ১০ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন

শাঁখের করাতে রোহিঙ্গা বোঝা

রিপোর্টারের নাম
  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ২৫ আগস্ট, ২০২০

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নাগরিকদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিতে বাধ্য হয়েছিল বাংলাদেশ। পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে সঙ্গত কারণেই আশ্রিত এসব রোহিঙ্গার নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমার সরকারের সদিচ্ছার অভাব এবং পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরে যেতে নানা শর্ত বেঁধে দেওয়া তথা অনীহার কারণে তাদের প্রত্যাবাসন চেষ্টা একাধিকবার ব্যর্থ হয়েছে। সব মিলিয়ে শাঁখের করাতে পড়েছে বাংলাদেশ।

২০১৭ সালের ডিসেম্বরের হিসাব অনুযায়ী, ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালে মিয়ানমার সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দেশটির সেনাবাহিনীর শুরু করা গণহত্যা-ধর্ষণ-নির্যাতন থেকে পরিত্রাণ পেতে প্রায় ৭ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এ ছাড়া গত তিন দশক ধরে মিয়ানমার সরকারের সহিংস নির্যাতন থেকে রক্ষা পেতে আরও প্রায় ৪ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। সেই থেকে তারা এ দেশেই বাস করছে। বর্তমানে কক্সবাজারের আশ্রয় শিবিরগুলোতে সব মিলিয়ে অন্তত ১১ লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে। বছরের পর বছর ধরে দেশের ওপর চেপে বসে আছে এই ১১ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট যে হত্যা-নির্যাতন শুরুর কারণে মাত্র কয়েক মাসে সাত লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়, সে ঘটনার তিন বছর আজ; আশ্রয় শিবিরের সারি সারি ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের অনিশ্চিত যাত্রার তিন বছর। কিন্তু এ সময়কালে তাদের একজনকেও মিয়ানমারে তাদের

জন্মভূমিতে ফেরত পাঠানো যায়নি। শুধু তাই নয়, কৌশলে বাংলাদেশের ভোটার হয়ে এবং এ দেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বাগিয়ে নিয়ে এবং এ দেশের নাগরিক হিসেবে পাসপোর্ট করে বিদেশে পাড়ি দেওয়ার মতো অপরাধে য্ক্তু হয়ে পড়েছে রোহিঙ্গারা। ডাকাতি, ইয়াবা ও অস্ত্রের কারবারে জড়িয়ে পড়েছে তাদের অনেকে। তাদের নিজেদের মধ্যে হানাহানি খুনোখুনিও প্রায় নৈমিত্তিক ঘটনা। এমনকি তাদের হাতে বাংলাদেশিদের হত্যা করার ঘটনাও ঘটেছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে সমস্যা-সংকট দিনদিন প্রকট হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যেভাবেই হোক আশ্রিত রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে প্রত্যাবাসন শুরু করতে হবে। এ জন্য কূটনীতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে ব্যাপকভাবে। এ ক্ষেত্রে পার্শ্ববর্তীসহ পশ্চিমা প্রভাবশালী দেশগুলোর সহযোগিতা নিতে হবে। নইলে বিশাল একটি জনগোষ্ঠীকে মানবিক আশ্রয় দিয়ে মারাত্মক বিপর্যয়ে পড়তে হতে পারে বাংলাদেশকে।

এদিকে আশ্রিত ১১ লাখ রোহিঙ্গা জানে না, কী তাদের ভবিষ্যৎ; ভাগ্যাকাশে জমা কালো মেঘ কাটবে কবে; কবে ফিরবে চল্লিশ পুরুষের মাতৃভূমিতে। তাদের চাওয়া নিরাপদ আশ্রয়, ভিটেবাড়ি ও নাগরিকত্ব। এটি নিশ্চিত হলে ফিরবে রোহিঙ্গারা। এ তিন বছরে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি হয়েছে মিয়ানমার; দুই দফা প্রত্যাবাসনের চেষ্টাও হয়েছে; কিন্তু মিয়ামনমা? সরকারের অযথা সময়ক্ষেপণ, প্রত্যাবাসনের নামে ছলচাতুরির কারণেই মূলত ভেস্তে গেছে রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরা। এ ছাড়া বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের চাওয়া-পাওয়ার হিসাব না মেলায় তারাও যেতে অনিচ্ছুক।

কয়েক দশক ধরেই মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের সংখ্যালঘু নৃতাত্ত্বিক রোহিঙ্গা মুসলমানরা নিজ ভূমিতে পরবাসীর মতো জীবনযাপন করছে। মিয়ানমার সরকার আইন করে কেড়ে নিয়েছিল তাদের নাগরিকত্ব। নানা বৈষম্যমূলক নীতি ও উসকানির মাধ্যমে তাদের সঙ্গে অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর দূরত্ব ক্রমেই বাড়িয়ে তোলা হচ্ছিল। কর্মহীন, নাগরিক অধিকারহীন রোহিঙ্গারা এক রকম বন্দি একঘরে জীবনযাপন করছিল রাখাইনে। এর মধ্যেই বিভিন্ন অজুহাতে চলছিল সহিংস আক্রমণ। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৭ সালে চূড়ান্ত বিপর্যয় নেমে আসে এ সংখ্যালঘুদের জীবনে। নিরাপত্তার অজুহাতে রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলোয় ভয়াবহ অভিযানে নামে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশ অভিমুখে ঢল নামে বিপন্ন মানুষগুলোর। এভাবে রোহিঙ্গাদের রাখাইন ছাড়া করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী।

বাংলাদেশে আশ্রিত বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাদের নিয়ে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। রোহিঙ্গা শিবিরগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় কিছু সংগঠন অপপ্রচার ও অপকর্মে লিপ্ত রয়েছে, এমন অভিযোগও রয়েছে। বাস্তুহারা এই বিশাল জনগোষ্ঠীকে ব্যবহার করে নানা উস্কানিও দিচ্ছে কিছু সংগঠন। জঙ্গি তৎপরতা ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে কেউ কেউ। মিয়ানমারে না ফেরার জন্য তাদের ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগও আছে। রোহিঙ্গা শিবিরে কেবল মিয়ানমারের বার্মিজ ভাষা এবং আরবি ভাষায় লেখাপড়া শেখানোর কথা থাকলেও শিবিরে কর্মরত এনজিওগুলো বাংলাকেও প্রাধান্য দিয়ে আসছে। এতে করে রোহিঙ্গারা সহজেই এ দেশের নাগরিক পরিচয়ে মিশে যেতে পারছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে কয়েকটি সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com