বিতর্কিত পশ্চিম সাহারার ওপর মরক্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়ার কথা বিবেচনা করছে ইসরাইল। এর ফলে রাবাতের সাথে ইসরাইলের সম্পর্ক আরো ঘনিষ্ঠ হবে বলে ইসরাইলিরা আশা করছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জাচি হ্যানেগবি বুধবার রাবাতে মরক্কোর পররাষ্ট্রমন্ত্রী নাসের বোরিতার সাথে বৈঠককালে এই আভাস দেন।
নেতানিয়াহুর অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই দেশের মধ্যকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানো নিয়ে কর্মকর্তারা আলোচনা করেছেন।
রাবাতে ইসরাইলের কূটনৈতিক মিশনের প্রধান মঙ্গলবার বলেন, পশ্চিম সাহারা নিয়ে ইসরাইলি ও মরক্কান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা আলোচনা করেছেন। দুই মন্ত্রী এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।
এই স্বীকৃতির বিনিময়ে ইসরাইলের সাথে মরক্কো কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এখন লিয়াজোঁ অফিস পর্যায়ে কূটনৈতিক মিশন রয়েছে। এগুলো এরপর পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসে পরিণত হবে। দুই দেশ অবাধ বাণিজ্যের বিষয়টিও বিবেচনা করছে।
আফ্রিকার অন্যতম বিরোধপূর্ণ অঞ্চল হলো পশ্চিম সাহারা। এখানে আদিবাসী সাহরাবি জনগোষ্ঠী স্বাধীনতার জন্য পলিসারিও ফ্রন্ট নামে মরস্কোর বিরুদ্ধে আন্দোলন করে যাচ্ছে।
সাবেক উপনিবেশিক শাসক স্পেন ১৯৭৫ সালে প্রত্যাহার করে নেয়ার পর মরস্কো অঞ্চলটি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। পলিসারিও ফ্রন্ট গণভোটের দাবি জানালেও মরক্কো তা প্রত্যাখ্যান করে বরং স্বায়ত্তশাসনের প্রস্তাব দেয়।
পলিসারিও ফ্রন্ট ১৯৭৫ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত মরক্কোর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে যায়। এরপর যুদ্ধবিরতি হলে জাতিসঙ্ঘ বাহিনী মোতায়েন করা হয়। গৃহযুদ্ধের কারণে প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার আদিবাসী মানুষ প্রতিবেশী আলজেরিয়ার উদ্বাস্তু ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করতে বাধ্য হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র ২০২০ সালে ইসরাইলকে স্বীকৃতির বিনিময়ে পশ্চিম সাহারার ওপর মরক্কোর সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দেয়। বাইডেন প্রশাসনও ওই অবস্থান থেকে সরে আসেনি।
চলতি বছরের শেষ দিকে মরক্কোতে আরব-ইসরাইল নেগেভ সামিট অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর ইসরাইলে হয় এ ধরনের প্রথম শীর্ষ সম্মেলন। এতে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর, মরক্কো ও যুক্তরাষ্ট্রে পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিলিত হয়েছিলেন।
এই সম্মেলনের লক্ষ্য হলো আব্রাহাম চুক্তিকে আরো ব্যাপকভিত্তিতে বাস্তবায়ন করা।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর
Leave a Reply