ইসরায়েল চাইছে, ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রও যুক্ত হোক। তা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসন চিন্তাভাবনা করছে। ইসরায়েলের অভিযানকে সহায়তা দিতে মার্কিন যুদ্ধবিমান ও অস্ত্র ব্যবহার করা হবে কিনা, তা নিয়ে শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে অব্যাহতভাবে আলোচনা করছেন ট্রাম্প; কিন্তু ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের মধ্যে ইরানে হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের সরাসরি অংশ নেওয়া নিয়ে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। এর মধ্যেই তার ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (এমএজিএ) আন্দোলনের ভেতরেই ভাঙন শুরু হয়েছে।
ট্রাম্পের সাবেক উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক টাকার কার্লসনের মতো সমর্থকরা বলছেন, ইরানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযানের উদ্দেশ্য শুধু পরমাণু কর্মসূচি ধ্বংস করা নয়, সরকার বদলই এই ধরনের হামলার মূল লক্ষ্য।
ইরানের বর্তমান শাসকদের বিরোধিতা করতে গিয়ে পশ্চিমা বিশ্বের অনেকেই ইসলামি প্রজাতন্ত্রের ধর্মীয় রক্ষণশীলতাকে দায়ী করেন। তবে ইরানে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের ইতিহাস নতুন নয়। আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনির নেতৃত্বে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবের অনেক আগ থেকেই দেশটিতে পশ্চিমারা হস্তক্ষেপ চালিয়ে আসছে।
এখন প্রশ্ন হলোÑ ইসরায়েল কি আসলেই ইরানে সরকার পরিবর্তন চায়? যুক্তরাষ্ট্র কি তাতে সহায়তা করছে? আর ইরানে পশ্চিমা হস্তক্ষেপের ইতিহাসই বা কতটা গভীর?
গত ১৩ জুন ভোরের দিকে ইরানের ওপর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। এর পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এক ভিডিও-বার্তায় ইংরেজিতে ইরানিদের উদ্দেশে বলেন, ‘আশা করি, এই সামরিক অভিযান আপনাদের স্বাধীনতা অর্জনের পথের বাধা দূর করবে।’ এ সামরিক অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’, যার নানা ঐতিহাসিক ইঙ্গিত রয়েছে। সিংহ আর সূর্যের ছবি প্রাচীন পারস্য সাম্রাজ্যের অন্যতম প্রতীক। ১৯ শতকের শেষ দিক থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত পাহলভি শাসকদের সময়ে ইরানের পতাকায় তলোয়ার হাতে সিংহের প্রতীক ব্যবহার করা হতো।
ইরানে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দেওয়া বক্তৃতায় নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইরানি জনগণের সামনে এখন ঐতিহাসিক পতাকাকে ঘিরে সমবেত হওয়ার সময় এসেছে; সময় হয়েছে এই অন্যায় ও অত্যাচারী শাসকের বিরুদ্ধে লড়াই করার।
অনেকে মনে করেন, বিপ্লব-পূর্ব ইরানের স্মৃতি জাগিয়ে ইরানিদের প্রতিরোধে উৎসাহ দিতে চেয়েছে ইসরায়েল। তবে কাতারের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্ক ওয়েন জোনস বলেন, ‘সিংহ নিয়ে ইসরায়েলি নেতারা কী বলছেন, তাতে ইরানিরা প্রভাবিত হবেÑ এটা ভাবা খুব বেশি কাজের বলে মনে হয় না।’
৭২ বছর আগে ১৯৫৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (সিআইএ) ও যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা ইরানের গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেককে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল। মোসাদ্দেক ইরানের তেলশিল্পকে জাতীয়করণ করেছিলেন, যা আগে ব্রিটিশ মালিকানাধীন অ্যাংলো-ইরানিয়ান অয়েল কোম্পানি (বর্তমানে বিপি) নিয়ন্ত্রণ করত। মোসাদ্দেকের এই সিদ্ধান্ত জনগণের কাছে খুব জনপ্রিয় হয়েছিল; কিন্তু পশ্চিমা দেশগুলো তা পছন্দ করেনি। ১৯৫৩ সালের ১৯ আগস্ট মোসাদ্দেককে ক্ষমতাচ্যুত করে পশ্চিমারা। অল্প সময়ের জন্য ইরান ছেড়ে যাওয়া শাহ (রেজা পাহলভি) আবার ফিরে এসে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় নিজের ক্ষমতা শক্তিশালী করেন।
ইরান ও উন্নয়নশীল দেশগুলো (গ্লোবাল সাউথ) এই অভ্যুত্থান ভালোভাবে নেয়নি। এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এই ধারণা জোরদার হয় যে, গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার চেয়ে তেল ও প্রভাব নিয়ন্ত্রণের দিকেই পশ্চিমাদের মনোযোগ ছিল বেশি।
এর পর কী ঘটল?
শাহ রেজা পাহলভি ১৯৫৩ সালে শাসন শুরু করার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন। একই সঙ্গে তিনি আরও কঠোর ও উৎপীড়ক হয়ে ওঠেন। শাহ ‘হোয়াইট রেভল্যুশন’ নামে একটি বড় প্রকল্প চালু করেন। এর অধীনে শিক্ষাব্যবস্থা ও অবকাঠামো বৃদ্ধি করা হয়। নানা ধরনের নাগরিক সুযোগ-সুবিধাসংক্রান্ত সংস্কার করা হয়; কিন্তু রাজনৈতিক বিরোধীদের ওপর ভয়াবহ রকমের নিপীড়ন চালাতেন। খেয়ালখুশিমতো গ্রেপ্তার, সেন্সরশিপ এবং নির্যাতন সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে জনগণের অসন্তোষ চরম পর্যায়ে পৌঁছায়। ইরানজুড়ে বড় বড় বিক্ষোভ হতে থাকে, শাহকে ক্ষমতা থেকে সরে দাঁড়ানোর দাবি বাড়তে থাকে। ১৯৭৯ সালের জানুয়ারিতে চাপ সামলাতে না পেরে শাহ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি নির্বাসন থেকে ফিরে এসে ইসলামি বিপ্লবের নেতৃত্বের হাল ধরেন। একটা পর্যায়ে রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং ইরানে ইসলামি
প্রজাতন্ত্র গঠিত হয়।
মধ্যপ্রাচ্য এখন খুব গুরুত্বপূর্ণ এক মোড়ে। এই মুহূর্তে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলো কৌশলগত প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নিতে পারে। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্র চেষ্টা করছে এই অঞ্চলে তাদের বেশি শক্তি খরচের জায়গা থেকে বের হয়ে আসতে। যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত দৃষ্টি এখন এশিয়ার দিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে মোড় ঘোরানো (পিভট টু এশিয়া) নীতির প্রবক্তা। এর পর থেকে প্রতিটি মার্কিন প্রশাসন মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে আসার চেষ্টা করেছে; কিন্তু প্রতিবারই কোনো না কোনো সংকটে তারা আবার এই অঞ্চলে জড়িয়ে পড়েছে। অনেক সময় সেই সংকট তাদের তৈরি করা নয় এবং তা পুরোপুরি তাদের নিয়ন্ত্রণেও ছিল না।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে শুরুতে কৌশলগতভাবে মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে আসার একটা বাস্তব সুযোগ তৈরি হয়েছিল। তার প্রশাসন নব্য-রক্ষণশীল প্রভাব কমিয়ে ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতিতে জোর দেয়। এর মাধ্যমে উপসাগরীয় দেশগুলো একটি স্পষ্ট বার্তা পায় যে, যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য থেকে সরে যাচ্ছে। ফলে যুক্তরাষ্ট্র সরে যাওয়ায় এই যে জায়গা খালি হবে, সেখানে উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর কেবল অর্থ জোগানদাতা হিসেবে নয়, বরং কৌশলপ্রণেতা হিসেবে উঠে আসার সময়। কাতার, ওমান আর সৌদি আরব এ সুযোগ কাজে লাগাতে উদ্যোগী হয়েছিল। তারা ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে মিলে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে তেহরানের সঙ্গে নতুন এক কাঠামো গড়তে কাজ করছিল। একটি আঞ্চলিক মীমাংসার রূপরেখা তৈরি হচ্ছিল। উপসাগরীয় দেশগুলো মনে করেছিল, তারা আর শুধু পৃষ্ঠপোষক নয়, বরং এখন কৌশলপ্রণেতা। অর্থনৈতিক সংযুক্তি আর সমন্বিত পরিকল্পনার দিকে এগোচ্ছিল তারা। এইভাবে এগোতে পারলে তা হতে পারত মধ্যপ্রাচ্যের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। যুদ্ধের বদলে জায়গা পেতে পারত পারস্পরিক নির্ভরতা আর অহিংস নেতৃত্ব; কিন্তু এই স্বপ্ন এক গুরুত্বপূর্ণ বাস্তবতাকে উপেক্ষা করেছিল। সেটি হলোÑ ইসরায়েল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের আক্রমণের পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তার দীর্ঘদিনের কৌশল বদলে ফেলেন। আগে তিনি সীমিত ও নিয়ন্ত্রিত হামলা চালাতেন; কিন্তু এখন হয়ে উঠলেন চূড়ান্ত উগ্র, একপেশে এবং বর্বর।
গাজায় এখনও নিশ্চিত বিজয় পায়নি ইসরায়েল; কিন্তু হিজবুল্লাহকে তারা কার্যত ভেঙে দিয়েছে। এই আংশিক সাফল্যে আত্মবিশ্বাসী হয়ে নেতানিয়াহু এবার ইরানের গভীরে আঘাত হেনে বসলেন। তার লক্ষ্য ইরানের বর্তমান শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন আর যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সমঝোতার সম্ভাবনা নষ্ট করা।
তবে বর্তমানে বাস্তবতা ভিন্ন। শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো ইরান বিপ্লবের আগে সক্রিয় ছিল। তারা লেবাননের গৃহযুদ্ধে লড়েছে। রাষ্ট্র ভেঙে গেলে তারা নতুনভাবে গড়ে উঠবে। তখন তারা হবে আরও কম দায়বদ্ধ আর কম নিয়ন্ত্রিত। ফলে এক ভারসাম্যহীন মধ্যপ্রাচ্য তৈরি হবে। ইসরায়েল শত্রু ধ্বংস করতে পারবে; কিন্তু টেকসই কিছু তৈরি করতে পারবে না। উপসাগরীয় দেশগুলোকে ঘিরে থাকবে সশস্ত্র গোষ্ঠীÑ হিজবুল্লাহ, হুতি আর ইরানি মিলিশিয়া। মাঝেমধ্যে ইসরায়েল হামলা চালিয়ে এদের কিছুটা দমন করতে পারবে; কিন্তু স্থিতিশীলতা ফিরবে না। সবচেয়ে বড় কথা হলোÑ নেতানিয়াহুর অধীনে ইসরায়েল এখন মৌলবাদী ইহুদি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এমন রাষ্ট্র যুদ্ধপ্রিয়, প্রতিবেশীদের স্বার্থ ও শান্তির প্রতি উদাসীন। এমন রাষ্ট্র যে কোনো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি। এরা বিধ্বংসী শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
এই প্রেক্ষাপটে উপসাগরীয় দেশগুলোর ভাবনায় থাকছে কূটনীতির জগতে নয়, কৌশলগত ক্ষেত্রেও নিজেদের প্রভাব কাজে লাগাতে চাইবে। তারা ওয়াশিংটনে নতুনভাবে লবি গড়ে তুলে ট্রাম্প প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে চাইবে, যেন তারা সংঘাত নয়, কূটনীতি বেছে নেয়। কাতার-ওমান এরই মধ্যে একধরনের সেতু গড়ছে তেহরান আর ট্রাম্পের মধ্যে। তাদের বহুমুখী অংশীদারত্বকেও কাজে লাগাতে হবে। বিশ্ব এখন বহু মেরু। ফলে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সংযুক্তি, রাশিয়ার সঙ্গে নিরাপত্তা সংলাপÑ সবই যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্ব দিতে বাধ্য করবে। সবশেষে উপসাগরীয় দেশগুলোকে বুঝতে হবে, তাদের কোনো বিকল্প নেই। তারা শুধু অর্থ বা কূটনীতিতে নয়, কৌশলগত ক্ষেত্রে অপরিহার্য। মধ্যপ্রাচ্যের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য তারা এগিয়ে আসতে পারে।
নেতানিয়াহুর ইরানে হামলার পদক্ষেপ মূলত ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক। উপসাগরীয় রাষ্ট্রগুলোর কূটনৈতিক উদ্যোগ এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ইরানবিরোধী শক্তি কোণঠাসা হচ্ছিল। তখন নেতানিয়াহু নিজের প্রভাব হারানোর ভয় পাচ্ছিলেন। তিনি ট্রাম্পকে এমন এক সংঘাতে টেনে এনেছেন, যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। ভণ্ডুল করে দিতে পারে ইরান চুক্তি।
ইরানের শক্ত প্রতিরোধও ভাবনায় ফেলেছে পশ্চিমাদের। নতুন করে ভাবাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রকে। তাদের সামনে বাস্তব উদাহরণ রয়েছে ইরাক ও আফগানিস্তান। এ অবস্থায় তাদের পদক্ষেপ অবশ্যই সতর্কতামূলক। গত কয়েকদিন ট্রাম্প বারবার ইঙ্গিত দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো মুহূর্তে ইসরায়েলের সঙ্গে হামলায় যোগ দিতে পারে; কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। যুদ্ধের অষ্টম দিনে এসে ট্রাম্প বললেন, এই সিদ্ধান্ত নিতে তার দুই সপ্তাহ সময় দরকার।
দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকেই ট্রাম্প বলে এসেছেনÑ তিনি যুদ্ধ চান না। নির্বাচনী প্রচারে দ্রুততম সময়ে ইউক্রেন-রাশিয়া ও গাজার যুদ্ধ বন্ধের প্রতিশ্রুতি দেন। এই পরিস্থিতিতে ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া ট্রাম্পের নিজের পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে কতটা মানানসই, প্রশ্ন থাকছে। হয়তো এ কারণেই কূটনৈতিক সমাধানই লক্ষ্য। পাশাপাশি ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করলে দীর্ঘসময়ের জন্য বিদেশের মাটিতে সংঘাতে জড়াবে যুক্তরাষ্ট্র, যা ট্রাম্পের প্রাধান্যের বিষয় নয়। ট্রাম্প অবশ্য বরাবরই বলে এসেছেন, হামাস-হিজবুল্লাহর চেয়ে চীনের অর্থনৈতিক আগ্রাসন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বড় উদ্বেগের কারণ।
এমন অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি না জড়ালে ইসরায়েল যুদ্ধ কতটা সামলে নিতে পারবে। ইরান হামলা জোরদার ও নতুন অস্ত্র ব্যবহার করলে নিঃসন্দেহে তেল আবিবে বড় ধরনের ধ্বংসযজ্ঞই ঘটবে। এমন অবস্থার সঙ্গে পরিচিত নয় ইসরায়েলিরা। হয়তো পরিচয় ঘটবে আরও বড় কিছুর সঙ্গে যা তাদের ধর্মীয় বিশ^াসে রয়েছে।
অষ্টম দশকের অভিশাপ ইহুদি রাষ্ট্রের আয়ুষ্কাল ৮০ বছরের বেশি হবে না। ইহুদিরা এই বিশ্বাস পেয়েছেন ‘তালমুদ’ থেকে। তালমুদ হচ্ছে ইহুদিদের একটি ধর্মীয় ন্যায়শাস্ত্র। এটি প্রাচীন ইহুদি পণ্ডিতেরা লিখেছিলেন। শাস্ত্রটিতে ইহুদিদের প্রাত্যহিক জীবনের করণীয়, পালনীয় ও পরিত্যাজ্য বিষয়গুলোকে বাতলে দেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠা ১৯৪৮ সালে। সে হিসাবে ২০২৮ সালে পূর্ণ হবে ৮০ বছর। মনে রাখতে হবে ধর্মীয় বিশ^াস আর যুদ্ধ এক নয়। তবু বিশ^াসের পাথরে খোদাই করা সব চোখ।
(আল জাজিরা অবলম্বনে)
লেখক : ভারপ্রাপ্ত বার্তা সম্পাদক, দৈনিক আমাদের সময়
Leave a Reply