1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ০৪:৩৫ অপরাহ্ন

বিএনপিতে স্বস্তি, জামায়াতে অস্বস্তি

‍ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক :
  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫

দেশব্যাপী আলোচনায় এখন লন্ডনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বহুল আলোচিত বৈঠক। দেশের বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আগামী নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিল, বৈঠকের মাধ্যমে তা কেটে গেছে। এতে উচ্ছ্বসিত দলটির নেতা-কর্মীরা। তাঁরা নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। বিএনপির সমমনা প্রতিটি দলও এ বৈঠকের পর থেকে চাঙা ও উচ্ছ্বসিত।

এদিকে দেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল বিএনপির একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামী এ বৈঠকে অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়; যৌথ বিবৃতি দেওয়া দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন, যা তাঁর নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, আগামী বছরের রমজানের আগে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রস্তাব করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে এই সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।

বিএনপি ও সমমনা দলগুলো বলছে, ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তারেক রহমানের এক ঘণ্টার বেশি স্থায়ী বৈঠকটি ছিল হৃদ্যতাপূর্ণ, আন্তরিক। দুই নেতার একান্ত আলোচনায় সমঝোতা ও সহযোগিতার বার্তা স্বস্তি ছড়িয়েছে গোটা দেশের রাজনীতিতে। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে টানাপোড়েন কেটে গেছে। সংস্কার, গণহত্যার বিচার বিষয়ে উভয় পক্ষ ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন। দেশের বাইরে এমন একটি বৈঠক রাজনীতিতে ইতিবাচক বার্তা নিয়ে এসেছে। আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক সংকট নিরসন সম্ভব এও প্রমাণ হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ এ বৈঠকে দুই পক্ষের রাজনৈতিক দূরদর্শিতারও বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। রাজনীতিতে এ বৈঠক ইতিবাচক পরিবর্তনের সূচনা করবে বলেও মনে করা হচ্ছে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বৈঠক সফল হয়েছে। চারদিকে অনিশ্চয়তা ছিল। সে অবস্থা কাটিয়ে জাতিকে আবার সামনে এগিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখিয়েছেন দুই নেতা।’ বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘জাতির প্রয়োজনে প্রধান উপদেষ্টা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের বৈঠকটি প্রত্যাশিত ছিল। ড. ইউনূস-তারেক রহমানের বৈঠক বাংলাদেশে স্বস্তি ফিরিয়ে এনেছে।’ বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, ‘তারেক রহমান আবার প্রমাণ করলেন বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো রয়েছে, এগুলোর যাঁরা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তাঁদের মধ্যে নিঃসন্দেহে রাষ্ট্রনায়কোচিত গুণগুলো তাঁর মধ্যে রয়েছে। তিনি তা প্রমাণ করেছেন। প্রথম একটি বৈঠক যেটা সত্যিকার অর্থে গোটা জাতি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ছিল, সে বৈঠকটিতে তিনি আল্লাহর হুকুমে সফল হয়েছেন।’ জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের আহ্বায়ক, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘বৈঠকের মধ্য দিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট ধোঁয়াশা কেটে গেছে। আগামী রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে যে ফলপ্রসূ ঐকমত্য হয়েছে, তা অনিশ্চয়তা কাটিয়ে দেশের মানুষের জন্য এনেছে স্বস্তির বার্তা, আশার আলো।’ জামায়াত নেতারা বৈঠক প্রসঙ্গে বলছেন, একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রধান উপদেষ্টার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে। দলের আমির শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে বৈঠক নিয়ে গতকাল কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক সূত্র জানান, বৈঠককে তাঁরা ‘খুবই স্বাভাবিক’ মনে করেন। জামায়াত বলছে, ‘প্রধান উপদেষ্টা ৬ জুন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করেন। এ ঘোষণার পর লন্ডন সফরকালে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে বিদেশে যৌথ সংবাদ সম্মেলন এবং বৈঠকের বিষয় সম্পর্কে যৌথ বিবৃতি দেওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর মাধ্যমে তিনি একটি দলের প্রতি বিশেষ অনুরাগ প্রকাশ করেছেন; যা তাঁর নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করেছে।’ জামায়াত মনে করে, ‘দেশে ফিরে এসে প্রধান উপদেষ্টার অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে এ ব্যাপারে তাঁর অভিমত প্রকাশ করা সমীচীন ছিল।’ দলটি আরও বলছে, ‘সরকারপ্রধান হিসেবে কোনো একটি দলের সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলন নৈতিকভাবে কিছুতেই যথার্থ নয়। প্রধান উপদেষ্টা একটি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলন করায় আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হওয়ার বিষয়ে জনগণের মধ্যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যেখানে বাংলাদেশে অনেক রাজনৈতিক দল সক্রিয়ভাবে বিদ্যমান, সেখানে শুধু কোনো একটি দলের সঙ্গে আলাপ করে দেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া সঠিক বিবেচিত হতে পারে না।’

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com