যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো ৩২ দল নিয়ে আয়োজিত ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপের পর্দা উঠেছে জমকালো আয়োজনে। টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচেই মুখোমুখি হয়েছিল লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামি ও মিশরের জায়ান্ট ক্লাব আল আহলি। তবে উত্তেজনাপূর্ণ লড়াই শেষে গোলশূন্য ড্র নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় দুই দলকে। মূল নায়ক ছিলেন উভয় দলের গোলরক্ষক—আক্রমণভাগের ব্যর্থতার চেয়ে তাদের দৃঢ়তায়ই গোলের খাতায় নাম লেখাতে পারেনি কেউ।
ফ্লোরিডার হার্ড রক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায় ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে খেলা শুরুতে কিছুটা বিলম্ব হয়। শুরু থেকেই জমজমাট লড়াই জমে ওঠে। দুই দলের ফুটবলাররাই একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও শেষ বাধা হয়ে দাঁড়ান দুই গোলরক্ষক—মায়ামির আর্জেন্টাইন কিপার অস্কার উস্তারি ও আহলির মোহামেদ আল এলশেনাওয়ি।
ম্যাচের ১৫ মিনিটে ফ্রি-কিক থেকে প্রথম উল্লেখযোগ্য শট নেন মেসি, তবে তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে তার বাঁ পায়ের বাঁকানো শটও অল্পের জন্য জালের দেখা পায়নি। ৬৪ মিনিটে তার নেওয়া একটি ফ্রি-কিক আলতো করে পাশের জালে লেগে মাঠ ছাড়ে, তবে স্কোরলাইন বদলায়নি।
প্রথমার্ধে স্পষ্টভাবেই প্রভাব বিস্তার করে খেলেছে আল আহলি। ৩২ মিনিটে ফাঁকা হেডের সুযোগ পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ হন তাদের এক ফরোয়ার্ড। সবচেয়ে বড় সুযোগ আসে বিরতির আগ মুহূর্তে, মায়ামির বক্সে ফাউলের কারণে পেনাল্টি পায় আল আহলি। তবে মাহমুদ ‘ট্রেজেগুয়েট’ এর নেওয়া শট ঠেকিয়ে দেন উস্তারি। এই সেভের জন্য ম্যাচসেরার পুরস্কার ওঠে তার হাতেই।
দ্বিতীয়ার্ধে ঘুরে দাঁড়ায় ইন্টার মায়ামি। মাঝমাঠে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে একের পর এক আক্রমণ শানান মেসিরা। শেষ মুহূর্তে কর্নার থেকে হেডে বল জালে পাঠাতে চেয়েছিলেন ফাফা পিকল্ট, কিন্তু আল এলশেনাওয়ি চোখ ধাঁধানো সেভে দলকে রক্ষা করেন। পরে আরও দুটি কর্নার থেকেও সম্ভাব্য গোল রুখে দেন তিনি। শেষ পর্যন্ত কোনো দলই গোলের দেখা না পাওয়ায় ০-০ স্কোরলাইন নিয়ে ম্যাচ শেষ হয়।
বার্সেলোনার হয়ে আগের তিনটি ক্লাব বিশ্বকাপ জেতা মেসির জন্য এবার ছিল নতুন এক চ্যালেঞ্জ—নতুন ক্লাব, বড় পরিসরের টুর্নামেন্ট এবং সাম্প্রতিক সময়ে মায়ামির কিছুটা বাজে পারফরম্যান্স। তাই শুরুটা জয় দিয়ে রাঙাতে চেয়েছিলেন তিনি। তবে গোলরক্ষকদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে সেই আশা পূরণ হয়নি।
তবে গ্রুপপর্বের বাকি ম্যাচগুলোতে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ এখনো রয়েছে মায়ামির সামনে। আর মেসির মতো অভিজ্ঞ তারকা থাকায় সেই আশাও একেবারে ফিকে নয়।
Leave a Reply