যুক্তরাজ্যে আইন ভঙ্গের দায়ে জরিমানার মুখোমুখি হতে যাচ্ছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে এবং যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের লেবার পার্টির সদস্য ও মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক।
মূলত একটি সম্পত্তি থেকে ভাড়া বাবদ আয় এক বছরের বেশি সময় অপ্রদর্শিত রাখার অভিযোগে তাকে ১০ হাজার ইউরো জরিমানা করা হতে পারে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
আজ রোববার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গণমাধ্যম ডেইলি মেইল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, চলতি বছরের শুরু থেকেই লন্ডনের একটি সম্পত্তি থেকে ভাড়া বাবদ আয় এক বছরের বেশি সময় অপ্রদর্শিত রাখার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে এই তদন্ত শুরু করেছিল পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনার।
তদন্তে দেখা গেছে একজন এমপি হিসেবে আর্থিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে নিয়ম ভঙ্গ করেছিলেন টিউলিপ। যার কারণে বাড়িওয়ালা হিসাবে তার আইনি বাধ্যবাধকতা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৮ সালে ৮ লাখ ৮৫ হাজার ইউরো দিয়ে লন্ডনে একটি ফ্ল্যাট কেনেন টিউলিপ সিদ্দিক এবং তার স্বামী ক্রিস পার্সি। তবে তদন্তে দেখা গেছে যে প্রায় ১৪ মাস অর্থাৎ এক বছরের বেশি সময় ধরে এই সম্পত্তি থেকে হওয়া আয় বা ভাড়া সঠিকভাবে ঘোষণা করেননি তিনি।
পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনার তদন্তে জানতে পেরেছে যে সংসদীয় নিয়ম লঙ্ঘন করেছেন টিউলিপ সিদ্দিক। যদিও একে একটি ‘প্রশাসনিক ত্রুটি’ হিসেবে স্ট্যান্ডার্ডস কমিশনারের কাছে এ নিউম লঙ্ঘনের ব্যাখা দিয়েছে টিউলিপ সিদ্দিক।
যুক্তরাজ্যে ভাড়া দেওয়া সম্পত্তির ক্ষেত্রে এনার্জি পারফরম্যান্স সার্টিফিকেট (ইপিসি) থাকা বাধ্যতামূলক। তবে টিউলিপের লন্ডনের এই সম্পত্তির ক্ষেত্রে মেয়াদোত্তীর্ণ বা বর্তমান কোন ধরণের ইপিসি পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে ডেইলি মেইল।
তবে সেন্ট্রাল লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের আরেকটি সম্পত্তি রয়েছে যার সি রেটিং সহ একটি বৈধ ইপিসি রয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমটি।
যুক্তরাজ্যে যে বাড়িওয়ালারা তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে ইপিসি নিয়ম মেনে চলেন না তাদের ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০ হাজার থেকে শুরু করে দের লাখ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা করা হয়ে থাকে।
যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন। এবার তিনিই দুর্নীতির অভিযোগে জরিমানার মুখোমুখি হচ্ছেন।
অন্যদিকে বাংলাদেশের অবকাঠামো প্রকল্প থেকে ৩ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড (৫৯ হাজার কোটি টাকা) আত্মসাতের অভিযোগের তদন্তেও টিউলিপ সিদ্দিকের নাম উঠে এসেছে। তাঁর পরিবার এই অর্থ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, তিনি বাংলাদেশে বেশি অর্থ ব্যয়ে একটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের চুক্তি করার ক্ষেত্রে ২০১৩ সালে মধ্যস্থতা করেছিলেন।
আগস্টে ক্ষমতাচ্যুত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দেশটির দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) যে তদন্ত করছে, তার আওতায় রয়েছে দুর্নীতির এই অভিযোগ। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা টিউলিপ সিদ্দিকের খালা।
Leave a Reply