1. tasermahmud@gmail.com : admi2017 :
  2. akazadjm@gmail.com : Taser Khan : Taser Khan
রবিবার, ২০ অক্টোবর ২০২৪, ০২:৩২ অপরাহ্ন

আমরা যারা সম্মুখে ছিলাম সবার জীবন নাশের হুমকি ছিল : আবু বাকের মজুমদার

ইউএস বাংলাদেশ ডেস্ক:
  • আপডেট টাইম : বৃহস্পতিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

গণবিপ্লব ২৪-এর একজন অন্যতম সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার। তিনি সম্মুখে সারির একজন যোদ্ধা। এটি তার সাক্ষাৎকার। নয়া দিগন্তের সাথে খোলামেলা কথা বলেছেন তিনি। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নয়া দিগন্তের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার হারুন ইসলাম

কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলো কিভাবে?
২০১৮ সালে আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারপূর্বক একটি পরিপত্র জারি করা হয়। উচ্চ আদালত কর্তৃক ৫ জুন ওই পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে শুরু হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন।

কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে এক দফার আন্দোলন কিভাবে শুরু হলো?
আসলে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল দেশের জনমানুষের আকাক্সক্ষার আন্দোলন। আন্দোলনটি প্রথম থেকেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্লাটফর্মে শুরু হয়। শিক্ষার্থী চাকরিপ্রত্যাশীরা ছাড়াও জনমানুষ ব্যাপক সাড়া দেয়। পরে গত ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায় ছাত্রলীগ। হামলায় হাজারের উপরে শিক্ষার্থীরা আহত হয়। প্রতিবাদে সারা দেশে ছাত্রজনতা

রাস্তায় নেমে আসে। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগের নির্দেশে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। বিশেষ করে ১৭, ১৮, ১৯ তারিখ বহু শিক্ষার্থী, সাধারণ জনতা শহীদ হয়। জনগণ নির্মম হত্যাযজ্ঞ মেনে না নিতে পেরে হত্যার হুকুমদাতাদের বিচার চাই, তারই পরিপ্রেক্ষিতে নয় দফা দাবি উত্থাপন করা হয়। একপর্যায়ে তারা ফ্যাসিবাদে সরকার পতন চাই। এভাবেই কোটা আন্দোলন থেকে সরকার পতনের এক দফা দাবির আন্দোলনে পতিত হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম স্লোগান ছিল ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’, আগামীর বাংলাদেশে সেটার বাস্তবায়ন কিভাবে হবে?
আমরা এমন একটা বাংলাদেশ চাই যেখানে ছাত্র-জনতার মতামতের প্রতিধ্বনি ঘটবে। জনগণের জন্য সরকার। জনগণ যা চাই সেটার বাস্তবায়ন করতে সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে ন্যায়বিচারসহ রাষ্ট্রীয় সব সুযোগ-সুবিধা পাবে।

আন্দোলনের ভয়াবহ মুহূর্তগুলোর সমন্বয় কিভাবে হতো?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আমরা যারা সম্মুখে ছিলাম সবারই জীবননাশের হুমকি ছিল। তবে আমাদের নৈতিক মনোবলের জায়গাটি শক্ত ছিল। যার কাছে ডিবি হেফাজত, আয়নাঘর তুচ্ছ। আপনারা জানেন আমাদেরকে দুইবার গুম করা হয়েছে, আমাকে ও নাহিদ ভাইকে পেটানো হয়েছে, আসিফ মাহমুদ ভাইকে ইনজেকশান পুশ করা হয়েছে। তাতে আমাদের নৈতিক কোনো অবক্ষয় ঘটেনি, আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিলাম যে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থামাব না। এমনকি কেউ যদি শহীদও বা গুম হয় তবুও বাকিরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সচিবালয় আওয়ামীপন্থী যারা রয়েছে তাদের রেখে কী রাষ্ট্র সংস্কার সম্ভব?
ফ্যাসিবাদী সিস্টেম বিলুপের জন্যই আমাদের এই আন্দোলন। পুনরায় যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চাইবে তাদের ছাত্রজনতা প্রতিহত করবে।

শোনা যাচ্ছে আপনারা নতুন দল গঠন করে যাচ্ছন, সেটা কতদূর এগিয়েছে?
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কোটা সংস্কার আন্দোলন থেকে শুরু করে জনতার সর্মথনে স্বৈরাচারী সরকারকে পতন ঘটিয়েছে। বর্তমানে যে সরকার রয়েছে সেটা ছাত্র নাগরিকের সরকার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সেই সরকারের পাশে থেকে কাজ করে যাচ্ছে। তা ছাড়া শুরু থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সাধারণ জনতার দাবির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এখন ছাত্রজনতা যদি চাই আমরা রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারি। তবে আমরা এখন পর্যন্ত এমন কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।

ইন্ডিয়ার সাথে সীমান্ত থেকে শুরু করে পানি সমস্যাগুলোর সমাধানে কিভাবে ভূমিকা রাখবেন?

আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইন্ডিয়া। সীমান্ত থেকে শুরু করে নদীর পানির হিস্যা নিয়ে বেশ কিছু ঝামেলা রয়েছে। আমরা মনে করি সদ্য সাবেক সরকার ছিল তাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতার কারণে এটা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি বর্তমান যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রয়েছে তাদের যথেষ্ট গার্ডস আছে। তারা অত্যন্ত বিচক্ষণতার সাথে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাবে। আমাদের দাবি পানি বণ্টন চুক্তির আন্তর্জাতিক যে নিয়মবিধি রয়েছে ভারত সেটি মেনে চলবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র হিসেবে তাদের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়তে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পাশে থাকবে।

আন্দোলন চলাকালীন গুলির মুখে থাকা একটা অভিজ্ঞতা বলুন?
আপনারা জানেন যে স্বৈরাচারী সরকার কী নির্মমভাবে নিরীহ ছাত্রজনতা, জনগণের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে। আমরা সবাই প্রতিদিনই শহীদ হওয়ার ইচ্ছা নিয়ে মাঠে নামতাম। ১৭ কোটি মানুষেরই এই ইচ্ছাশক্তি ছিল।

যার কারণেই আমরা স্বৈরাচারকে হটাতে পেরেছি। গত ৫ আগস্ট সকালে চানখারপুলে আন্দোলনকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। আমি সামনের সারিতেই ছিলাম। আমার পাশে একটা ছেলের বুলেট বুকে এসে লাগল। সাথে সাথে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। আসলে আমার দেখা সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতি ছিল সেটা।

নিউজটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
© All rights reserved © 2019-2023 usbangladesh24.com