রাজশাহী মেডিকেল কলেজের হিমঘরে সন্তানদের অপেক্ষায় পথ চেয়ে আছেন প্লেব্যাক সম্রাট এন্ড্রু কিশোর। সন্তানরাও বাবাকে শেষবারের মতো দেখতে ছুটে আসছেন সুদূর অস্ট্রেলিয়া থেকে। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সময়টা। করোনার এই সময়ে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটগুলো খুব ঝামেলা হচ্ছে। তাই তাদের আসতে দেরি হচ্ছে।
তবে আজ বৃহস্পতিবার সকালের একটি ফ্লাইটে অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন এন্ড্রু কিশোরের ছেলে সপ্তক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শিল্পীর শিষ্য সংগীতশিল্পী মোমিন বিশ্বাস।
তিনি জানান, আজ সকালে সপ্তক এসেছে। এখন শুধু সংজ্ঞার অপেক্ষায়। মেয়ে দেশে আসলেই আগামী ১৫ জুলাই হবে এন্ড্রু কিশোরের শেষযাত্রা।
জানা গেছে, ভাইবোন অস্ট্রেলিয়ায় থাকলেও দুজনের দূরত্ব অনেক। দুজনের ইউনিভার্সিটি দুই শহরে। একজন থাকেন সিডনিতে আরেজন থাকেন মেলবোর্নে। তাই বাধ্য হয়েই পৃথকভাবে আসতে হচ্ছে তাদের। মেয়ের দেশে ফিরতে আরও চার দিন সময় লাগতে পারে।
ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন দেশ বরেণ্য সংগীতশিল্পী এন্ড্রু কিশোর। তিনি রাজশাহী মহানগরীর মহিষবাথান এলাকায় বোন ডা. শিখা বিশ্বাসের বাসায় ছিলেন।
১৯৫৫ সালের ৪ নভেম্বর রাজশাহীতে জন্মগ্রহণ করেন এন্ড্রু কিশোর। রাজশাহীতেই কেটেছে এন্ড্রু কিশোরের শৈশব ও কৈশোর। ১৯৭৭ সালে আলম খানের সুরে ‘মেইল ট্রেন’ ছবির ‘অচিনপুরের রাজকুমারী নেই যে তার কেউ’ গানের মধ্যদিয়ে এন্ড্রু কিশোরের চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক যাত্রা শুরু হয়। সেই থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সংগীতে অসামান্য অবদানের আটবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মানে ভূষিত হয়েছেন খ্যাতনামা এই শিল্পী।
এন্ড্রু কিশোরের জনপ্রিয় গানগুলোর তালিকায় আছে- ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘আমার সারা দেহ খেয়ো গো মাটি’, ‘আমার বুকের মধ্যে খানে’, ‘আমার বাবার মুখে প্রথম যেদিন শুনেছিলাম গান’, ‘ভেঙেছে পিঞ্জর মেলেছে ডানা’, ‘সবাই তো ভালোবাসা চায়’, ‘পড়ে না চোখের পলক’, ‘পদ্মপাতার পানি’, ‘ওগো বিদেশিনী’, ‘তুমি মোর জীবনের ভাবনা’, ‘আমি চিরকাল প্রেমের কাঙাল’ ইত্যাদি।
Leave a Reply