কালিমা বা তাওহিদ ইসলামী সমাজ ব্যবস্থার বিশেষ চাহিদাগুলোর বাস্তব একটি চিত্র পেশ করে। যে সমাজে কালিমার মূল রূপ পরিস্ফূট হয় না সে সমাজ কখনোই ইসলামী সমাজ হতে পারে না। কালিমা হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ জীবনাদর্শের ভিত্তি। এ ভিত্তির উপরেই উম্মতের বিরাট প্রাসাদটি গড়ে উঠেছে। এ ভিত্তিটি সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত না হলে তার উপর কিছুতেই জীবনযাত্রার প্রণালী রচিত হতে পারে না। এ ভিত্তির বদলে অন্য কোনো ভিত্তি অবলম্বন অথবা ভিত্তির সাথে অন্য কোনো আদর্শের আংশিক সংমিশ্রণ ঘটিয়ে জীবন বিধান রচনার প্রচেষ্টায় যে সমাজ গড়ে উঠবে তাকে কিছুতেই ইসলামী সমাজ আখ্যা দেয়া যাবে না।
আল্লাহ তায়ালা বলেন-‘আইন-বিধান জারি করার অধিকার একমাত্র আল্লাহ তায়ালার। আর তিনি আদেশ দিচ্ছেন যে, তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ছাড়া অন্য কারো গোলামি করবে না। এটিই হচ্ছে সঠিক জীবন বিধান।’ (সূরা ইউসুফ, আয়াত-৪০)
ইসলাম বা ঈমানের অন্যান্য ভিত্তি : ঈমানের ভিত্তি বা বুনিয়াদ হলো পাঁচটি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা: থেকে বর্ণিত-তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘ইসলামের স্তম্ভ হচ্ছে পাঁচটি : ১. আল্লাহ ব্যতীত প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই এবং নিশ্চয়ই মুহাম্মদ সা: আল্লাহর রাসূল- এ কথার সাক্ষ্য প্রদান করা। ২. নামাজ কায়েম করা। ৩. জাকাত আদায় করা। ৪. হজ সম্পাদন করা, ৫. রমজানের রোজা রাখা।
ঈমানের রুকন : ঈমান বা তাওহিদের রুকন দু’টি : এক. তাগুতকে অস্বীকার করা ও দুই. এক আল্লাহর প্রতি ঈমান আনা।
আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘যে তাগুতকে (আল্লাহবিরোধী সব কিছুকে) অস্বীকার ও অমান্য করে এবং আল্লাহর উপর ঈমান আনে, সে এমন এক সুদৃঢ় ও মজবুত অবলম্বনকে আঁকড়ে ধরে, যা ভাঙার নয়।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-২৫১)
তাওহিদ ইসলামী সমাজব্যবস্থার মূল ভিত্তি। ইসলামী সমাজব্যবস্থাকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করার জন্য এবং তদানুযায়ী জীবন পরিচালনা করার জন্য তাওহিদ বা আল্লাহর একাত্মবাদ বিশ্বাস করা অপরিহার্য। কেউ আল্লাহকে এক উপাস্য ও প্রতিপালক হিসেবে বিশ্বাস না করলে সে প্রকৃত মুমিন হতে পারে না। তাওহিদ ইসলামের প্রবেশদ্বার। গোটা ইসলামী সমাজব্যবস্থাই তাওহিদের ধারণা ও বিশ্বাসের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মানব জীবনকে সত্য, সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করতে তাওহিদের শিক্ষা অনস্বীকার্য।
লেখক :
শিক্ষক, মাদরাসা আশরাফুল মাদারিস, তেজগাঁও, ঢাকা
Leave a Reply